অর্ণব আইচ: বিয়ের তিন মাসের মধ্যেই মৃত্যু অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর। শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার ঝুলন্ত দেহ। গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শুধু পণের জন্যই টানা শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালানো হত তাঁদের মেয়ের উপর। তারই জেরে মুসকান বেগম (১৮) নামে ওই গৃহবধূকে খুন করা হয়েছে। বাড়ির লোকের অভিযোগের ভিত্তিতে পণের জন্য অত্যাচার ও খুনের অভিযোগে স্বামী শেখ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে তপসিয়া থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে তার জামিনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। তাকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, গৃহবধূ মুসকান বেগমের বাপের বাড়ি রাজারহাটে। তপসিয়ার বাসিন্দা পেশায় চামড়ার কারখানার কর্মী শেখ সাজ্জাদের সঙ্গে গত ডিসেম্বরে বিয়ে হয় মুসকানের। তাঁর বোন সাহানি খাতুনের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই মুসকানের উপর শুরু হয় অত্যাচার। বিয়ের সময় বরের চাহিদামতোই দেওয়া হয়েছিল টাকা ও সোনার গয়না। পণ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল আসবাবপত্রও। কিন্তু তাতেও সাজ্জাদের চাহিদা মেটেনি। স্ত্রীর উপর প্রতে্যকদিন অত্যাচার চলত স্বামীর। তাঁকে বলা হত বাপের বাড়ি থেকে আরও টাকা নিয়ে আসতে। মুসকান রাজি না হলে চলত আরও অত্যাচার। কখনও কখনও লুকিয়ে ফোন করে বোনকে সেই অত্যাচারের কথা বলতেন গৃহবধূ। আবার বাপের বাড়ির লোকেদের অত্যাচারের বিষয়টি বলা হলে আরও মারধর করা হত।
এর মধ্যেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূ। বাপের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় প্রচণ্ড মারধর করার ফলেই মৃত্যু হয় তাঁদের মেয়ের। এর পর তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার খবর পেয়ে তপসিয়া থানার পুলিশ ওই গৃহবধূর দেহটি উদ্ধার করে। বাপের বাড়ির লোকেরা অভিযোগ দায়ের করার পরই স্বামী গ্রেফতার হয় পুলিশের হাতে। গৃহবধূর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মারধরের ফলেই মৃত্যু কি না, তার প্রমাণ পাওয়ার চেষ্টা চলছে। ধৃতকে জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.