Advertisement
Advertisement

‘দেখলাম বাবার চোখে জল’, বহিষ্কারের সেদিনের কথা স্মরণ সোমনাথ-কন্যার

‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল করে জানেন, কাকে সম্মান দিতে হয়।’

My father wept the day CPIM expelled him from party: Anushila Basu
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:August 14, 2018 8:42 am
  • Updated:August 14, 2018 9:04 am

অনুশীলা বসু: ২০০৮ সাল। ২৩ জুলাই। আমি তখন দিল্লিতে। পার্লামেন্ট থেকে বাবা বাড়ি ফিরেছেন। বললাম, তুমি তো এখন ফ্রি বার্ড!

বাবা তখনও জানেন না। জিজ্ঞাসা করলেন, কী হয়েছে? আমাকে শো-কজ করেছে? যা বলার, বললাম। তারপর?

Advertisement

সে দিনটার কথা কোনওদিন ভুলতে পারব না। অ্যান্টি চেম্বারে বাবা বসে আছেন। পাথরের মতো। চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। টিভিতে ততক্ষণে ব্রেকিং নিউজ। লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পার্টি থেকে বহিষ্কার করেছে সিপিএম।

Advertisement

পার্টির প্রতি বাবার কতটা ডেডিকেশন ছিল, তা আমরা জন্ম থেকে দেখেছি। প্রাণের চেয়ে আপন ছিল পার্টি। বিরুদ্ধেও তিনি কোনওদিন বলেননি। অথচ সেই পার্টিই তাঁকে মর্যাদা দিল না। এখন পার্টিতে ছিলেন না, ভালই হয়েছে। সিপিএমের এতটা করুণ দশা সহ্য করতে পারতেন না। পার্টির সঙ্গে বাবা খাতায়কলমে বিচ্ছিন্ন থাকলেও মানসিকভাবে কিন্তু বিচ্ছিন্ন ছিলেন না। আর বাবা তখন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাতে জ্যোতি বসুর সমর্থন ছিল।

[হিন্দুত্ব থেকে সাম্যবাদের পথে, বাম রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়]

বাবা তখন কষ্ট পেয়েছিলেন। আমরা যারা তাঁর পাশে ছিলাম, সবাই প্রবল যন্ত্রণা পেয়েছি। আমরা চাইনি, বাবার মরদেহ আলিমুদ্দিনে নিয়ে যাওয়া হোক। পার্টির তরফে বলা হয়েছিল, মরদেহ দলীয় পতাকায় ঢেকে দেওয়া হোক। মা চাননি। আমরাও চাইনি। তাই না বলে দিয়েছি। বাবার সঙ্গে যা ঘটেছে, তার জন্য একজনই (ইঙ্গিতের লক্ষ্য প্রকাশ কারাট) দায়ী। পার্টির ডিসিশনের জন্য জ্যোতি বসু প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। সোমনাথবাবু রাষ্ট্রপতি হতে পারেননি। এ সবের পর আমরা আর চাইনি বাবার মরদেহ আলিমুদ্দিনে নিয়ে যাওয়া হোক। সবচেয়ে বড় কথা, মা আপত্তি করেছেন। কারও নাম করতে চাই না। বিভিন্ন পার্টি থেকে অনেকে অফার নিয়ে এসেছে। একটাই কথা বলেছেন ‘নো’।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন প্রথম বাবার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল করে জানেন, কাকে সম্মান দিতে হয়। বাবাকে শ্রদ্ধা করতেন। সবসময় খবর নিতেন।

আমি একজন বন্ধুকেও হারালাম। যার সঙ্গে ঝগড়া করা যেত। আবদার করা যেত। অভিমান করা যেত। প্রচণ্ড ফুটবল পাগল ছিলেন। দাদার ছেলে আমেরিকায় থাকে। দাদুর সঙ্গে খেলা দেখবে বলে চলে এল। বাবাকে বলেছিলাম, তোমার আর্জেন্টিনা তো গেল! বিশ্বকাপের শেষদিনে জিজ্ঞেস করলাম, ফ্রান্স না ক্রোয়েশিয়া? কাকে সাপোর্ট করবে? বললেন, ক্রোয়েশিয়া। কৌশিকী চক্রবর্তীর গান খুব পছন্দ করতেন।

[পরিবারের আপত্তিতে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ গেল না আলিমুদ্দিনে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ