ছবি: প্রতীকী
কলহার মুখোপাধ্যায়: আট বছরের ছেলেকে খুন করে, হাতের শিরা কেটে চারতলা থেকে ঝাঁপ পৌলমী সেন নামের এক গৃহবধূর৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার সন্ধ্যাবেলা চাঞ্চল্য ছড়ায় দমদমে৷ জানা গিয়েছে, নিজের মাকেও খুনের চেষ্টা করে মহিলা৷ কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন পৌলমীর মা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পরতে পরতে রয়েছে নানা রহস্য। যার সমাধান করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পুলিশের কাছে৷
[অবতরণের সময় বিমানে ধাক্কা পাখির, আতঙ্কে যাত্রীরা]
জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যাবেলা প্রথমে নিজের আট বছরের ছেলেকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন পৌলমী সেন। তখনই নাতিকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরির কোপে জখম হন দিদিমা মালবিকা সেন। মায়ের শরীরে এলোপাথারি ছুরি চালানোর পর হাতের শিরা কেটে তিনতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন ওই গৃহবধূ। কী এমন ঘটল, যে নিজের সন্তানকে খুন করে বসলেন মহিলা? অনেক প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মনে? তাঁদের অনুমান, আট বছরের ছেলে এমন কোনও ঘটনার সাক্ষী, যা বিপদে ফেলতে পারত পৌলমীকে! সেজন্যই সম্ভবত গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজের ছেলেকেই খুন করে মহিলা৷ এখনও অনেক বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা৷ সোমবার তাঁরা জানান, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই চট করে কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পৌলমী সেন চল্লিশোর্ধ। তবে হাইলাইট করা স্টাইলিস্ট হেয়ার কাটে তাঁকে আরও কমবয়সি লাগত। ফ্যাশনদুরস্ত হাবভাব বজায় রাখতেন তিনি। পাড়ায় তেমন মিশতেন না। আট বছরের ছেলেটিকেও মিশতে দিতেন না। ধারদেনা সংক্রান্ত বিষয়ে জড়িয়ে পড়েছিল বলে অনুমান পুলিশের।
[দুই বিজেপি নেতার সঙ্গে আলোচনায় আপত্তি, আদালতের দ্বারস্থ রাজ্য সরকার]
পৌলমীর মা মালবিকা সেন সিপিএমের প্রাক্তন কাউন্সিলর। যদিও ইদানীং তিনি পার্টির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না। আগে থাকতেন পূর্ব সিঁথি এলাকায়। বছর কয়েক আগে এমসি গার্ডেন এলাকার ফ্ল্যাটে ভাড়া আসেন। বাড়িতে এই তিনজন থাকতেন। মালবিকাদেবীর ছেলে থাকেন বিদেশে। তিনি সেখান থেকে নিয়মিত সংসার খরচের টাকা পাঠান। এই টাকাতেই পরিবারের সমস্ত চলত বলে প্রতিবেশী সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সেন পরিবারের পরিচিত এক ব্যক্তি জানান, বাজারে অনেক টাকা ধারদেনা হয়ে গিয়েছিল তাঁদের। নিত্যদিন পাওনাদারদের আনাগোনা লেগে থাকত। সোমবার এমন কয়েকজন আসার কথা ছিল। তাই পৌলমী সপরিবারে মৃত্যুর চেষ্টা করেছিলেন বলে অনুমান। তবে আট বছরের পুত্রসন্তানকে খুন করার পিছনে আপাত সরল এই যুক্তি ধোপে টিকছে না। ছেলেকে মারার সময় পৌলমীর মা তাঁর মেয়েকে বাধা দিতে গিয়েছিলেন। তখন তাঁকেও খুন করার চেষ্টা করে পৌলমী। ঠান্ডা মাথায় প্রায় পেশাদারের মতো দুটি খুন করার মতো মানসিক জোর একজন গৃহবধূ কীভাবে পেল, সেটাই এখন ব় প্রশ্ন পুলিশের কাছে। ইতিমধ্যে মৃত শিশুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে দমদম থানার পুলিশ। শেষকৃত্যের জন্য পৌলমীর মামার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তার দেহ। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে দমদম থানায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.