Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tumor

মুখের গভীরে পেল্লায় মাংসপিণ্ড, খেতেও বাধা, রোগীর প্রাণ বাঁচালেন কলকাতার চিকিৎসকরা

ট্র‍্যাকিয়া বা শ্বাসনালিকে দখল করে বসেছিল মাংসের চাঁই।

Doctors of Kolkata saved patient's life who have a tumor deep in her mouth | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:August 16, 2023 10:12 am
  • Updated:August 16, 2023 10:13 am

অভিরূপ দাস: খাবার গিলতে কষ্ট হচ্ছিল। রক্তে কমছিল অক্সিজেনের মাত্রা। কে জানত মুখের গভীরে লুকিয়ে রয়েছে পেল্লায় টিউমার (Tumor)। এদিকে অস্ত্রোপচার করে সেটি বাদ দেওয়াও যাচ্ছে না। শ্বাসনালিও আটকে দিয়েছিল কিম্ভুত ওই মাংসপিণ্ড! মুখের মধ্যে সে এতটাই ডালপালা মেলেছিল যে, আটকে গিয়েছিল নিশ্বাস নেওয়ার রাস্তা। মাংসপিণ্ডের চাপে শ্বাসনালির ‘বাইপাস’ হয়ে গিয়েছিল সরু গলি। চিকিৎসকরা বলছেন, যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা অনামিকা মজুমদারের ট্র‍্যাকিয়ায় ২২ মিলিমিটার জায়গা থাকা উচিত সেখানে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য মাত্র দশমিক ১৭৩ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা পড়ে ছিল। স্বাভাবিকভাবেই সল্টলেকের বাসিন্দা ষাট বছরের প্রৌঢ়া ভুগছিলেন শ্বাসকষ্টের সমস্যায়।

মুখের ভিতরের ওই মাংসপিণ্ডের জন্য খাবার গিলতেও মারাত্মক কষ্ট হচ্ছিল। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম ডিসফেজিয়া। তড়িঘড়ি ভরতি হন অ্যাপোলো হাসপাতালে। হাসপাতালে দ্রুত তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়। সেখানেই ধরা পড়ে পেল্লায় মাংসপিণ্ড। হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. অভীক ঘোষ জানিয়েছেন, মুখের ভিতরের ক্রিকোফ্যারিংস থেকে ইসোফেগাস পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল ওই মাংসপিণ্ড। ট্র‍্যাকিয়া বা শ্বাসনালিকে দখল করে বসেছিল মাংসের চাঁই। স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস নিতে পারছিলেন না বলে ঝিমিয়ে পড়ছিলেন মহিলা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যু: ডিন অফ স্টুডেন্টস ও রেজিস্ট্রারকে লালবাজারে তলব]

অবস্থা এতটাই গুরুতর, ট্র‍্যাকিওস্টমি করার উপায় ছিল না। করা যাচ্ছিল না পালমোনারি স্টেন্টিং। এদিকে লম্বা অস্ত্রোপচার করতে গেলে ট্র‍্যাকিওস্টমি করা অত্যন্ত জরুরি। গলায় ফুটো করে নল ঢুকিয়ে শ্বাস নেওয়ার পথ প্রশস্ত করাকেই বলা হয় ট্র‍্যাকিওস্টমি। কী করে বাঁচানো যায় প্রৌঢ়াকে? আলোচনায় বসেন ১৮ চিকিৎসক। যে টিমে ছিলেন ডা. অভীক ঘোষ, ডা. সুকৃৎ বসু, ডা. তমাশিস মুখোপাধ্যায়, ডা. দেবরাজ যশ, ডা. রেশমী চাঁদ, ডা. সুপ্রতিম ভট্টাচার্য, ডা. স্বপ্না সিরোহিয়া, ডা. অচিরাভ কুমার প্রমুখ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: গোলমাল হলেই সাইরেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে এবার থানায় থানায় বাজবে ‘পাগলা ঘন্টি’]

শেষমেশ টানা ৬ ঘণ্টার ঝুঁকিবহুল এক অস্ত্রোপচার শেষে ট্র‍্যাকিয়া দখল করে থাকা টিউমারের অংশটা সন্তর্পণে বাদ দেওয়া হয়। এরপর রোগী যাতে স্বাভাবিক ভাবে নিশ্বাস নিতে পারেন তার জন্য বসানো হয় পালমোনারি স্টেন্ট। অতিকায় ওই মাংসপিণ্ডের জন্য খাদ্যনালিতেও খাবার গিলতে সমস্যা হচ্ছিল । ফিডিং জেজুনোস্টমি বা ফিডিং টিউবের মাধ্যমে রোগীকে খাওয়ানো শুরু হয়। কেটে ফেলা মাংসপিণ্ডের বায়োপসি করে দেখা যায় তাতে রয়েছে স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা। যা কোষের ত্বকের এক বিশেষ ক্যানসার। দ্রুত শুরু করা হয়েছে রেডিয়েশন। ডা. অভীক ঘোষ জানিয়েছেন, মাংসপিণ্ডটা এমন অবস্থায় ছিল, চিকিৎসাই শুরু করা যাচ্ছিল না। এই মুহূর্তে ক্যানসার নির্মূল করার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ