কৃষ্ণকুমার দাস: এক রাতেই করোনায় মৃত প্রায় ৬০টি দেহ চারটি পৃথক শ্মশানে সৎকার করে ফেলল কলকাতা পুরসভা। ধাপায় দু’টির মধ্যে একটি বৈদ্যুতিক চুল্লী অকেজো থাকার পাশাপাশি গত কয়েকদিনে রাজ্যে মৃতের হার বৃদ্ধির জেরে পুরসভার মর্গে দেহের স্তুপ তৈরি হয়েছে।
বুধবারও রাজ্যে ২০ জন মারা গিয়েছেন তার মধ্যে ৯ জনই কলকাতার। তবে কলকাতার পাশাপাশি দুই ২৪ পরগনা ও সল্টলেক থেকেও ধাপাতেই সৎকারের জন্য দেহ আসায় চাপ বেড়েছে। কিন্তু যেহেতু প্রতিটি দেহ সৎকারের পরই স্যানিটাইজেশন ও চিতাভস্ম সংগ্রহের কাজ থাকছে তাই দৈনিক ১০/১২ টির বেশি মৃতদেহ চুল্লীতে চাপাতে পারছেন না পুরকর্মীরা। বস্তুত এই কারণে এদিন বিকেলে পুরভবনে শীর্ষস্তরের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, অতিরিক্ত গাড়ি ও ডোম জোগাড় করে রাতেই সমস্ত দেহ সৎকার করা হবে। বৈঠকে ছিলেন মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম, স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশাসক অতীন ঘোষ, করোনা কমিটির উপদেষ্টা ডাঃ শান্তনু সেন, পুরকমিশনার প্রমুখ। সিদ্ধান্ত হয়, ধাপা ছাড়াও কলকাতার উত্তর ও দক্ষিণে অন্য দু’টি শ্মশানে এবং লাগোয়া শহরতলির পুরসভার চুল্লীতে দেহগুলি পুডি়য়ে ফেলা হবে। পুরসভা সূত্রে খবর, রাত সাড়ে আটটার পর থেকেই জমা দেহগুলি চুল্লীতে নিয়ে গিয়ে পোড়ানো শুরু হয়েছে। উল্লেখ, করোনার জেরে মৃতের হার বৃদ্ধির ধাক্কায় ধাপ্পায় আরও দু’টি বৈদ্যুতিক চুল্লী বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
[আরও পড়ুন : কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নজির কলকাতার বসতির, ‘মডেল’ করার দাবিতে WHO-কে চিঠি শান্তনু সেনের]
মহানগরে গত তিনমাসে করোনা জয়ীদের এবার ‘সান্মানিক’ দিয়েই কোভিড যোদ্ধা হিসাবে কাজে লাগাবে কলকাতা পুরসভা। টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে শহরের নয়া আক্রান্তদের মনোবল বৃদ্ধির পাশাপাশি নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ট্রায়ালের কাজেও করোনাজয়ীদের ব্যবহার করা হবে। পুরসভার কোভিড সংক্রান্ত বৈঠকে বুধবার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরসভা কোভিডজয়ীদের সান্মানিক দিয়েই কাজে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে এদিন বৈঠক শেষে প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ জানিয়েছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, করোনা জয়ীদের নিয়ে এসে বরো ভিত্তিক টিম গড়ে কাজ শুরু করা হবে। পুরসভার হেলথ অফিসার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করেই ওই করোনা যোদ্ধাদের প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি পাঠানো হবে। মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আক্রান্তদের ‘ভয় না পেতে’ উৎসাহ দেবেন এই জয়ীরা।