Advertisement
Advertisement

Breaking News

ক্লাসরুমে ‘গণচুম্বন’, বহিষ্কৃত হাওড়ার নামী স্কুলের ৬ ছাত্রছাত্রী

সিসিটিভিতে ধরা পড়ল পড়ুয়াদের 'দুষ্টুমি'।

 Students suspended for kissing in Classroom
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:January 22, 2019 8:55 am
  • Updated:January 22, 2019 9:13 am

সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: শহরের একটি নামী স্কুলে পরস্পরের গালে চুমু খেয়েছিল দুই খুদে পড়ুয়া। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তাই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা, তীব্র চাঞ্চল্য। দুই খুদেকে কাঠগড়ায় চাপিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ তলব করলেন অভিভাবকদের। পরিচালন কমিটির বৈঠক তপ্ত হল আগুনের মতো। দুই ছাত্রছাত্রীকে স্কুল থেকে ‘রাস্টিকেট’ করার দাবিও বাদ নেই! পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের অতি জনপ্রিয় সেই ‘হামি’ ছবির এমনই নানা দৃশ্যের যেন বাস্তবায়ন ঘটল হাওড়ার এক নামজাদা স্কুলে। ওই শিবপুর বিই কলেজ মডেল স্কুলে অবশ্য বিতর্কের কেন্দ্রে কোনও খুদে পড়ুয়া নয়। আঙুল উঠেছে দশম শ্রেণির তিনজোড়া কৃতী ছাত্রছাত্রীর দিকে। অভিযোগ, ভরা ক্লাসরুমে তারা একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছে।স্কুল সূত্রের খবর, সিসিটিভি ক্যামেরায় এই ‘অশালীন কাণ্ড’ ধরা পড়েছে। যার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ছয় পড়ুয়াকে কার্যত বহিষ্কারের পথে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, স্কুল কর্তৃপক্ষের কঠোর মনোভাবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে অভিভাবকদের বড় অংশ।

[গড়িয়াহাট অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হকারদের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা মেয়রের]

Advertisement

আইআইইএসটি ক্যাম্পাসের মধ্যেই শিবপুর বি ই কলেজ মডেল হাইস্কুল। ঘটনার সূত্রপাত গত অক্টোবর মাসে। পরীক্ষার আগেই এই ‘গণচুম্বন’-এর ঘটনা ঘটে স্কুলে। তখন অভিযুক্ত ছয় ছাত্রছাত্রী নবম শ্রেণিতেই পড়ত। জানা গিয়েছে, ভরা ক্লাসরুমে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ‘গণচুম্বন’ করতে থাকে অভিযুক্ত ছয় ছাত্রছাত্রী। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভাশিস দত্ত জানান, “এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ করতে আসেনি। তবুও ক্লাসরুমের সিসিটিভির ফুটেজে এই চুমু খাওয়ার দৃশ্য দেখতে পাই। ফুটেজ দেখানো হয় স্কুলের পরিচালন কমিটির সদস্যদের। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেন যে, অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের আর স্কুলে রাখা উচিত নয়। তবুও আমরা মানবিকতার খাতিরে অভিযুক্তদের নবম শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে দিই। সেই পরীক্ষায় ভালভাবে পাসও করে তারা। হিসাবমতো তারা এখন দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। এবার পরিচালন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের আর স্কুলে রাখা সম্ভব নয়। আমরা তাদের টিসি দিয়ে অন্য স্কুলে যাতে ভর্তি হতে পারে সেই ব্যবস্থা করছি।”

Advertisement

এদিকে আবার শিবপুর বিই মডেল হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না অভিভাবকদের একটি বড় অংশ। তাঁদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের মনে খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। মানসিক অবসাদের ভুগতেও পারে তারা। মাধ্যমিক পরীক্ষার ঠিক মুখে যা একেবারেই কাম্য নয়। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের নরম হওয়া উচিত।  এ বিষয়ে অভিভাবকরা মন্ত্রী অরূপ রায় থেকে শুরু করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শান্তনু সিংহ এবং পুরসভার প্রাক্তন বরো চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরির দ্বারস্থ হয়েছেন। মন্ত্রী অরূপ রায় অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের জানিয়ে দিয়েছেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, সেখানে আমার কিছু করার নেই।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শান্তনু সিংহ অবশ্য এতটা কড়া না হওয়ার জন্য প্রধানশিক্ষককে আবেদন জানিয়েছেন। তাতেও মেলেনি কোনও ফল। প্রাক্তন বরো চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরি জানান, “এটি একটি লঘু পাপে গুরুদণ্ডের ঘটনা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে চুম্বন করছে। সেখানে কিছু করা হয় না কেন? ক্লাসরুমে এই ঘটনা ঘটিয়ে নিশ্চয়ই অন্যায় করেছে মডেল স্কুলের অভিযুক্তরা। কিন্তু তাদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে বহিষ্কারের মতো এই কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে স্কুল কর্তৃপক্ষের একটু নরম হওয়া উচিত ছিল। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের কৈশোর মনে খারাপ প্রভাব পড়বেই। তার জন্য দায়ী থাকবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।”  স্কুল পরিচালন কমিটি সভাপতি রবীন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “পরিচালন কমিটির ভোটাভুটিতে বেশিরভাগ সদস্যই অভিযুক্তদের স্কুলে আর না রাখার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আমার কিছুই করার নেই।”

[ ডিম্ভাত’ নিয়ে এত কথা! জানেন কেন ডিমের ঝোলকেই মেনুতে বেছে নিল তৃণমূল?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ