Advertisement
Advertisement

Breaking News

Cyclone Yaas

রাত পোহালেই নিম্নচাপ পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে, ‘যশ’ মোকাবিলায় বিশেষ বৈঠক লালবাজারে

বুধবার সন্ধেয় আছড়ে পড়বে 'যশ'।

Special meeting arranged in lalbazar over cyclone Yaas | Sangbad Pratidin
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:May 23, 2021 8:23 pm
  • Updated:May 23, 2021 8:47 pm

অর্ণব আইচ: পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। দিঘা থেকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে মাত্র ৬৭০ কিলোমিটার দূরে তার অবস্থান। রাত পোহালেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে নিম্নচাপ। ‘যশ’ মোকাবিলায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চালাচ্ছে রাজ্য। কলকাতা পুরসভা, কেএমডিএ, সিভিল ডিফেন্স, সিইএসসি, পিডব্লুডি থেকে শুরু করে সেনা ও এনডিআরএফ সবার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখেই ঘূর্ণিঝড় ‘যশে’র মোকাবিলা করবে কলকাতা পুলিশ। তার জন্য লালবাজারে তৈরি হচ্ছে ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড সেন্টার’।

হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে যশ। ২৫ মে অর্থাৎ মঙ্গলবার তা আরও শক্তিশালী হবে। সেই কারণেই এদিন উপকূলবর্তী এলাকায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। বুধবার সকালের দিকেই ওড়িশা ও বাংলা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছবে যশ। সন্ধেয় আছড়ে পড়বে বাংলায়। মূলত পারাদ্বীপ ও সাগরের মাঝে এই ঘূর্ণিঝড়ের আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। যার জেরে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরে প্রবল বৃষ্টি হবে বলেই জানা যাচ্ছে। রবিবার ‘যশে’র মোকাবিলা নিয়ে পুলিশ ও অন্যান্য দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে লালবাজারে বৈঠকে বসেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার, কেএমডিএর সিইও অন্তরা আচার্য, সিইএসসির কর্তা গৌতম রায়, ডিজি (সিভিল ডিফেন্স) জগমোহন, সেনাকর্তা কর্নেল পীযূষ দে, এনডিআরএফ কর্তা গুরমিন্দর সিং, বিশেষ পুলিশ কমিশনার দেবাশিস রায় প্রমুখ। ভারচুয়াল বৈঠক করেন দমকল কর্তা অভিজিৎ পান্ডে। এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে সেনাবাহিনী, নৌসেনা ও বায়ুসেনাও।

Advertisement

[আরও পড়ুন: রাজ্যে থাবা চওড়া হচ্ছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের, কলকাতা ও শিলিগুড়িতে আরও সংক্রমিতের হদিশ]

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তৈরি হয়েছে ‘ইউনিফায়েড কম্যান্ড এজেন্সি’। লালবাজারে ‘কম্যান্ড সেন্টার’ থেকে প্রত্যেকটি দপ্তর বা এজেন্সির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (৩), যিনি কলকাতা পুলিশের নোডাল অফিসার। এই সেন্টার বা বিশেষ কন্ট্রোল রুমে থাকবেন অন্যান্য দপ্তরের আধিকারিকরা। ঘূর্ণিঝড়ের গতি সম্পর্কে ২৪ ঘণ্টা ধরে নজরদারি রাখবে এই সেন্টার। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র সময় থেকেই লালবাজার এসওপি তৈরি করেছিল। এ ছাড়াও গত বছর আমফানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে হবে ‘যশে’র মোকাবিলা। মঙ্গলবার থেকে কলকাতায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিভিন্ন রাস্তায় জমতে পারে জল। সেই জল তাড়াতাড়ি সরানোর জন্য কলকাতা পুরসভার সঙ্গে সমন্বয় রাখছে কলকাতা পুলিশ। প্রত্যেকটি বরোয় থাকছেন পুলিশের সার্জেন্ট পদের একজন করে নোডাল অফিসার। এ ছাড়াও প্রত্যেক থানার থেকে সর্বক্ষণ পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ঝড়ে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং উড়ে গেলে রয়ে যায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা। তাই পুলিশের সহযোগিতায় হোর্ডিং খোলার কাজ শুরু হচ্ছে। গত বছরও আমফানের পর পানীয় জলের সমস্যায় পড়েছিলেন শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা। এই বছর সেই সমস্যা মেটাতে পুলিশের সঙ্গে তৎপর পুরসভা। ঝড়ের পর গাছের ডাল পড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়ে বিপর্যয় হতে পারে। গত বছর বিদ্যুতের ছেঁড়া তার রাস্তায় পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছিল। কলকাতার বহু অঞ্চল ডুবে গিয়েছিল অন্ধকারে। বিদ্যুৎ ছিল না কয়েকদিন। তাই এই বছর পুলিশের পরামর্শে বিদ্যুৎ সংস্থা সারা কলকাতাজুড়ে তিনশোজনের টিম তৈরি করেছে। সমন্বয় রেখে পুলিশের পরামর্শে সেই টিমের সদস্যরা ছুটে যাবে জায়গাগুলিতে।

Advertisement

ঝড়ে গাছ পড়লেও যাতে রাস্তা তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করা হয়, তার জন্য তৈরি রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের মোট ৫০টি টিম। কলকাতায় এনডিআরএফের ন’টি টিম তৈরি রাখা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর চার কলাম বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বালিগঞ্জ, বেহালা ও ফোর্ট উইলিয়ামে। গাছ পড়ে যাতে অক্সিজেন ও অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতের কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য পুলিশ ও পুরসভা তৈরি রেখেছে জেসিবি। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে যাতে আহতদের তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়, তার জন্য প্রত্যেকটি ডিভিশনে প্রস্তুত পুলিশের বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্স টিম। প্রত্যেকটি ট্রাফিক গার্ডে তৈরি থাকছে ডিএমজির টিম। এ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার ময়দান, হেস্টিংস, ভবানীপুর, কালীঘাট, বেহালা, পর্ণশ্রী, হরিদেবপুর থানা ও দক্ষিণ শহরতলির কিছু থানায় ডিএমজির টিম থাকবে, যাতে ওই এলাকাগুলিতে তাড়াতাড়ি রাস্তা পরিষ্কার করা যায়। এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় এই রাজ্য ও ওড়িশার উপর নজর রেখেছে নৌসেনা। আটটি বন্যা ‘রিলিফ টিম’ ও চারটি ডুবুরিদের টিম নৌসেনা তৈরি করেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌসেনার চারটি জাহাজ ও বিমান। উদ্ধারকাজের জন্য বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি রেখেছে বায়ুসেনা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ