BREAKING NEWS

১৫ চৈত্র  ১৪২৯  বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

বুড়ো হাড়েই ভেলকি, ওজন বাড়িয়ে আমফানকে গোল দিল টালা ট্যাঙ্ক

Published by: Sucheta Chakrabarty |    Posted: May 26, 2020 9:06 am|    Updated: May 26, 2020 9:06 am

Tala tank increase its weight, Amphan doesn`t destroy this tank

নব্যেন্দু হাজরা: বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখাল টালা ট্যাঙ্ক (Tala Tank)। ১৩০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া আমফানের তাণ্ডবকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের স্থানে অচল রইল এই ট্যাঙ্ক। মহানগরে ধ্বংসলীলা চালানো আমফান একটুকু চলাতে পারল না একশো বছরের পুরোনো টালা ট্যাঙ্ককে। জল ধরে রেখে ওজন বাড়িয়েই কেল্লাফতে করলেন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা।

আমফাণের (Amphan) তাণ্ডব চেনা শহরকে পালটে দিয়েছিল এক রাতের মধ্যে। মহানগরকে পরিণত করেছিল ধ্বংসস্তুপে। যে ক্রেন নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল, সোমবার ই়্জিনিয়ারদের পরীক্ষার পর জানালেন সব অবিকৃত রয়েছে। অর্থাৎ টালাকে একফোঁটা আঁচড় কাটতে পারেনি এই আমফান।জল পরিষেবাও কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে স্বাভাবিক রাখা গিয়েছে। যে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ঝড় আসার আগে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের কপালে জমেছিল, সোমবারের মধ্যেই তা উধাও।তবে প্রশ্ন হল ট্যাঙক বাচানো সম্ভব হল কী করে? ১৩০ কিমি বেগে আসা আমফানের জেরে শতাব্দী প্রাচীন ট্যাঙ্কের ক্ষতি হতে পারত। তাছাড়া এখনও এ ট্যাঙ্কের মেরামতির কাজ চলছে। ঝড়ের দিন দুপুরের পর থেকেই আবহাওয়া ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। তাদেখেই মেয়রকে জানিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেন ট্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। এমনিতে হাইড্রোলিক সিস্টেমে টালা ট্যাঙ্কে অনবরত জল ওঠানামা করে। কখনই ট্যাঙ্কে জল জমা থাকে না। কিন্তু আমফানের তাণ্ডব আঁচ করতে পেরে আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নেন, বিকেল পাঁচটা থেকে রাত্রি পর্যন্ত কোনও জল নামতে দেওয়া হবে না। বাড়ানো হবে ট্যাঙ্কের ওজন। দ্রুত চাবি বন্ধ করে জল নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। টাবলার ট্যাঙ্কে জল ধারণ ক্ষমতা ৯ মিলিয়ন গ্যালন। দ্রিত ৮ মিলিয়ন গ্যালন জল পূর্ন করে ফেলা হয়। ট্যাঙ্কের ওজন দাড়ায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। যাকে ছুঁতে পারলেও এতটুকু নাড়াতে পারল না আমফান।

[আরও পড়ুন:বড় সাফল্য, একসঙ্গে ৬০ জন করোনা রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরাচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল]

পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, “প্রথমত, জল ধরে রেখে ওজন বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ট্যাঙ্কের। ফেল হাওয়ার ধাক্কা সেভাবে লাগেনি। দ্বিতীয়ত, ট্যাঙ্ক মেরামতির কাজে বিদেশ থেকে ২ কোটি টাকা ব্যায়ে ক্রেন আনা হয়েছিল। সেটা নিয়েও চিন্তা ছিল। তবে সেদিনের জন্য ক্রেনটিকে ফিক্সড না রেখে মুভবেল করে দেওয়া হয়। ফলে সেদিন হাওয়ার গতি যেদিকে ছিল ক্রেনও সেদিকেই মুখ করে ছিল। কোনও সমস্যা হয়নি।” সোমবার সব পরীক্ষা করে পুর আধিকারিকরা বলেন যে বুড়ো হারে ভেলকি দেখিয়েছে টালা। আমফান সব ধ্বংস রে দিলেও টালা পাম্পের কোনও ক্ষতি হয়নি।

[আরও পড়ুন:বিধানসভার প্রস্তুতিতে ফের ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিশেষ কর্মসূচি দিলীপ ঘোষদের]

পুরসভা সূত্রে খবর, ১১০ ফিট উচ্চতার এই ট্যাঙ্কটিতে ৪টি রিজার্ভার রয়েছে। কাঠের উপরে ইস্পাত দিয়ে তৈরি এই জলাধার। টাইটানিক জাহাজ যে ইস্পাতে তৈরি সেই ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে এই ট্যাঙ্ক নির্মাণের সময়। এশিয়ার বৃহত্তম ও পৃথিবীর মধ্যে উচ্চতম জলাধার এই টালা ট্যাঙ্ক। উত্তর কলকাতা থেকে শুরু করে ভবানীপুর, কালীঘাট এলাকা পর্যন্ত জল সরবরাহ করে আসছে এই ট্যাঙ্ক। কলকাতা পুরসভার নথি জানান দেয় যে ১৯০১ সালে কলকাতার জল সরবরাহের জন্য পুরসভাকে এই ট্যাঙ্ক তৈরির প্রস্তাব দেন ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ার ডেভেরাল। এরপর ১৯১১ সালের ১২ জানুয়ারি ২২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ব্যায়ে ট্যাঙ্কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ওই বছরই ১৬ মে থেকে ট্যাঙ্ক চালু করে দেওয়া হয়।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে