সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে ‘ব্যর্থ’ কলকাতা পুরসভা। শহরের বিধায়কদের মতামত নেননি দায়িত্বে থাকা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমে এমন তোপ দাগার জেরে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শোকজ করা হয় রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডেকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার দলের মানিকতলা কেন্দ্রের বিধায়ককে শোকজন করেন। প্রবীণ দলীয় নেতা হয়েও কেন তিনি দলীয় ফোরামে নিজের মতামত না জানিয়ে প্রকাশ্যে দলের মন্ত্রী তথা প্রশাসকদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তা জানতে চেয়েছে তৃণমূল। সাধন পাণ্ডের থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
১৩৩ কিমি বেগে বয়ে যাওয়া আমফান প্রায় সবকিছুই বদলে গিয়েছে। ভেঙেছে গাছ। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা না পাওয়ায় ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। তবে শুধু সেখানেই সীমাবদ্ধ নেই। প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর তরজা। সংঘাতে জড়িয়েছেন দুই মন্ত্রী। মানিকতলার বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে মঙ্গলবার বলেন, “আমফান নিয়ে আগেই হাওয়া অফিস সতর্ক করেছিল। কিন্তু পুরসভা প্রস্তুতি নেয়নি। নিলে সাত দিনের মাথাতেও শহরের এই হাল থাকত না।” পুরমন্ত্রী কেন প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমফান পূর্ববর্তী পরিস্থিতিতে মোকাবিলার পন্থা নিয়ে আলোচনা করলেন না সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: প্লাজমা দান করে নজির হাবড়ার মনামীর, ইতিহাসের পাতায় ঢুকে পড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ]
সাধন পাণ্ডের বিস্ফোরক মন্তব্য শুনে অবাক হয়ে যান প্রায় সকলেই। তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হতে থাকে জোর আলোচনা। তারপর সাধন পাণ্ডেকে পালটা জবাব দেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “আমি বাড়িতে বসে বড় বড় কথা বলছি না। রাস্তায় নেমে কাজটা করছি। উনি রাস্তায় নামুন। আমি গাছ কাটাব, জল সরবরাহ দেখব না লোকের বাড়ি বয়ে পরামর্শ আনতে যাব। ওঁর সদিচ্ছা থাকলে এসে পরামর্শ দিচ্ছেন না কেন?” সাধন পাণ্ডে এবং ফিরহাদ হাকিমের দ্বৈরথকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়েছেন বিরোধীরা। দিলীপ ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে খোঁচা দেন। তার আগে টুইট করে এ বিষয়টি উল্লেখ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। এদিকে, বুধবার সাধন পাণ্ডে এবং কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউতের অনুগামীদের মধ্যে ব্যাপক গন্ডগোল হয়। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ওই অশান্তির সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন অনিন্দ্য রাউতও।