শুভঙ্কর বসু: পয়সা ছাড়া জীবন অচল। আর মহা মূল্যবান এই বিনিময় সামগ্রীর গায়ে মেখে করোনা হানা দিচ্ছে না তো? মারণ ভাইরাসের প্রকোপ পড়া ইস্তক এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। আর আনলক পর্যায়ে তা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ জীবন সচল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। বিশেষত খুচরো পয়সা। কারণ কাগজে ভাইরাস ততটা গেড়ে বসতে না পারলেও ধাতব বস্তু বা মেটাল সারফেসে তার দীর্ঘস্থায়ী অস্তিত্বের কথা একরকম প্রমাণিত। ফলে নোট আদান প্রদানের ক্ষেত্রে তেমন ভীতি না থাকলেও খুচরো পয়সা কতটা বিপদজনক?
এ নিয়ে তেমন কোনও প্রমাণিত তথ্য এখনও উঠে না এলেও সম্ভাবনা যে নেই সেটা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এ ব্যাপারে অভয়বাণী শোনালেও তাদের দাবি, অন্য ধাতব পদার্থ স্পর্শ করার মাধ্যমে যদি সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে খুচরো পয়সার মাধ্যমে নয় কেন! বিশিষ্ট ভাইরোলজিস্ট তথা চিকিৎসক সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের মতে, এ বিষয় এখনও গবেষণামূলক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি ঠিকই, কিন্তু সংক্রমণ সাধারণত ভাইরাসের অনুপাতের উপর নির্ভর করে। মনে করা হয় কোন সারফেসে সংক্রমিত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির ড্রপলেট থেকে আসা ভাইরাসের অনুপাত যদি ১০ টু দ্য পাওয়ার ১২ কিংবা ১০ টু দ্য পাওয়ার ১১, পার মিলি লিটার হয়; তাহলে তা সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আর কয়েনের যদি সেই অনুপাত ভাইরাস পার্টিকেল এসে পড়ে এবং তা হাতের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সংক্রমিত হতেই পারেন।
[ আরও পড়ুন: আশার আলো, অক্সফোর্ডের ‘টিকা’ করোনা থেকে সুরক্ষা দেবে এক বছর ]
কিন্তু এ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। কয়েনে ভাইরাস থেকে থাকলেও তা থেকে সংক্রমণ রোধ করাটা অনেকটাই সহজ। সিদ্ধার্থ বাবুর কথায়, “ভাইরাসের হাত পা নেই যে সে আপনা আপনি শরীরে ঢুকে পড়বে। অন্য সবকিছুর মতই এক্ষেত্রেও সাবধানতাই সংক্রমণ এড়ানোর সবচেয়ে বড় উপায়। বেশ কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যেমন কয়েন ধরার পর হাত সাবান দিয়ে কচলে ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। কোনভাবেই হাত চোখ, মুখ, নাক, কানে স্পর্শ করানো চলবে না। এছাড়াও বাইরে থেকে আনা কয়েন বাড়িতে সাবান জলে ধুয়ে নিতে পারলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে। সংক্রমণের বিন্দুমাত্র ভয় থাকবে না।”