সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির মোকাবিলায় একযোগে কাজ করতে সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আশা ছিল, সকলে মিলে আলোচনা করে নতুন কোনও পথের হদিশ মিলবে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ আলোচনার পর নিতান্তই হতাশা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে বেরিয়ে তিনি জানালেন, “প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি সব নোট করে নিয়েছেন। তবে কোনও আশ্বাস দেননি।” এছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও কয়েকটি দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। এই মুহূর্তে দেশে করোনা পরিস্থিতি স্টেজ – ২ অর্থাৎ দ্বিতীয় পর্যায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। এর বাইরে যাতে না ছড়িয়ে পড়ে, তার জন্য যথেষ্ট সচেতন থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। এরপর আজ বিকেল চারটে নাগাদ সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠকে বসার কথা বলেন মোদি। দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠকে আশার আলো দেখা যাবে, এই ভেবে সকলেই বৈঠকে যোগ দেন। ভিডিও কনফারেন্সের বৈঠকে অংশ নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও। কিন্তু আলোচনা শেষে তাঁকে হতাশ বলে মনে হল। মমতা জানালেন যে পরিস্থিতি নিয়ে কোনও আশ্বাসবাণী দেননি প্রধানমন্ত্রী। বরং কোন রাজ্য মোকাবিলায় কতটা কাজ করছে, তা বিস্তারিত জেনে নোট করে রাখলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে রবিবার থেকে এদেশের কোনও বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক বিমান নামবে না। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই বিদেশ থেকে বহু বিমান দেশের মাটি ছুঁয়েছে। দেখা গিয়েছে, বিদেশ ফেরত যাত্রীদের থেকেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। কলকাতা বিমানবন্দরেও লন্ডন ফেরত দুই তরুণের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
এসব জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে আবেদন করেন যে রবিবারের আগেই আন্তর্জাতিক বিমান আটকে দেওয়া হোক। তাহলে কিছুটা হলেও কমবে সংক্রমণের আশঙ্কা। এছাড়া দ্রুত করোনা ভাইরাস শনাকক্তরণে রাজ্যের সাতটি ল্যাব এবং কয়েকটি বেসরকারি ল্যাবকে অনুমতি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসচেতনতায় এ রাজ্যে যে মহামারি আইন জারি হয়েছে, তাও মোদিকে জানিয়েছেন মমতা। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বিদেশ ফেরত সব যাত্রীরই উচিত স্বেচ্ছায় ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকা। যদি কেউ তা না পালন করেন, তাহলে এ রাজ্যে আইনটি প্রয়োগ করে জোর করে তাঁদের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। আইনভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এই সব কথাই তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।
এছাড়া রাজ্যের সামগ্রিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তথ্য তুলে দিয়েছেন মমতা। যাতে তিনি জানিয়েছেন, ৫ লক্ষ ৬৩ হাজার জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। ৫৭ জন আপাতত কোয়ারেন্টাইনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ২। তবে প্রধানমন্ত্রীর করোনা-বৈঠক যে আশাহত হয়েছেন, তা বুঝিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.