Advertisement
Advertisement
উষ্ণতম মাস

বিগত এক দশকের উষ্ণতম জুলাই কাটাচ্ছে কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ

গত ১০ বছরে ‘শুষ্কতম’ জুনের পর ‘উষ্ণতম’ জুলাই!

Kolkata spending the hottest July, there is no possibility of raining in July

ছবি: প্রতীকী

Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:July 16, 2019 9:33 am
  • Updated:July 16, 2019 9:33 am

রিংকি দাস ভট্টাচার্য: বাইরে বেরলেই ঘাম, চাতক পাখির মতো শুকিয়ে যাওয়া গলায় প্রাণ ওষ্ঠাগত। দেখা নেই বৃষ্টির। একদিকে উত্তরবঙ্গে যখন বন্যা পরিস্থিতি এবং তিস্তা চড়ের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন, দক্ষিণবঙ্গ তখন শুকনো। বৃষ্টিহীন দক্ষিণবঙ্গে হাঁসফাঁস অবস্থা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর বলছে, গত এক দশকে জুলাইয়ের এমন রূদ্র রূপ দেখেনি কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গবাসী। যদিও স্বস্তি মিলছে না এখনই। আশু সুরাহার কোনও ইঙ্গিত না দিয়ে হাওয়া অফিস সাফ জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গ ভেসে গেলও দক্ষিণে আপাতত বৃষ্টি দূর অস্ত।

[আরও পড়ুন: কোন শর্তে সংরক্ষণ আর্থিকভাবে দুর্বল নাগরিকদের? বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল রাজ্য ]

Advertisement

১৯৯৭ সালের পর ২০১৯ সালে শুষ্কতম জুন দেখেছে মহানগর। এবার জুলাইয়ের কপালেও হয়তো সেই তকমাই জুটতে চলেছে। সোমবার অবধি কলকাতাতেই বর্ষার ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৭%। হাওড়ায় ঘাটতি ৭২%। এদিন পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে ঘাটতির পরিমাণ ৪৯ শতাংশ। এই পরিস্থিতি গত দশ বছরে কখনও হয়নি। তিন ভাগের এক ভাগ বৃষ্টি হয়নি দেশে। ২০০৯ ও ২০১৪ সালের খরার বছরের খুব কাছাকাছি থাকবে চলতি মরসুমে অনাবৃষ্টি। এই পরিমাণ বৃষ্টি হলে এখন পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি কীভাবে মিটবে তা নিয়ে সংশয়ে আছেন তাঁরা। বাড়তে থাকা তাপমাত্রা আর আর্দ্রতার সাঁড়াশি চাপে খাবি খাওয়াই দক্ষিণবঙ্গের ভবিতব্য। এমনিতেই বর্ষা এবার দেরিতে এসেছে। ১৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে এবার প্রায় ১৫ দিন দেরিতে রাজ্যে পা রেখেছে বর্ষা। গত দু’সপ্তাহে কলকাতা এবং শহরতলিতে বৃষ্টি একপ্রকার হয়নি। ফলে, ক্যালেন্ডারে বর্ষার মরশুম হলেও এখানে মরভূমির মেজাজ। হাওয়া দপ্তরের নথিও বলছে, এমনটা প্রায় এক দশকে হয়নি।

Advertisement

আবহাওয়াবিদদের মতে, আশার মেঘ ঘনালেও তা কেটে যাচ্ছে বারবার। যেমন জুলাইয়ের শুরুতে সাগরের নিম্নচাপ সেই ছবি বদলানোর কিছুটা ইঙ্গিত দিলেও বর্ষার ‘দ্বিচারিতায়’ মৌসুমি অক্ষরেখা সরে যায় হিমালয়ের পাদদেশে। ফলে অতি বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গ ভাসলেও কলকাতা-সহ দক্ষিণে বৃষ্টির ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। ২০০৯ সালে তীব্র এল নিনোর দাপটে তেমন বৃষ্টিই হয়নি দেশে। ২০১৪ ও ২০১৫ সালের পর দু’বছর আবার ঘাটতি দেখা গিয়েছিল বর্ষায়। তখনও দায়ী ছিল এল নিনো, অর্থাৎ প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ জলতল। এ বারও এল নিনো রয়েছে, তবে তা দুর্বল। তাতেই ক্ষতবিক্ষত বর্ষা। চলতি মরসুমে বর্ষা শুরু থেকেই নড়বড়ে। সাত দিন দেরিতে কেরলে ঢুকেছে বর্ষা। কলকাতায় এসেছে ২১ জুন। ১৯৮৩ সালের পর এতটা দেরি এই প্রথম। সেই দেরির মাশুলই এখন গুনছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ।

[আরও পড়ুন: শহিদ দিবসে পান থেকে চুন যেন না খসে, পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ অনুজ শর্মার]

আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১৫ সালের ৫ জুলাই শহরের তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৬.৭ ডিগ্রিতে। কিন্তু সোমবার এক দশকের রেকর্ডকে ভেঙে মহানগরের তাপমাত্রা পৌঁছয় ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।” প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১০ জুলাই কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৯.৯ ডিগ্রিতে। আবহাওয়ার ইতিহাসে যা সর্বকালীন রেকর্ড। কবে মিলবে এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি? তাঁর কথায়, বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গে গিয়ে পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে বৃষ্টি নামাচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের উপর দিয়ে জলীয় বাষ্প অতিক্রম করায় দিনে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ