Advertisement
Advertisement

Breaking News

Remdesivir fraud case

পার্ক স্ট্রিটে জাল রেমডেসিভির কাণ্ডে নয়া মোড়, অভিযুক্ত ‘চিকিৎসক’ আসলে হাতুড়ে!

খাস কলকাতার বুকেই সক্রিয় জালিয়াতির চক্র।

Many more are involved in the Park Street Remdesivir fraud case | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী।

Published by: Biswadip Dey
  • Posted:May 20, 2021 9:35 am
  • Updated:May 20, 2021 9:35 am

অর্ণব আইচ: চিন থেকে পাশ করার দাবি করা ‘চিকিৎসক’ আসলে হাতুড়ে! সম্প্রতি রেমডেসিভির (Remdesivir) বিক্রির নাম করে প্রতারণার ঘটনায় ধৃত মহম্মদ মুমতাজ আলমের ডাক্তারি পাস ঘিরেই সৃষ্টি হয়েছে রহস্য। নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি চিন থেকে পাশ করেছে দাবি করলেও কোনও নথি দেখাতে পারেনি। এছাড়াও প্রতারণা কাণ্ডে তার সঙ্গে আরও ব্যক্তি জড়িত বলে খবর এসেছে পুলিশের কাছে। বুধবার মুমতাজকে ফের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলে পার্ক স্ট্রিট (Park Street) থানার পুলিশ। তাকে জেরার প্রয়োজন বলে ফের পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান সরকারি আইনজীবীরা। এরপর মুমতাজকে ২৪ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ জানিয়েছে, একবালপুরের বাসিন্দা সুরজকুমার চৌহানের অভিযোগের ভিত্তিতে মহম্মদ মুমতাজ আলমকে রিপন স্ট্রিট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। করোনার ওষুধ রেমডেসিভিরের একটি ভায়াল বিক্রির জন্য প্রথমে ২০ হাজার ও তার পর ২৫ হাজার টাকা দাবি করে সে। এমনকী, অনলাইনে আগাম টাকাও নিয়েছিল সে। ওষুধের কালোবাজারি ও প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে জেরার মুখে সে বলে, তার বাড়ি বিহারের বক্সার এলাকায়। বিহার থেকে ডাক্তারি পাস করেছে সে। কিন্তু বিহারের কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানাতে পারেনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক, কেমন আছেন করোনা আক্রান্ত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী?]

ক্রমে জেরার মুখে সে দাবি করে যে, চিন থেকে সে ডাক্তারি পাশ করেছে। চিনের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ডাক্তারি পড়ায়, সেগুলি সম্পর্কে প্রশ্ন শুরু করলে তার বক্তব্যে মেলে অসঙ্গতি। পুলিশের জেরার মুখে সে দাবি করতে থাকে যে, চিন থেকে ডাক্তারি পাশ করে আসার পর ভারতে চিকিৎসা করার জন্য একটি পরীক্ষা দিতে হয়। সেই শংসাপত্র হাতে থাকলেই কোনও চিকিৎসক চিকিৎসা করতে পারেন। সে ওই পরীক্ষাও দিয়েছে। কিন্তু কোনও শংসাপত্র দেখাতে পারেনি। তাকে বলা হয়, বিহারে তার বাড়ি থেকে তার ডাক্তারি পাস সংক্রান্ত কোনও নথি থাকলে অনলাইনে নিয়ে আসর ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তাও পারেনি সে। এরপর তাকে জেরা করে পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, ওই ‘চিকিৎসক’ আসলে হাতুড়ে। বক্সারের গ্রামে ঘুরে ঘুরে ‘চিকিৎসা’ করত। কিন্তু বিশেষ পসার জমাতে পারেনি। তাই রিপন স্ট্রিটে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসে। করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতায় নতুন ফাঁদ পাতে।

Advertisement

কয়েকদিন আগেই পার্ক স্ট্রিট এলাকা থেকে রেমডেসিভির চক্র ধরে পুলিশ। তদন্ত করে পুলিশ জেনেছে, করোনার এই জীবনদায়ী ওষুধের চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় সে। ওই ‘চিকিৎসক’কে সামনে রেখেই চক্রটি ফাঁদ পাততে থাকে। বিভিন্ন নামী ওষুধের দোকানের সামনে ঘোরাঘুরি করত মুমতাজের সঙ্গীরা। অভিযোগকারী সুরজকুমার চৌহান পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশকে জানিয়েছেন, এক বন্ধুর জন্য রেমডেসিভির খুঁজতে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালের কাছে একটি ওষুধের দোকানে গিয়েছিলেন।

ওষুধের দোকান থেকে জানানো হয়, ওই ওষুধ তাদের কাছে নেই। তখনই দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল এক দীর্ঘকায় যুবক। সে বলে, ওই ওষুধ সে জোগাড় করে দিতে পারবে। কলকাতারই এক চিকিৎসকের কাছে আছে ওই ওষুধ। সে মুমতাজের মোবাইল নম্বর সুরজকে দেয়। তিনি ফোন করে রিপন স্ট্রিটে গেলে মুমতাজ তাঁকে বলে, একেকটি ভায়ালের জন্য ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে। প্রথমে দু’হাজার টাকা অনলাইনে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিতে বলে। সে তাতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু ওষুধের ভায়াল নিতে এলে সুরজকে বলা হয় ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। এতে সুরজ রাজি না হয়ে তিনি আগাম দু’হাজার টাকা ফেরত চান। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা হয়। এর পরই তিনি পার্ক স্ট্রিট থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ধৃত মুমতাজকে জেরা করে তার সঙ্গীদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: করোনা কালে অসহায় রোগীদের পরম বন্ধু হয়ে উঠেছেন উত্তর কলকাতার এই নাট্যকর্মী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ