Advertisement
Advertisement
SSC scam

SSC Scam: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন অর্পিতা? জোর চর্চা ইডির অন্দরে

ইডি জেরায় যা বলছেন, তা আদালতে বলতেও 'প্রস্তুত' অর্পিতা!

SSC scam: Arpita Mukherjee may record secret statement in court according to ED source | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 23, 2022 8:58 am
  • Updated:August 23, 2022 9:05 am

স্টাফ রিপোর্টার: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Scam) মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে থাকা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee) বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। যাঁর দুই ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই অর্পিতার জবানবন্দি ঘিরে ইতিমধ্যে ইডিতে (ED) জোর আইনি চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, অন্যতম অভিযুক্ত অর্পিতার স্বীকারোক্তি পরবর্তীকালে মামলার শুনানিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা জানতে ইডির লিগ্যাল সেলের আইনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন তদন্তকারী অফিসাররা। যদি শেষ পর্যন্ত লিগ্যাল সেলের সম্মতি মেলে এবং অর্পিতার জবানবন্দি রেকর্ড হয়, তবে এই মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর চাপ আরও বাড়বে নিঃসন্দেহে।

Advertisement

ইডির পূর্বাঞ্চলীয় দপ্তর সূত্রে খবর, জেল হেফাজতে থাকাকালীন জেরায় গত কয়েকদিনে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তকারীদের জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ মডেল অর্পিতা। একসময় ইডির অফিসাররা অর্পিতার কাছে জানতে চান, ”আপনি যেসব কথা বলছেন, সেগুলি কি সরাসরি বিচারককে বলতে পারবেন?” অর্পিতার সপাট জবাব, “প্রস্তুত আছি।” মূলত, তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে ইডি অর্পিতাকে দিয়ে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

Advertisement

প্রথমত, অর্পিতা দাবি করেছেন, যে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ ও সোনাদানা এবং সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে তা তাঁর রোজগারের মাধ্যমে উপার্জিত নয়। স্রেফ ঘনিষ্ঠতার কারণে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে এই টাকা ও সোনা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর অবর্তমানে দুই ফ্ল্যাটে যে পার্থই লোক পাঠিয়ে টাকা ও সোনা রেখেছেন তাও অর্পিতার মুখ থেকে বিচারকের কাছে জবানবন্দিতে নথিভুক্ত করতে চায় ইডি।

[আরও পড়ুন: পয়লা সেপ্টেম্বর শহরে মহামিছিল, ৮ অক্টোবর কার্নিভ্যাল, পুজোয় ১১ দিন ছুটি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]

দ্বিতীয়ত, পার্থর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে গত কয়েক বছরে অর্পিতা টাকা লেনদেন সংক্রান্ত যা যা শুনেছেন, কার কার কাছ থেকে এই অর্থ নেওয়া হয়েছে তার তালিকা জানতে চায় ইডি। বিশেষ করে অর্পিতার দেখা বিভিন্ন জেলা থেকে আসা টাকার জোগান দেওয়া ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানাও জবানবন্দির রেকর্ডে রাখতে চান তদন্তকারীরা।

তৃতীয়ত, গত কয়েকদিনের জেরায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ঘিরে থাকা এই নিয়োগ দুর্নীতির বেশ কয়েকজন রাঘব বোয়ালের নাম অর্পিতার মুখে শুনেছেন ইডি আধিকারিকরা। জেলা থেকে আসা টাকার জোগান পার্থর কাছে আসার পর প্রভাবশালী কাদের কাছে পৌঁছত, তাও ১৬৪ ধারায় গোপন স্বীকারোক্তিতে রেকর্ড করাতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

How Partha Chatterjee spending time inside ED lock up

কোনও মামলায় এই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। যখন কেউ এই ধারায় কোনও বিচারকের কাছে গোপনে জবানবন্দি দেন তখন সেখানে দ্বিতীয় কেউ থাকেন না, পরে এই রেকর্ড খামবন্দি করে কোর্টের হেফাজতে রাখা হয়। মামলার শুনানির সময় এই জবানবন্দি বাদী বা বিবাদী, যে কোনও একপক্ষ বা উভয়পক্ষের ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কিন্তু অর্পিতাকে বিচারকের সামনে নিয়ে ১৬৪ জবানবন্দি করানোর আগে দু’টি দিক অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে ইডি –

এক, যেহেতু শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় অর্পিতাই অন্যতম অভিযুক্ত এবং তাঁর ঘর থেকে বিপুল টাকা ও সোনা উদ্ধার হয়েছে তাই বিচারের সময় এই জবানবন্দি কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে চিন্তিত স্বয়ং তদন্তকারীরাও।

দুই, ইডির সিনিয়র অফিসাররা চাইছেন এই মামলায় অর্পিতাকে ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে ব্যবহার করতে। তাঁদের বক্তব্য, তদন্তে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করছেন অর্পিতা, তাই তাঁর জবানবন্দি নিয়ে সত্য উদ্ঘাটন করে অন্য অভিযুক্তদের সাজার ব্যবস্থা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে অর্পিতার সাজা অনেকটাই লঘু হয়ে যাবে। আর সেই কারণে কোর্টে বারবার অর্পিতার নিরাপত্তা বাড়তি সুরক্ষিত করার জন্য আবেদন রাখছে ইডি।

[আরও পড়ুন: কাজ চাইলে জানতে চায় জঙ্গি কি না! দিল্লির বস্‌তিতে আতঙ্কে দিন কাটছে রোহিঙ্গাদের]

শিক্ষক দুর্নীতি মামলায় অর্পিতাকে এখনই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হবে, নাকি আরও কিছু ‘পদক্ষেপ’ করে তারপর বিচারকের সামনে স্বীকারোক্তি রেকর্ড করাতে হাজির করা হবে? কারণ, এই জবানবন্দি পার্থ-সহ বাকিদের ক্ষেত্রে প্রমাণ হিসাবে যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে তা মেনে নিয়েছেন তদন্তকারীরা।

লিগ্যাল সেলের তরফে তদন্তকারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, অর্পিতাকে দিয়ে এমন কিছু বলানোর চেষ্টা করতে হবে যা সে নিজে দেখেছে, অথবা ওই টাকা সংগ্রহের কর্মকাণ্ডে সে নিজেও পরোক্ষে যুক্ত ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী হিসাবে অর্পিতা যা দেখেছে তার যুক্তিনিষ্ঠ ও তথ্যভিত্তিক প্রমাণও চাই। শুধুমাত্র ‘হিয়ারসে’ অর্পিতার বক্তব্য বলে রেকর্ড করালে মামলায় তথ্য হিসেবে জবানবন্দির ধার কমে যাবে। বস্তুত, সেই কারণে একদিকে অর্পিতার সঙ্গে জেরায় আরও বেশি করে তথ্য সংগ্রহের কাজ যেমন চলছে তেমনই লিগ্যাল সেলের চূড়ান্ত সম্মতির জন্য অপেক্ষা করছেন ইডির তদন্তকারীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ