Advertisement
Advertisement

হস্টেল ও হাসপাতালকে কুকুরমুক্ত করার দাবিতে নার্সিং পড়ুয়াদের বিক্ষোভ

দুই নার্সিং পড়ুয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতেও অনড় বিক্ষোভকারীরা।

NRS nursing students want dog free hospital
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:January 17, 2019 10:20 am
  • Updated:January 17, 2019 10:20 am

গৌতম ব্রহ্ম: হস্টেল ও হাসপাতালকে কুকুরমুক্ত করার দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করলেন এনআরএসের নার্সিং হস্টেলের আবাসিকরা। জানিয়ে দিলেন, কুকুরের এই উপদ্রব সহ্য করে নার্সদের পক্ষে সুস্থ পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। কুকুরমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চলবে। অবস্থান চলবে কুকুর হত্যার দায়ে ধৃত দুই নার্সিং পড়ুয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতেও। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অবস্থান বিক্ষোভকে পাত্তা দিচ্ছে না। তাদের মত, অবস্থান বিক্ষোভে কোনও নার্স শামিল হননি। সুতরাং এই অবস্থান বিক্ষোভের জেরে পরিষেবায় কোনও ব্যাঘাত ঘটবে না।

কথা থাকলেও বুধবার হাসপাতাল নিযুক্ত কমিটি কুকুর-শাবক নিধন কাণ্ডের রিপোর্ট জমা করেনি। কমিটির প্রধান তথা এনআরএস হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডা. দ্বৈপায়ন বিশ্বাস জানালেন, আজ, বৃহস্পতিবার সুপার ডা. সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। সৌরভবাবু রিপোর্টটি নার্সিং কাউন্সিলের কাছে পাঠাবেন। দ্বৈপায়নবাবু জানান, অভিযুক্তদের ব্যাপারে কাউন্সিল সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত দুই পড়ুয়া হস্টেল চত্বরে ঢুকতে পারবে না। করতে পারবে না ক্লাসও। দুই অভিযুক্ত মধুমিতা মণ্ডল ও সোমা বর্মনকে সাহায্যকারী তিন নার্সিং পড়ুয়াকে শাস্তি দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আপাতত হাসপাতালের তরফে এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

[কুকুরশাবক খুনে সাময়িক বরখাস্ত ৫ অভিযুক্ত, জামিনযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের]

Advertisement

এদিকে, দুই অভিযুক্তকে যখন আদালতে পেশ করা হয়েছে, তখনই নার্সিং কলেজের পড়ুয়ারা হস্টেলের ভিতর অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। ‘নার্সেস ইউনিটি’-র পক্ষে পার্বতী পাল জানিয়েছেন, গত দু’বছরে নার্সিং হস্টেলে থাকা ৩৬ জন আবাসিককে কুকুরে কামড়েছে। শুধু ডিসেম্বরের ‘ডগ বাইট’-এর শিকার হয়েছেন পাঁচ জন নার্সিং পড়ুয়া। কুকুরের এই উপদ্রব মোকাবিলার কোনও ব্যবস্থাই আজ পর্যন্ত করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অথচ, দু’জন ছাত্রীকে বলির পাঁঠা করা হল। পার্বতীর হুঁশিয়ারি, কুকুর সরানোর ব্যাপারে কী আইন আছে জানি না। কিন্তু, কুকুরের এমন উপদ্রব থাকলে নার্সদের পক্ষে হস্টেলে থেকে কাজ করা সম্ভব নয়। হস্টেল কুকুরমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হয়েছে শাঁখের করাত দশা। সৌরভবাবু জানান, পুরসভাকে মঙ্গলবারই কুকুরের বিষয়ে বলা হয়েছে। এদিন চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যা বুঝলাম, কোনওভাবেই হাসপাতাল থেকে কুকুরকে সরানো যাবে না। নির্বীজকরণ করে বা প্রতিষেধক দিয়ে আবার হাসপাতালেই ছাড়তে হবে। এটাই আইন। পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর ফোনে। পশু অধিকার আন্দোলনের মুখ হয়ে ওঠা মানেকা মঙ্গলবার এনআরএসের অধ্যক্ষকে ফোন করে ১৬টি কুকুরছানার মৃত্যু নিয়ে জানতে চান। মানেকাকেও একটি রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। পশুপ্রেমীরা এদিনও দলবেঁধে এনআরএসে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান।

[মানসিক ভারসাম্যহীনকে নগ্ন করে বেধড়ক মার, কাঠগড়ায় পুলিশ]

অন্যদিকে, নার্সিং পড়ুয়ারাও হস্টেল কুকুরমুক্ত করার ব্যাপারে অনড়। মঙ্গলবারই ‘নার্সেস ইউনিটি’-র পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এনআরএসের নার্সিং হস্টেল কুকুরমুক্ত না হলে বড় আন্দোলনের পথে নামবেন নার্সিং পড়ুয়ারা। সেই মতোই এদিন অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। সংগঠনের সম্পাদক ডা. পার্বতী পাল জানান, আগে নার্সিং হস্টেলে পাঁচটি কুকুর ছিল। এখন ৪৫। হাসপাতাল প্রশাসনের উদাসীনতায় কুকুরের এই বাড়বাড়ন্ত। সুতরাং শাস্তি তো হাসপাতালের কর্তাদের পাওয়া উচিত। তাঁদের জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পার্বতীদেবী জানালেন, মুদ্রার এক দিক দেখছেন সবাই। বাকি দিকে অনেক যন্ত্রণা রয়েছে। হস্টেলে ঢুকে মেয়েদের জুতো ছিঁড়ে দিচ্ছে কুকুর। বাথরুমে ঢুকে ডাস্টবিন থেকে ন্যাপকিন টেনে বের করে ছড়িয়ে দিচ্ছে করিডরে। মলত্যাগ করে সিঁড়ি, করিডর নোংরা করে রাখছে। বছর দেড়েক আগে এক ইন্টার্ন কুকুরের তাড়া খেয়ে তিনতলা থেকে ঝাঁপ দেন।

[কুকুর খুনের প্রতিবাদে অভিনেত্রী মিমির পোস্ট ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ