দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্য সেরার তকমা পাওয়া শতাব্দী প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিপুল আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ। বুধবার সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সদর দপ্তরে যা নিয়ে হল দীর্ঘ শুনানি। চার বছর আগে কলকাতায় শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘সেরা বিদ্যালয় সম্মাননা’ পায় বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুল। ১২৫ বছর প্রাচীন স্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ চক্রবর্তী ও তাঁর এক সঙ্গীর বিরুদ্ধে আর্থিক বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জেলাস্তরে তদন্ত হয়েছে। মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবসর নিয়েছেন শম্ভুনাথ। স্কুলশিক্ষা দপ্তর বন্ধ রেখেছে তাঁর পেনশন। পূর্ব বর্ধমান জেলা স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কর্তাদের ওই স্কুলে ফের অডিট করার নির্দেশ দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
ভুয়ো তথ্য দিয়ে অভিভাবক ও প্রাক্তনীদের থেকে ডোনেশান নিয়েছে স্কুল, এদিনের শুনানিতে মূলত এই বিষয়টি আলোচনা হয়। শম্ভুনাথ বলেন, “স্কুলে ২০১৮ সাল থেকে ইংলিশ মিডিয়াম চলছে। সরকার কাউকে নিয়োগ করেনি। ইংরাজির শিক্ষকদের বেতন, কম্পিউটার, স্কুল পরিচ্ছন্ন রাখা, নিরাপত্তা কর্মী, ছাদ সারানোর জন্য টাকা দরকার ছিল। সেই কাজে আমরা অনুদান গ্রহণ করেছি।” শিক্ষার অধিকার আইনে ডোনেশন নেওয়া বেআইনি। তবু স্কুলের স্বার্থে তিনি টাকা নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
একই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ পালের দাবি, “মিড ডে মিল, ওয়েবেলের নামে ভুয়া টাকা নেওয়া-সহ বিপুল আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। আমার অভিযোগে মামলা হয়েছে। শম্ভুবাবু এখন জামিনে মুক্ত।” অভিযুক্ত জানিয়েছেন, “আদালত সবকিছু শোনার পর আমাকে স্থায়ী জামিন দিয়েছে। আসলে লকডাউনে যাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা বলেছিলাম তারা রাগ পুষে রেখেছিল। এখন অবসর গ্রহণের পর আমার বিরুদ্ধে কুৎসা করছে।”
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়-সহ বাদি ও বিবাদি পক্ষের সবাই উপস্থিত ছিলেন পর্ষদে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্যরাও ছিলেন। জেলার শিক্ষা কর্তাদেরও ডেকে পাঠিয়েছিল পর্ষদ। কল্যাণবাবু এ বিষয়ে কিছু না জানালেও পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলের সুনাম ক্ষুন্ন হওয়ার জন্য দু’পক্ষকেই ভর্ৎসনা করা হয়েছে। পাশাপাশি ফের অডিট করার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.