ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: র্যাপিড কিট মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করতে হবে। আইসিএমআর (ICMR) এমনই নির্দেশ দিয়েছে কোভিড—১৯ (Covid-19) শনাক্তকরণের কিট সংরক্ষণের ক্ষেত্রে। করোনা আবহে র্যাপিড টেস্ট কিট কীভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা দরকার সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সব সরকারি সংস্থায় আইসিএমআর নির্দেশ পাঠিয়েছে।
চিন থেকে আমদানি করা র্যাপিড টেস্ট কিটের গুণগত মান পরীক্ষা করা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে সেই কিটের গুণগত মান পরীক্ষার কাজও শুরু হয়েছে। তাই এমন কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ভাইরোলজির প্রাক্তন অধ্যাপক ড. নিমাই ভট্টাচার্যের কথায়, ‘করোনা পরীক্ষার কিট সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু নিয়ম অবশ্যই মানতে হবে। কোনওভাবেই মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রায় রাখা যাবে না। তা হলে কিটের অ্যান্টিজেন নষ্ট হতে পারে। তাই র্যাপিড টেস্ট কিট তৈরির সময় যেমন সাবধানতা নেওয়া হয় তেমনই বিভিন্ন পরীক্ষাগারে পাঠানোর সময়ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।’
[আরও পড়ুন: করোনা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাড়িতেই মৌন প্রতিবাদ বঙ্গ বিজেপির ]
র্যাপিড কিট টেস্টের পরীক্ষার মাধ্যমে কম সময়ে বেশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষা করা যায়। তবে এই ক্ষেত্রে কিটের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কি না তার উপর পরীক্ষার ফল অনেকটাই নির্ভর করে। রাজ্যের ভাইরোলজিস্টদের বক্তব্য, কোনও ভাইরাস মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে সক্রিয় থাকে না। তবে অনেক সময় এই তাপমাত্রা বজায় রাখা সম্ভব হয় না। তাই আইসিএমআরের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, করোনা ভাইরাসের কিটের গুণগত মান ঠিক রাখার জন্য তাপমাত্রা বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই জন্যই মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় র্যাপিড টেস্টের কিট সংরক্ষণ করা দরকার। তাই করোনা ভাইরাসের কিট প্যাকেটজাত করার সময় ঘনীভূত শীতল কার্বন ডাই অক্সাইডের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়। এমনকী সড়কপথে কিট পাঠানোর সময়ও বিভিন্ন পর্যায়ে তাপমাত্রা ঠিক রয়েছে কি না তা দেখা হয়।
অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে ঘনীভূত শীতল কার্বন ডাই অক্সাইডের চাদরে মুড়ে রাখা হয়। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন কয়েক বছর আগেই বেশ কয়েকটি রোগের ভাইরাস ও অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য বিশেষ ধরনের ব্যবস্থা করেছেন। অধ্যাপক নিমাই ভট্টাচার্যর কথায়, ‘করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি কার্যকর। এমন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ কর্মী দরকার। তবেই দ্রুত করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা ও ফল জানার ক্ষেত্রে র্যাপিড কিট টেস্ট কার্যকর। আইসিএমআরের তথ্য বলছে, গত একমাসে দেশের অন্তত পাঁচ লক্ষ নাগরিকের কোভিড—১৯ পরীক্ষা হয়েছে র্যাপিড কিটের মাধ্যমে।