Advertisement
Advertisement

Breaking News

কুকুরদের ভাইফোঁটা

ভাইয়ের আসনে সারমেয়রা, ফোঁটা দিয়ে ওদের প্রিয় পদে পাত সাজালেন দিদি

ভাইফোঁটায় ওদের তরফে রিটার্ন গিফট, দিদিকে আদর।

Kolkata animal rescue center organizes 'Bhai Phota' for canines
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:October 29, 2019 11:13 am
  • Updated:October 29, 2019 11:13 am

অভিরূপ দাস: ভাইফোঁটার জোগাড় করাটা যত না ঝক্কির, তার চেয়ে অনেক বেশি ঝামেলা ফোঁটা দেওয়াটা। কিছুতেই শান্ত হয়ে বসে থাকতে চায় না ভাইয়েরা। কেউ লাফ দিয়ে কোলে উঠে পড়ে। কেউ চেটে দেয় গাল। অনেক কষ্টে দু’হাতে গাল ধরে লোমশ কপালে পরিয়ে দেওয়া হয় চন্দনের ফোঁটা।
তবে খাবার পাতে সবাই শান্তশিষ্ট। ল্যাজ বিশিষ্ট তো অবশ্যই! ভাইয়েরা যে সব চারপেয়ে। এমন ভাইয়ের জন্য ফি বছর অভিনব ফোঁটার আয়োজন করে শহরের এক পশুপ্রেমী সংগঠন। গোটা দশেক সারমেয়কে ফোঁটা দেন তাঁদের একমাত্র বোন থুড়ি কেয়ারটেকার মুন্নি।ঠিকানাহীন পশুদের রাখা হয় এই রেসকিউ সেন্টারে। কাউকে বাড়ির মালিক ছেড়ে দিয়েছে। কাউকে পাড়া থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে। এমনই সমস্ত পোষ্যদের খোঁজ পেয়ে এখানে নিয়ে আসেন সহৃদয়রা। একটা,দুটো করে বাড়তে বাড়তে তারা এখন অগুনতি।

[আরও পড়ুন: মাছ বাজারে বচসার জেরে রক্তারক্তি, খুনের পর ফ্রিজে দেহ লোপাট শ্রমিকের]

এখানেই কাজ করেন মুন্নি। সারা বছর নিজের হাতে খাবার দেন, স্নান করিয়ে দেন এক দঙ্গল নেড়িকে। গাঢ় খয়েরি, কুচকুচে কালো, ধূসর ল্যাজঝোলাদের প্রতি তাঁর কেমন একটা টান জন্মে গিয়েছে। সে টান থেকেই ভাইফোঁটার আয়োজন।
কুকুরকে ভাইফোঁটা? এ পরবের মানে জানেন মুন্নি। “ওরা তো আমার ভাইয়ের মতোই। তাই ওদের কপালে ফোঁটা দিই। এদিন ভাইদের দীর্ঘায়ু কামনা করে বোনেরা। আমাদের এখানেও তাই। ওদের সঙ্গে থাকতে থাকতে আমিও একাত্ম হয়ে গিয়েছি ওদের সঙ্গে। আমিও ফোঁটা দিয়ে চারপেয়েদের লম্বা আয়ু কামনা করি।” জানালেন মুন্নি।

Advertisement

dogs-vaifota1
মিছিমিছি লোকদেখানো নয়, দায়সারাও নয়। ফোঁটার থালায় হাজির থাকে ভাইফোঁটার সমস্ত উপকরণ। ধান, দুর্বা তো অবশ্যই, নিয়ম মেনে শিশির দিয়ে বাটা হয় চন্দন। এছাড়াও প্রদীপের কাজল, ঘি-ও থাকে ফোঁটার থালায়। রান্নাঘরেও আজ ওদের পছন্দের নানান মেনু। পশুদের এই রেসকিউ সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত তিতাস মুখোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, “আমাদের এই সারমেয় হোমের ঘটনাকে শুধুমাত্র ভাইফোঁটা বললে পুরোটা বলা হবে না। কারণ, যে সমস্ত কুকুরেরা থাকে এখানে, তাদের মধ্যে অনেকেই মেয়ে। সেই অর্থে বোনফোঁটারও আয়োজন করা হয়।” তিতাসের কথায়, “সারমেয়রা স্বার্থহীনভাবে আমাদের ভালবাসে। নিজের জীবন দিয়ে ওরা আমাদের প্রাণ বাঁচায়।”

Advertisement

[আরও পড়ুন:উপনির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থনের প্রস্তাব কংগ্রেসের! সোনিয়াকে চিঠি আবদুল মান্নানের]

এমন কাজে সমালোচনা হতে পারে, জানেন তিনি। বলেছেন, “অনেকেই বিষয়টাকে ছোট করে দেখতে পারেন। কিন্তু তাতে আমরা আমল দিতে রাজি নই। ভাইফোঁটা তো ভাই—বোনেদের উৎসব। একজন ভাইয়ের যে সমস্ত গুণ থাকা দরকার, তা একটা কুকুরের মধ্যে রয়েছে।” ভাইফোঁটার বাজার হয়ে গিয়েছে। ব্যাগ ভরতি করে এসেছে রাবড়ি, রসগোল্লা। তবে পছন্দের রকমফের আছে। কেউ স্রেফ ম্যাগি খেতেই ভালবাসে। ভাইফোঁটায় তো রিটার্ন গিফট আছে? মুন্নির কথায়, “এখানেও কিন্তু ফোঁটা দেওয়ার পর ওরা পুরস্কার দেয়। কপালে ফোঁটা নিয়ে ওরা আদরে আদরে ভরিয়ে দেয় আমাদের।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ