স্টাফ রিপোর্টার: বয়স ৮০ বছরেরও বেশি। প্রৌঢ়ত্বের দোরগোড়ায় পৌঁছনো মহানগরীর অন্যতম আইকন এই হাওড়া ব্রিজের স্বাস্থ্যপরীক্ষা শুরু হচ্ছে এবার। আবার, প্রায় বছর কুড়ি পরে। বুধবার এ খবর জানিয়েছেন সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা বন্দরের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান রথেন্দ্র রমন।
ক’দিন আগে কলকাতা বন্দরের স্থায়ী চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় রেল পরিবহণ সার্ভিস বা আইআরটিএস আধিকারিক রমন।
বুধবার প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, বর্ষার পরই হাওড়া ব্রিজ বা রবীন্দ্র সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত সমীক্ষা শুরু হবে। এই সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইআইটি-চেন্নাইকে। তারা সমীক্ষা করে সেতুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট দেওয়ার পরই পরবর্তী পর্বে এগনো হবে। খিদিরপুরের বাসকুল ব্রিজের মেরামতির কাজও শুরু হতে চলেছে বলে তিনি জানান।
বন্দর সূত্রে খবর, ৭০৫ মিটার লম্বা, ৮২ মিটার চওড়া ও মাটি থেকে ৮.৮ মিটার উঁচু এই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় মেরামতির কাজটি বেশ সময়সাপেক্ষ। এর আগে সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষার কাজ হয়েছিল প্রায় ছ’বছর ধরে, ১৯৮৪ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত। তারপর মেরামতির কাজ শেষ করতে সময় লেগেছিল আরও সাত থেকে আট বছর। সেবার মেরামতির কাজটি করেছিল ‘রাইটস’। বন্দর চেয়ারম্যান জানান, শহরের পরিবহণ মানচিত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে কলকাতা পুলিশই। সে কারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মেরামতির কাজ শুরুর আগে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা। কারণ, হাওড়া স্টেশন ও হাওড়া শহরের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগের সংক্ষিপ্ততম পথ হিসাবে এই সেতু দেশের অন্যতম ব্যস্ত সেতু।
[আরও পড়ুন: রাজ্য সরকারের ট্রেনিং সেন্টারের সাফল্য, ইউপিএসসিতে সফল বাংলার ৭ পড়ুয়া]
উল্লেখ্য, ১৯৪৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন হুগলি নদীর উপর তৎকালীন পন্টুন ব্রিজকে কান্টিলিভার ব্রিজে রূপান্তরিত করা হয়। এই কাজে ব্যবহৃত হয় কয়েক হাজার টন সংকর বা অ্যালয় ইস্পাত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই কলকাতার সঙ্গে হাওড়ার যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে এই সেতু। রমন জানিয়েছেন, হুগলি নদীর নিচ দিয়ে পণ্যবাহী যান চলাচলের যে টানেল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে, তার সম্ভাব্যতা নিয়ে সমীক্ষাকারী সংস্থার সঙ্গে খুব শীঘ্রই বৈঠকে বসবেন তিনি। গত বছরের জুন মাস থেকে এই সমীক্ষার কাজ চলছে।
শহরে আর্মেনিয়ান ঘাটে বন্দরের মালিকানাধীন চার একর জমির উপর যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প গড়ে তুলতে আগ্রহী পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বন্দর কর্তৃপক্ষ চাইছে এখানে বর্তমানে অবস্থিত বহু প্রাচীন একটি ওয়্যারহাউসের মূল কাঠামোর সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বাণিজ্যিক প্রকল্প তৈরি করতে। হুগলির বলাগড়ে যৌথ উদ্যোগে প্রস্তাবিত টার্মিনাল বা মিনি বন্দর তৈরির জন্য ৩০০ কোটি টাকার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সেটিরও দ্রুত রূপায়ণে জোর দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ৯৮ কোটি টাকা খরচ করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকিটা বেসরকারি সংস্থা।