BREAKING NEWS

১৩ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  রবিবার ২৮ মে ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

তাল থেকে জিলিপি, কচুরি, পাটিসাপটা! হরেক পদের উৎসবে মেতেছে পুরুলিয়া

Published by: Sulaya Singha |    Posted: August 31, 2019 12:48 pm|    Updated: August 31, 2019 3:16 pm

purulia-palm-festival-presenting-different-kind-of-food-items

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জন্মাষ্ঠমীতে গোপালের ভোগে তালের বড়া দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু তাল থেকে তৈরি হয়েছে সিঙাড়া, জিলিপি, কচুরি, ফুলুরি, পাটিসাপটা, ইডলি এমনকী মোমো! ভাবতে পারছেন! রসনা তৃপ্তিতে তালের এমনই হরেক রকম জিভে জল আনা পদ নিয়ে তাল উৎসব শুরু হল পুরুলিয়ায়।

রাঙামাটির পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমে সারি-সারি তাল গাছ। সেই তাল মাঠ থেকে রাস্তায় গড়াগড়ি খেলেও তা বাড়ি নিয়ে যায় না কেউই। এভাবেই শরতে অব্যবহৃত ও উপেক্ষিত হয়ে পড়ে থাকে এই ফল। কিন্তু রাঙামাটির সেই অব্যবহৃত পাকা তালই যে নানান পদে রসনা মেটাবে তা বোধহয় এই পুরুলিয়া জানত না? শুধু কি পুরুলিয়া? খাদ্য রসিক অনেক বাঙালিরও তা জানা নেই। এই উৎসবে এসে তা মেনে নিলেন অনেকেই। যেমন শহর পুরুলিয়ার বিদ্যাসাগর কলোনীর বাসিন্দা রুমা চট্টরাজ। তাঁর কথায়, “খেতে খুবই ভালবাসি। কিন্তু তাল নিয়ে যে এতরকম পদ ভাবতেই পারছি না। সত্যি এই উৎসবে না এলে জানতামও না।” একই কথা এই শহরের মুনসেফডাঙার বাসিন্দা তথা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা প্রশান্ত রক্ষিতের। তাঁর কথায়, “এখানে তালের ১৪ রকম পদ রয়েছে। কম্বো প্যাক করে তা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। তাল দিয়ে এত কিছু এর আগে জানতাম না।” রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশে এই তাল-খেজুর নিয়ে হাব তৈরি হচ্ছে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে। সেই কাজ দেখভাল করছেন রঘুনাথপুর মহকুমাশাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর। কিন্তু তিনিও জানতেন না তাল থেকে এত হরেক রকম সুস্বাদু পদ তৈরি সম্ভব।

Food Festival

[আরও পড়ুন: নেট তথ্যে বিপত্তি, ডেঙ্গু রোগীদের মর্মান্তিক পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে পেঁপে পাতা]

উৎসবে পাকা তাল থেকে লোভনীয় সব পদ দেখে অবাক হয়ে যান। তাঁর কথায়, “তাল-খেজুর নিয়ে আমাদের প্রশাসনিক স্তরে নানা কর্মকাণ্ড চলছে। প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র তৈরি হওয়ারও প্রস্তাব রয়েছে। কিন্তু তাল থেকে যে এত কিছু সুস্বাদু খাবার হয় তা জানা ছিল না।” শহর পুরুলিয়ার ওয়েস্ট লেক রোডে একটি সংস্থার উদ্যোগে একটি হোটেলে এই উৎসব শুরু হয় শুক্রবার। চলবে আজ, শনিবার পর্যন্ত। দুপুর দু’টো থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলা এই উৎসবের দিনই খাদ্য রসিক বাঙালির ভিড় উপচে পড়েছে! হোটেলের চারপাশ যে ম-ম করছে পাকা তালের গন্ধে। একেবারে স্বল্প মূল্যে তালের ফুলুরি, মালপোয়া, তালের চিত্রকূট, রুমালি রুটি, সেদ্ধ পুলি, কেক বাদ নেই কিছুই। শুধুই কি সুস্বাদু সব পদ?

momo

বাঙালির হেঁশেলে তা প্রস্তত করার জন্য তালের রন্ধন প্রণালীর পু্স্তিকাও মিলছে। এই হরেক রকম পদ বানানোর কারিগর কলকাতার বাগুইআটির কেকা সরকার, সুলেখা লাহা বলেন, “মনের ভাবনা থেকেই এই সব পদ তৈরি করছি। মালপোয়া যখন হচ্ছে তখন পাটিসাপটাই বা হবে না কেন? এভাবে মিলেছে সাফল্য।” পুরুলিয়ায় এমন উৎসব করে সেই সব পাচকরা এখানকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকেও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আয়ের পথ সুনিশ্চিত করছে। আয়োজক সংস্থার তরফে সুজিত কুমার মিত্র বলেন, “এই উৎসব থেকে বিশাল অঙ্কের ব্যবসা হোক সেটা আমরা অন্তত এখান থেকে চাইছি না। এখানকার খাদ্য রসিক মানুষজন জানুক এই জেলার সারি-সারি তাল গাছের অব্যবহৃত পাকা তাল থেকে কতরকমের সুস্বাদু খাবার তৈরি হয়। তাহলেই আমাদের এই উৎসবের সার্থকতা।”

ছবি: সুনীতা সিং।

[আরও পড়ুন: পর্যটনে নয়া দিগন্ত, এবার সরাসরি শিলিগুড়ি থেকে সড়কপথে যাওয়া যাবে কাঠমান্ডু]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে