ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, বারাসত: স্ত্রী থাকতেও দ্বিতীয় বিয়ে করতে চায় স্বামী। তাই ‘পথের কাঁটা’ সরাতে স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে সে। কোনও মতে স্বামীর থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান ওই গৃহবধূ। জ্বলন্ত অবস্থায় রাস্তায় বেরিয়ে প্রতিবেশীদের থেকে সাহায্য চান তিনি। অসহায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন এলাকার বাসিন্দারা। বধূকে খুনের চেষ্টার দায়ে এখন শ্রীঘরে অভিযুক্ত স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই নারকীয় ঘটনার সাক্ষী হয় মধ্যমগ্রাম।
[ফের চিকিৎসায় গাফিলতিতে বধূমৃত্যুর অভিযোগ, সংকটে নবজাতকও]
কোড়া শিবমন্দির দক্ষিণ বাবুপাড়ার বাসিন্দারা এদিন দুপুরে তাঁরা দেখেন, এক মহিলার শরীরে আগুন জ্বলছে। সেই অবস্থায় তিনি ছুটে আসছেন। সামনে আসতেই স্থানীয়রা বুঝতে পারেন, তিনি ওই এলাকারই গৃহবধূ সোমা সিকদার। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জ্বলন্ত শাড়ি খুলতে খুলতে রাস্তা দিয়ে ছুটছিলেন সোমাদেবী। এলাকার মহিলারা ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন। গৃহবধূকে নিয়ে যাওয়া হয় মধ্যমগ্রাম থানায়। পুলিশের কাছে সোমাদেবী অভিযোগ করেন, স্বামী সঞ্জয় সিকদার-সহ শ্বশুর শশধর সিকদার এবং শাশুড়ি স্নেহলতা সিকদার দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর উপর নির্যাতন চালায়।
[মৃত্যুতেও রেহাই নেই, বধূর মৃতদেহ থেকে সোনার গয়না গায়েব ডোমের!]
বছর পাঁচেক আগে সঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সোমা। দু’বছর পর অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিলেন তিনি। তবে বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে যে মারধর শুরু হয়েছিল, তার জেরে গর্ভের সন্তানটি নষ্ট হয়ে যায়। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকার করে সঞ্জয়। কয়েক বছর আগে কাজের জন্য আরবে গিয়েছিল সে। ফিরে এসে সঞ্জয় স্ত্রীকে জানায়, অন্য এক মহিলার সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক আছে তার। ওই মহিলাকেই সে বিয়ে করতে চায়। শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সোমাদেবীকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্বামীর সঙ্গ ছাড়তে অস্বীকার করেন ওই গৃহবধূ। তার জেরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ায় সঞ্জয়। এদিন চরম পর্যায়ে চলে যায় সেটি। অভিযোগ, একটি ঘরে জোর করে আটকে ওই গৃহবধূর গায়ে তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তাঁর স্বামী। মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানানোর পরই পুলিশ সঞ্জয় ও তার বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই মহিলাকে বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।