সুব্রত বিশ্বাস: ‘মশা লিবে গো, মশা! ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড সব ধরনের অসুখের বাহক পাবে গো।’ এভাবেই অ্যাড্রেস সিস্টেমে হাঁক পেড়ে মশা বিক্রি করতে পারে রেল! যদি বাণিজ্যিকভাবে মশার কখনও চাহিদা বাড়ে। হাওড়া স্টেশন দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের মুখে এখন এমনই বক্র উক্তি। কারণ, খুবই স্পষ্ট। যাত্রীদের কথায়, হাওড়া স্টেশনের প্রতি দু’টি স্টেশনের মাঝে যে নিকাশি নালা তা এখন মশার আঁতুড়ঘর বলেই পরিচিত। হাওড়ার মেয়র রথীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এনিয়ে বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। এবারও জানানো হবে। আইন মাফিক ব্যবস্থা না নিলে পদক্ষেপ করবে হাওড়া পুরসভা। কলকাতা, হাওড়া পুর এলাকায় ব্যক্তিগত বা সরকারি জায়গাতে মশার লার্ভা পাওয়া গেলে প্রথমে সরকারিভাবে নোটিস, পরে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মশার এই বাড়াবাড়ির জন্য রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে দায়ী করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য কর্তাদের কথায়, মাস দু’য়েক আগে প্ল্যাটফর্মের পাশে লাইনগুলিতে পাথর ফেলা হয়। এই পাথরই নর্দমাগুলিতে পড়ে জলের গতিপথ বন্ধ করায় জল জমছে। হচ্ছে মশা। স্বাস্থ্য বিভাগ এই সাফাইয়ের দায়িত্বে থাকলেও পাথর সরানোর কাজ পিডব্লুআইয়ের। পিডব্লুআইকে লিখিতভাবে আবেদন করা সত্ত্বেও তারা পাথর সরায় নি। ফলে জল জমে থাকছে। মশার লার্ভার একেবারে অনুকূল পরিবেশ এই নিকাশি নালা। মশার দাপটের কথা বলতে গিয়ে, সাফাই কর্মীরা বলেন, নর্দমার ধারে দাঁড়িয়ে কাজ করা দায় হয়ে পড়ে মশার উপদ্রবের জন্য। অনেকেই মশার কামড়ে রোগগ্রস্তও হয়েছেন। যাত্রীদের ক্ষোভ, ফাঁকা ট্রেনে এলে মশার দৌরাত্ম্যে বেশিক্ষণ বসাই যায় না। স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা বলেন, পুরসভার কোনও গাফিলতি নেই মশা নিধনে। তবে রেলের জায়াগায় এই মশার বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য সংস্থাটিকে তিনি জানাবেন বলে জানান। শনিবার হাওড়া ৫-৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে নিকাশি নালার কাছে গিয়ে দেখা গেল, জমা জলে দুপুরের কড়া রোদেও মশার লার্ভার দাপাদাপি। নর্দমায় হকারদের ফেলা আবর্জনা, খাবারের প্যাকেট থেকে লাইনের পাথর পড়ে নিকাশি ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়ায় জল জমছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.