Advertisement
Advertisement

Breaking News

JU Student Death

JU Student Death: বেঁচে থাকলে ছেলের বয়স হত ১৮, সন্তানহারাদের হাহাকারে কি ‘সাবালক’ হল যাদবপুর?

ওই ছাত্রের জন্মদিনে ফের উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।

JU Student Death: A look at Jadavpur University on Birth Date of Dead Student from Nadia | Sangbad Pratidin
Published by: Ramen Das
  • Posted:October 31, 2023 2:28 pm
  • Updated:October 31, 2023 6:27 pm

রমেন দাস: খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে! শান্ত-স্তব্ধ উপত্যকায় ফুরিয়েছে স্বপ্ন! যাদবপুরের বিভীষিকাময় সেই রাতের পর কেটে গিয়েছে প্রায় আড়াই মাস। পুজো আবহেও শুনশান বাড়ি আর সন্তান হারানোর বেদনায় দিন কাটছে ওঁদের। যে শূন্য দিনের আবহেই ফের কাঁটা বিঁধেছে ৩১ অক্টোবর আসতেই! নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা সেই ছাত্রের জন্মদিনে ফের উঠেছে প্রশ্ন। কেউ কেউ বলছেন, মৃত্যুর পর সাবালক হয়েছেন মৃত ছাত্র। কিন্তু যাদবপুর?

অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি থেকে শুরু করে নয়া অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ। একাধিক বৈঠক থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক সিসিটিভির জন্ম! বারবার বদলে যাওয়ার প্রতিশ্রুতির পরেও আদৌ বদলেছে বিশ্ববিদ্যালয়? যদিও ছাত্রমৃত্যুর আড়াই মাস পরেও যাদবপুরের অন্দরে খোঁজ নিলেই মেলে একাধির প্রশ্নের পাহাড়।

Advertisement
JU Student Death: A look at Jadavpur University on Birth Date of Dead Student | Sangbad Pratidin
ছেলেকে আঁকড়ে রয়েছেন মা। নিজস্ব চিত্র।

ছাত্র বিক্ষোভ, উপাচার্যের ধরনা, ফের ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ থেকে শুরু করে একাধিক বিতর্কে এখনও জর্জরিত বিশ্ববিদ্যালয়। এর সঙ্গেই ওই ছাত্রের মৃত্যুর বিচার নিয়েও রয়েছে একাধিক প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্ট বিতর্ক, মেইন হস্টেল ফাঁকা করার ক্ষেত্রেও রয়েছে গাফিলতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি থেকে আদালতে ১২ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জমা পড়া চার্জশিট। সর্বত্রই উঠে এসেছে সেই প্রশ্নবহুল ব়্যাগিংয়ের তত্ত্বই! যদিও আজও নিজেদের দাবিতে অনড় মৃত ছাত্রের পরিবার।

Advertisement

দেখুন ভিডিও:

ছেলের জন্মদিনের সকালে ছাত্রের বাবা বলছেন, ”ছেলেটার জন্মদিন আজ। এবার ১৮ বছর পূর্ণ হল ওর। কী হতভাগ্য বাবা হলে এই অভিজ্ঞতা হয় ভাবতে পারেন! বারবার ওর চিরতরে চুপ হয়ে যাওয়া ছবি দেখছি। কান্না থামছে না আর!” ওই ছাত্রের বাবার আরও দাবি, ”আমার ছেলের মৃত্যুর পর বহুদিন কেটেছে। কতকিছু শুনছি। তবে ব়্যাগিং করে মেরে ফেলা কি খুন নয়? জানি না এর বিচার কবে পাব!”

[আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে এক সুর মমতা-শুভেন্দুর! উপাচার্যকে সংশোধনের পরামর্শ বিরোধী দলনেতার]

রাতদিন ঘুম নেই ওই ছাত্রের মায়ের। ছেলের জন্মদিনের দিনও অঝোরে কেঁদে চলেছেন তিনি। সন্তানের ছবি আঁকড়ে রয়েছেন সকাল থেকেই। তিনি বলছেন, ”আমার গোপাল (মৃত ছাত্র) পায়েস খেতে ভালোবাসত। আজ ওর বাড়িতেই থাকার কথা। কিন্তু সেই গোপালকে শেষ করে দিল ওরা। আমি কী নিয়ে বাঁচব! কেউ কোনও বিচার দিচ্ছে না আর!” ঘরের এক কোণে দাঁড়িয়ে দাদার জন্য চোখে জল মৃত ছাত্রের ভাইয়েরও। মাধ্যমিক পরিক্ষার্থী বলছেন, ”অনেক কিছু শুনছি। দাদাকে মেরে ফেলা হল! সারাদিন এসব ভেবে পড়তে বসতে পারি না আর। কিন্তু কোথায় কী, কেন আজও তেমন বদলে গেল না সব।” নদিয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রের বাবার আক্ষেপ, ”বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে জানি। তবুও আশা রয়েছে শাস্তি হবেই। কিন্তু খারাপ লাগে, বিশ্ববিদ্যালয় কী কিছু করবে আদৌ! যা শুনি কখনও কখনও বড্ড ভেঙে পড়ি!”

[আরও পড়ুন: দলবদলুদের নেওয়া ভুল ছিল, চাপে বার্তা সুকান্তর, ইঙ্গিত শুভেন্দু শিবিরের দিকে?]

সকাল থেকেই শুনশান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্রের মামার বাড়ি। রানাঘাটের বাড়ির চারপাশ চুপ আজও। কয়েক মাস আগেও বারবার মা ডাকা সন্তানের চিরতরে চুপ থাকা ছবিতেই সকাল সকাল যোগ হয়েছে রজনীগন্ধার মালা। সামনের প্রায় নিভে যাওয়া মোমবাতির আলোয় জড়িয়েছে কান্নাও। মা কাঁদছেন। বাড়িময় ছড়িয়ে থাকা সমস্ত স্মৃতি নিয়েই আর্তনাদ আরও তীব্র হয়েছে ওঁদের। মাত্র ১৭ বছর ১০ মাস বয়সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভরতি হয়েছিলেন বগুলার ওই ছাত্র। গত ১০ আগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে মৃত্যু হয় তাঁর। তারপর প্রশ্ন ওঠে একাধিক। খুন না আত্মহত্যা, এই প্রশ্নেই উত্তাল হয় রাজ্য। ‘বদল’ হয় যাদবপুর, মৃতদেহের আবহেই খানিকটা যেন ঘুরে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার নেয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সত্যিই কি তাই? বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাংশ বলছেন, মৃত ছাত্রের ১৮ প্রাপ্তি হলেও এই প্রতিষ্ঠানের আর হবে কি না ভাবতে হবে ফের!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ