অর্ণব আইচ: রাতের অন্ধকারে শহরের বুকে এক বিদেশি দূতাবাসের পদস্থ আধিকারিকের শ্লীলতাহানি। বর্ষার রাতে শেক্সপিয়র সরণি এলাকার শর্ট স্ট্রিটে রাস্তার উপরই তাঁর শ্লীলতাহানি করে পালায় এক যুবক। এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ার একদিনের মধ্যেই তদন্ত করে অভিযুক্তকে ধরে ফেলল পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত যুবকের নাম রোহিত আগরওয়াল। সে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর অঞ্চলের একটি কলেজের ছাত্র।
সিসিটিভির ফুটেজে ওই ছাত্রের ছবি ওঠে। একই সঙ্গে ‘কল ডাম্পিং’ বা ‘টাওয়ার ডাম্পিং’ পদ্ধতিতে তদন্ত করে মধ্য কলকাতার একটি জায়গা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। জেরার মুখে ওই যুবক পুলিশের কাছে দাবি করে, সে জানত না যে, ওই মহিলা কোনও বিদেশি দূতাবাসের আধিকারিক। যদিও এই বক্তব্যের সত্যতা পুলিশ যাচাই করছে। ওই যুবককে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতে ওই মহিলার গোপন জবানবন্দির জন্য আবেদন জানানো হয়। শনাক্তকরণের জন্য জেলে টিআই প্যারেডের আবেদনও করা হয়েছে। মহিলা আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধৃতকে আরও জেরার প্রয়োজন। তাই টিআই প্যারেডের পর তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হতে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে এই ঘটনাটি ঘটে। শেক্সপিয়র সরণি অঞ্চলেই থাকেন বিদেশি দূতাবাসের আধিকারিক ওই মহিলা। সেদিন রাতে অল্প বৃষ্টি পড়ছিল। গাড়ি কিছুটি দূরে রেখে ওই অঞ্চলের শর্ট স্ট্রিট ধরে হাঁটছিলেন তিনি। তিনি বুঝতেও পারেননি কখন তাঁর পিছু নিয়েছে এক যুবক। নির্জন রাস্তায় যুবক পিছন থেকে তাঁর শ্লীলতাহানি করে। হঠাৎই এই ঘটনাটি ঘটায় চমকে ওঠেন মহিলা। তিনি চিৎকার করে ওঠেন। যুবক পালানোর আগে তিনি তাকে ধরে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু দূতাবাসের কর্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায় সে। ওই মহিলা আধিকারিক শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
শর্ট স্ট্রিটে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন শেক্সপিয়র সরণি থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা। রাস্তার উপর সিসিটিভির ফুটেজ থেকে যুবকের ছবি মেলে। ছবিটি নিয়ে খোঁজখবর চালাতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই অঞ্চলের একটি দোকানে কাজ করে সে। এ ছাড়াও কলেজে পড়াশোনা করে। দোকানের মালিকের সঙ্গে কথা বলে তার সম্পর্কে পুলিশ বেশ কিছু তথ্য নেয়। একই সঙ্গে ‘কল ডাম্প’ করেও তার মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা পুলিশ জোগাড় করে। মধ্য কলকাতার কে কে টেগোর স্ট্রিটে তল্লাশি চালিয়ে তাকে ধরে ফেলা হয়। আগে সে অন্য কোনও মহিলার শ্লীলতাহানি করেছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.