Advertisement
Advertisement

Breaking News

Sandeshkhali

চাল-দুধ-নারকেল নিয়ে কলকাতায় পিঠে খাওয়াতে হাজির সন্দেশখালির মহিলারা

অকাল এই পিঠে পার্বণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সন্দেশখালি চাউল-কথা।’

women from Sandeshkhali will make special sweet at kolkata Food festival
Published by: Akash Misra
  • Posted:April 20, 2024 10:20 am
  • Updated:April 20, 2024 11:16 am

অভিরূপ দাস: বিশ সের দুধ। বারো সের চালের গুঁড়ো। আঠারোটা কচি নারকেল।
এ সব নিয়ে শহরে হাজির সন্দেশখালির মহিলারা। আজ শনিবার তাঁরা দুধ-নারকেল-চালের গুঁড়ো মাটির হাঁড়িতে চাপিয়ে কাঠের জ্বালে পিঠে বানাবেন। খাওয়াবেন শহুরে বাবুদের। বার্তা দেবেন, সন্দেশখালি মানেই হিংসা, নারী নিগ্রহ নয়। আর পাঁচটা জায়গার গেরস্ত মেয়েদের মতো সন্দেশখালির মহিলারাও রন্ধনে পটিয়সী। ‘সন্দেশখালির পিঠে’ বলতে ইদানিং যে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়েছে, হাতেকলমে পিঠে বানিয়ে কলকাতাবাসীর রসনাতৃপ্তি করে তা বদলে দিতে চাইছেন সন্দেশখালির সীমা, নয়না, আয়েষারা।

বস্তুত বেশ কিছুদিন ধরেই এমন ইচ্ছে দানা বাঁধছিল সন্দেশখালির মহিলাদের মনে। কিন্তু চাইলেই তো আসা যায় না। খান কয়েক নদী পেরিয়ে তবে তাঁদের গ্রাম।
সেতু বন্ধনের কাজ করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পুর্নেন্দু বসু, রাজ‌্য সভার সাংসদ দোলা সেন। তাদেরই সহযোগিতায় কালিন্দী নদী পেরিয়ে সত্তর-আশি কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করে আজ শনিবার সন্দেশখালির মহিলারা বলতে আসছেন নিজেদের গল্প।

Advertisement

অকাল এ পিঠে পার্বণের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সন্দেশখালি চাউল-কথা।’ অনুষ্ঠানের পরিবেশনায় ‘বসুন্ধরা অর্গানিক’। সংস্থার পক্ষ থেকে কৃষি-চিন্তাবিদ রবিন বন্দ্যোপাধ‌্যায় জানিয়েছেন, সন্দেশখালি মানেই অশান্তি নয়। কোনওদিন তা ছিলও না। যাঁরা জানেন না। তাঁদের বলবো আজ অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে এসে ওঁদের মুখেই গল্প শুনুন। চেখে দেখুন ওঁদের হাতের সেদ্ধ পিঠে, পাটিসাপটা।
উত্তর কলকাতার ইন্দ্রবিশ্বাস রোডের টালা পার্কের কাছেই সার্কাস ময়দানে আজ একটুকরো সন্দেশখালি। সকাল দশটা থেকে দুপুর তিনটে, আন্তরিকতা মেখে খাবার পরিবেশন করবেন উত্তর ২৪ পরগণার ছোট্ট ভূখন্ডের একঝাঁক মহিলা। যে কেউ সে অনুষ্ঠানে আসতে পারেন।

Advertisement

পুর্নেন্দু বসুর কথায়, ‘‘ এ অনুষ্ঠানের মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। ওখানকার মেয়েরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে মাঠে ফসল ফলান। সেই চাল-ডাল নানাবিধ খাবার নিয়েই তাঁরা আসছেন কলকাতায়।’’
এ চাল-ডাল তো মেলেনা কলকাতার বাজারে।

[আরও পড়ুন: পয়লার পেটপুজোয় মাটন নিহারীর সঙ্গে কাশ্মীরি পোলাও, ভোজ হোক কবজি ডুবিয়ে]

রাণী আকন্দ সেদ্ধ চাল, হরিণাখুরি আতপ কিম্বা হলদে বাটালি অথবা চৈতি মুগ। সন্দেশখালির মাটিই তার একান্ত ঠিকানা। সেসবই মিলবে অনুষ্ঠানে। যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছে সে এলাকার বরো চেয়ারম‌্যান তরুণ সাহা জানিয়েছেন, ‘‘আমরা এখানে নিমিত্ত। ওই এলাকার বাস্তব ছবিটা ওরাই তুলে ধরবে।’’
কি কি খাবার রয়েছে ‘সন্দেশখালির চাউল-কথায়’? গাঁদাল পাতা দিয়ে মাছের ঝোল কিম্বা খাম আলু দিয়ে পোনা মাছ অথবা ডয়রা কলার মোচা। সন্দেশখালির গেরস্ত মহিলাদের হেঁসেলের সেসব জিভে জল আনা রান্না চাখার সুযোগ রয়েছে এই ‘চাউল-কথায়’। গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহ এড়াতে থাকছে নানান ধরণের পান্তাভাতও। মাত্র দু’শো পঁচিশ টাকায় মিলবে কালো মোটা চালের পান্তাভাত, থানকুনি পাতা বাটা, আলু সেদ্ধ মাখা, সজনে পাতার বড়া, মৌড়লা মাছ ভাজা, চিংড়ি মাছ দিয়ে কচুশাক, চালতার চাটনি। আর এ সব রান্নার সমস্ত উপকরণ আসছে খোদ সন্দেশখালি থেকে। হাতা-খুন্তি নিয়ে মহিলারা বলছেন, ‘‘আর নিন্দে না করে খেয়ে দেখুন আমাদের মাটির খাবার।’’

তবে রান্না তো অফুরন্ত নয়। দুপুর তিনটে পর্যন্ত চলবে অনুষ্ঠান। শুক্রবার রাত দশটার মধে‌্যই তিনশোজন বুকিং করে নিয়েছেন পিঠে-পায়েস-পান্তাভাত খাওয়ার জন‌্য। দেড়শো টাকা লাগছে বুকিং করতে। ৯৮০৪৫৪৯৮৮৯ নম্বরে ফোন করে বুকিং করা যাচ্ছে। ধামাখালি থেকে গাড়ি করে অনুষ্ঠান স্থলে মহিলাদের নিয়ে আসছেন আয়োজকরা। ফের পৌঁছে দেওয়া হবে গাড়িতে। সফল হলে? পরের বছর আরও বড় করে অনুষ্ঠান হবে বলে জানিয়েছেন রবিনবাবু।

[আরও পড়ুন: আহা! রংবাহারি গামছা, বৈশাখের পয়লা দিনে সাজ হোক রঙিন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ