সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেশ কিছুদিন ধরেই আলিপুরের এক ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ থেকে তাঁর পরিচিতদের কাছে যাচ্ছিল অশ্লীল মেসেজ ও ছবি। যাঁর কাছে বা যে গ্রুপে সেগুলি কোনওমতেই যাওয়ার কথা নয়, সেখানেও ওই ব্যক্তির প্রোফাইল থেকে পৌঁছে যাচ্ছিল ওই অযাচিত জিনিসগুলি। বেশ কিছুদিন পর এক পরিচিত ব্যক্তি তাঁকে ফোন করে উষ্মা প্রকাশ করেন। বিষয়টি জানতে পারার পর মাথায় হাত ওই ব্যক্তি। জানান, আদৌ তিনি পাঠাননি ওই জাতীয় কোনও অশ্লীল মেসেজ বা ছবি। শেষ পর্যন্ত বোঝা যায়, ওই ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ ‘হ্যাক’ করেছে কোনও হ্যাকার। সে-ই নিজের ইচ্ছামতো পাঠিয়ে চলেছে মেসেজগুলি। বিষয়টি জানার পর আলিপুরের রাজা সন্তোষ রায় রোডের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির ভাই লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ আগেও এসেছে সাইবার থানায়। কখনও ফেসবুক আবার কখনও হোয়াটসঅ্যাপ ‘হ্যাক’ করে ‘হ্যাকার’রাই তা নিয়ন্ত্রণ করছে। হ্যাকারদের শিকার হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুল ছাত্রীও। এক পরিচিত ব্যক্তির প্রোফাইল থেকে ছাত্রীরই একটি অশ্লীল ছবি তাকেই পাঠায় ‘হ্যাকার’। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। ফেসবুকে ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এবার পুলিশের কাছে অনেকটা একই ধরনের অভিযোগ জানালেন দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। অভিযোগকারীর দাদার মোবাইল থেকে তাঁর পরিচিতদের কাছে অযাচিত মেসেজগুলি পাওয়ার পর অনেকেই তাঁকে সংযত হতে বলেন। কিন্তু তিনি নিজে বিষয়টি বুঝতেই পারছিলেন না। অথচ ‘হ্যাকার’রা নিজেদের ইচ্ছামতো ক্রমাগত পরিচিতদের ও বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে যাচ্ছিল অশ্লীল মেসেজ, ছবি ও ভিডিও। পরিচিত ব্যক্তির ফোন না পাওয়া পর্যন্ত তিনি আঁচই করতে পারেননি যে, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। ততদিনে অবশ্য যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে।
এক গোয়েন্দা আধিকারিক জানান, যে কেউ এই সমস্যার সামনে পড়তে পারেন। সাধারণত ‘হ্যাকার’রা তাদের ‘শিকার’-এর ফেসবুক প্রোফাইলের উপরই নজর রাখে। ফেসবুক থেকে সে জেনে নেয় ‘বন্ধু’দের প্রোফাইল। এর পর ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে অথবা বন্ধুর ফেসবুক ‘হ্যাক’ করে সে যোগাযোগ করে ‘শিকার’-এর সঙ্গে। ‘চ্যাটিং’-এর সময় গল্পের ছলে অথবা ফোন নম্বর হারিয়ে গিয়েছে বলে জেনে নেয় ‘শিকার’-এর নম্বরটি। হোয়াটসঅ্যাপের সেটিংস-এ গিয়ে নিজের বদলে ‘শিকার’-এর ফোন নম্বরটি বসিয়ে দেয় সে। এর পর ‘বন্ধু’র হ্যাক করা অ্যাকাউন্টে গিয়ে ফের গল্পের ছলে জেনে নেয় ‘সিকিউরিটি কোড’। সেই ‘কোড’টি হাতে পেলেই ‘শিকার’-এর হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে ‘হ্যাকার’-এর হাতে। আলিপুরের ওই ব্যক্তির হোয়াটস অ্যাপ এই পদ্ধতিতে ‘হ্যাক’ করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.