কলহার মুখোপাধ্যায়: আর মাত্র দু’দিনের অপেক্ষা। কলকাতায় ২৮ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা। বাইরের বিভিন্ন রাজ্য থেকে যাত্রীরা ফিরবেন এখানে। তাঁদের পৃথক থাকার জন্য এবার বিমানবন্দরেই তৈরি হচ্ছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার। সূত্রের খবর, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জমি দেওয়ার কথা বলেছিল রাজ্য সরকার। তাতে সাড়া দিয়ে পুরনো টার্মিনালের কাছে এই জমিটি দেওয়া হয়েছে। ৪০০ শয্যাবিশিষ্ট কোয়ারেন্টাইন সেন্টারটি দেখভালের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।
কথা ছিল, ২৫ তারিখ থেকে দেশজুড়ে চালু হয়ে যাবে আন্তঃরাজ্য উড়ান পরিষেবা। কিন্তু তার মাঝে সুপার সাইক্লোন আমফান এসে তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে শহর কলকাতা ও সংলগ্ন দুই জেলাকে। রেহাই পায়নি দমদম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও। রানওয়ে-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা জলে ডুবে যায়। এমনকি যে বিমানগুলি নিরাপত্তার খাতিরে আগেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেগুলিও জলের উপরেই কার্যত দাঁড়িয়েছিল। পার্কিং বে ছিল জল থইথই অবস্থায়। এক্সিট পয়েন্ট এলাকায় ছাদের ফাইবারের অংশের ছাউনির বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়েছিল ঝড়ের তীব্র গতিবেগের কারণে। তবে সেসব ক্ষতি দ্রুত মেরামত করে ঘুরে দাঁড়ায় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নেয়নি রাজ্য সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, ২৫ তারিখের বদলে এ রাজ্যে ২৮ থেকে বিমান পরিষেবা শুরু করার। সেই আবেদন সাড়া দিয়ে ২৫ তারিখ কলকাতার সমস্ত বিমান বাতিল করা হয়।
[আরও পড়ুন: বুড়ো হাড়েই ভেলকি, ওজন বাড়িয়ে আমফানকে গোল দিল টালা ট্যাঙ্ক]
তবে আপাতত আমফান বিপর্যয় সামাল দেওয়া গিয়েছে। তাই ২৮ তারিখই খুলে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রী বিমান পরিষেবা। তাই বিশেষ ব্যবস্থাও করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দর সূত্রে খবর, বাইরে থেকে যাঁরা এখানে নামবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের প্রথমে থার্মাল স্ক্রিনিং হবে। তারপর যদি কারও শরীরে COVID-19’র উপসর্গ থাকে, তাহলে সেখানেই তাঁদের সোয়াব টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সেই রিপোর্ট আসতে যে সময় লাগবে, সেই সময়টুকুর জন্য তাঁদের আলাদা করে রাখতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঝাঁ-চকচকে এই কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আপাতত ৪০০ শয্যা রয়েছে। এখানে থাকতে গেলে কোনও অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না যাত্রীদের। কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন যাত্রীরা। তেমন অসুস্থ হলে কাউকে বিমানবন্দর চত্বরের বাইরে গিয়ে থাকার জায়গা খুঁজতে হবে না, এই ভেবেই স্বস্তি পেয়েছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: রাজারহাট হজ হাউসে ইদ পালন ১০৮ বিদেশি তবলিঘি সদস্যের, ছাদেই নমাজ পাঠ]
ছবি: পিন্টু প্রধান।