অর্ণব আইচ: হোমে শিশুদের উপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল খোদ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বেহালার সরশুনা এলাকায়। চলতি বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সেই সময় পুলিশ যায় হোমে। পরে বুধবার রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী ওই হোমে গিয়ে তদন্ত করেন। তিনি এই বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথাও বলেছেন। এদিন কমিশনের চেয়ারপার্সন জানান, পুরো ঘটনাটি সমাজকল্যাণ দপ্তরকে জানানো হবে।
জানা গিয়েছে, কমিশনের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে। নাবালিকাদের এই হোমে কীভাবে পুরুষ শিক্ষক নিয়োগ করা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। এই ঘটনার পর কয়েকজন অভিভাবককে বলা হয়েছে তাঁদের সন্তানদের হোম থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যেতে। তাঁদের দাবি, পুলিশ এই ঘটনার অভিযোগ নেয়নি। এদিন লালবাজারের এক কর্তা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কোনও মামলাও রুজু হয়নি। বরং তিন নাবালিকার মা পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের মেয়েরা হোমে থাকেন। বিকেল চারটে নাগাদ হোমে তাঁদের সঙ্গে হোম কর্তৃপক্ষের সমস্যা হয়। আসলে ঠান্ডা পানীয় খাওয়া নিয়ে হোমে একটি গোলমাল হয়েছিল। তা থেকেই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। সরশুনা থানায় এসে পুলিশের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে তাঁরা বিষয়টি মিটিয়ে ফেলেছেন। তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।
সরশুনা এলাকার রাখাল মুখার্জি রোডের ওই হোমে শিশুকন্যা ও কিশোরীদের রাখা হয়। একশোজনেরও বেশি আবাসিক রয়েছে হোমে। প্রত্যেক বছর ১৭ নভেম্বর এই হোমে হয় বার্ষিক অনুষ্ঠান। সেই সময় অভিভাবকরাও হোমে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন। জানা গিয়েছে, কয়েকজন অভিভাবককে তাঁদের মেয়েরা জানান, তাঁতের কাজ শেখান, এমন একজন শিক্ষক তাদের নিগ্রহ ও যৌন হেনস্তা করেছেন। তখনই অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা প্রতিবাদ জানানোর সময় এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যরা হোমের ভিতরে এসে এক শিক্ষককে মারধর করেন। ১০০ ডায়ালে ফোন গেলে সরশুনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে যায়। কয়েকজন অভিভাবক থানায় যান। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের কথাও হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
[আরও পড়ুন: বিজেপি কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি, রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত কোচবিহার]
কয়েকজন অভিভাবকদের দাবি, যাঁরা থানায় গিয়েছিলেন, তাঁরা ভয় পেয়েই আর অভিযোগ জানাননি। হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই শিক্ষক নাবালিকাদের শাসন করতেন। কিন্তু কোনও যৌন হেনস্তা হয়নি। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক বেশ কড়া ছিলেন ও বকাবকি করতেন বলে ছাত্রীরা তাঁকে পছন্দ করত না।