Advertisement
Advertisement

৯২ শতাংশ রোগীর করোনামুক্তি স্বদেশি ভেষজেই, গোপন কথা ফাঁস করল চিন

এদেশে এই পদ্ধতি প্রয়োগ কতটা সম্ভব, জানুন বিশেষজ্ঞদের মত।

Herbs cured 92 percent corona victims, claims China
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 8, 2020 6:54 pm
  • Updated:June 8, 2020 7:02 pm

গৌতম ব্রহ্ম: স্বদেশি ভেষজ ওষুধেই দেশের ৯২ শতাংশ করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়েছেন। শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানিয়ে দিল চিন। চিনের ইউহান থেকেই করোনা সংক্রমণের সূত্রপাত। যা এখন মহামারী হয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। চিন কিন্তু মৃত্যু পাঁচ হাজারের মধ্যে আটকে রেখেছে। ১৪০ কোটির দেশে আক্রান্তের সংখ্যা লাখও পেরোয়নি।

কোন মন্ত্রবলে COVID সংক্রমণ রুখে দিল ড্রাগনের দেশ? হরেক জল্পনা পল্লবিত হয়েছে বিশ্বজুড়ে। COVID’এর মতোই সংক্রমিত হয়েছে সে কৌতূহলও। তারই মধ্যে এই শ্বেতপত্র প্রকাশ। রবিবার বেজিংয়ে রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে চিনের ‘স্টেট কাউন্সিল অফ ইনফরমেশন’ জানিয়ে দেয়, করোনা বধে সাফল্যের গোপন কথা। বিভাগীয় মন্ত্রী তথা চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রচার বিভাগের উপপ্রধান জু লিন জানিয়েছেন, মে মাস পর্যন্ত চিনে ৮৩,০১৭জন কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৮, ৩০৭জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩৪ জনের। অর্থাৎ ৯৪.৩ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই এর মধ্যে ৯২ শতাংশ রোগীর উপর ‘চাইনিজ ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন’ প্রয়োগ করা হয়েছে। অর্থাৎ চিনা ভেষজ ও প্রচলিত কিছু ওষুধেই করোনামুক্ত হয়েছেন ৯২ শতাংশ রোগী!

Advertisement

[আরও পড়ুন: কপালেই লেখা করোনার ভবিষ্যৎ, তৃতীয় নেত্রের মেলাটোনিনে ভাগ্য বদলানোর চেষ্টা বিজ্ঞানীদের]

এর আগে চিনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এলসিভিয়ার প্রকাশনা সংস্থায় একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। যাতে দাবি করা হয়, ৭০১ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর উপর বারোটি চিনা ভেষজের মিশ্রণ প্রয়োগ করা হয়েছে। এবং বেশির ভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সেই গবেষণালব্ধ ফল নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। ‘সংবাদ প্রতিদিন’ প্রথম ওই ট্রায়াল নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যা দেখে দেশের প্রায় সাড়ে সাত হাজার আয়ুর্বেদ চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একটি জাতীয় আয়ুশ প্রোটোকল তৈরির আবেদন জানান। গোয়া, কেরল, গুজরাত, চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর-সহ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য সেই প্রোটোকল মেনে মৃদু উপসর্গযুক্ত কোভিড রোগীর চিকিৎসা করে। COVID যুদ্ধে শামিল ফ্রন্টলাইন কর্মীদেরও খাওয়ানো হয় আয়ুর্বেদ ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ।

Advertisement

এবার সরকারিভাবে চিন ভেষজ ওষুধ প্রয়োগে সাফল্যের কথা স্বীকার করে নেওয়ায় আয়ুর্বেদের হাত আরও শক্ত হল বলেই মনে করছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা। শ্যামবাজারের জে বি রায় আয়ুর্বেদ কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডা. সঞ্জীব সামন্ত জানিয়েছেন, চিনে মডার্ন মেডিসিন ও ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন হাত ধরাধরি করে চলে। তাই এই সাফল্য এল।

[আরও পড়ুন: গবেষণা অসমাপ্ত, তবু COVID-19 রোধে প্রতিষেধকের উৎপাদন শুরু ব্রিটিশ সংস্থার!]

কিন্তু এদেশে এখনও সেই সুযোগ নেই। সঞ্জীববাবুর পর্যবেক্ষণ, দেশ স্বাধীন হওয়ার সময় যে স্বাস্থ্যনীতি তৈরি হয় সেখানে আয়ুর্বেদের কোনও উল্লেখ ছিল না। তাই সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরনো একটি বিজ্ঞান এখনও এদেশে অবহেলিত। শহরের নেফ্রোলজিস্ট ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত অবশ্য চিনা শ্বেতপত্র নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মত, প্রথাগত চিনা ওষুধে যদি কাজ হয়, তাহলে তো ভালই। রোগের নিরাময় হওয়া নিয়ে কথা। কিন্তু, সমস্যা হল, চিন বারবার ভুল তথ্য দিয়ে বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। তাই একটি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ দরকার। অনেক ধোঁয়াশা আছে। আজ অবধি কিন্তু জানা যায়নি, চিনের ২ লক্ষ মোবাইল গ্রাহক কোথায় উধাও হয়ে গেলেন? সন্দেহের সুর ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরাম’—এর সভাপতি ডা. অর্জুন দাশগুপ্তর গলায়ও। তিনি বলেন, “COVID চিকিৎসায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন, হাইড্রোক্সিক্লোরোকুনের মতো একাধিক ওষুধের নাম ভেসে উঠেছে। কিন্তু এর পিছনে এত বেশি রাজনীতি রয়েছে যে জনমানসে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। সেই সুযোগেই আয়ুর্বেদ বা চিনা ওষুধের এই রমরমা। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কোথায়?”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ