সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে প্রতিষেধকই শেষ ভরসা এখন। তবে জীবাণু দ্রুত মিউটেশনের ফলে তার আচরণ বোঝা মুশকিল। আর সেটাই প্রতিষেধক তৈরির পথে মূল অন্তরায়। কিন্তু শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও লড়াই তো থেমে থাকে না। তাই করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিশ্বের বহু দেশ। সবচেয়ে আগে কাজ শুরু করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। মানবদেহে তাদের তৈরি ওষুধ ChAdOx1-এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এগিয়ে গিয়েছে তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত। ফলাফল এখনও অজানা। তবে এবার তা সর্বসমক্ষে আসতে চলেছে। সূত্রের খবর, সোমবারই তা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করবেন বিজ্ঞানীরা।
কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। চিনে করোনা ভাইরাসের দাপটের খবর পেয়েই বিজ্ঞানীদের একাংশ বুঝেছিলেন, শুধু চিন নয়, গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়বে এই মারণ জীবাণু। ফলে তাকে বাগে আনার জন্য প্রতিষেধক তৈরিতে মন দিয়েছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয় কাজ। পরে সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রোজেনেকা প্রতিষেধক তৈরির কাজে হাত লাগায়। ওষুধের নাম -ChAdOx। জানা গিয়েছে, nCoV-19 ভাইরাসের ডিএনএ নকশার মাধ্যমে তাকে নিষ্ক্রিয় করে তৈরি হয়েছে ওষুধ। যা কিনা মানব শরীরের B এবং T কোষ (Cell) কে উদ্দীপ্ত করে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করে।
[আরও পড়ুন: করোনা নির্ণয়ের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তার কিট বানিয়ে ফেলল ভারত, নাম ‘করোশিওর’]
চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে ধাপে ধাপে মানবশরীরে তা পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। প্রথম ধাপে সবচেয়ে কম জনকে ChAdOx সমৃদ্ধ ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন এক মহিলা বিজ্ঞানী – এলিসা গ্রানাটো। তিনি নিজেই এগিয়ে এসেছিলেন টিকা নিতে। দ্বিতীয় ধাপে আরও বেশি এবং তৃতীয় ধাপে আরও বেশি মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়। আপাতত তৃতীয় ধাপ চলছে। যেখানে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরেও তা প্রয়োগ করা হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে থমকে শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ, উদ্বেগে রাষ্ট্রসংঘ]
তবে এতদিন ধরে এই পরীক্ষা (Human Trial) চললেও, তার ফলাফল সম্পর্কে কোনও আঁচই পাওয়া যায়নি এতদিন। কিন্তু এখন কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। বিশ্ববাসী এ সম্পর্কে জানতে উদগ্রীব। সোমবার ChAdOx-এর ফলাফল নিয়ে বিশ্ববাসীকে জানাবেন বিজ্ঞানীরা। সূত্রের খবর, ‘ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হবে গবেষণার ফলাফল। জার্নালের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “২০ জুলাই, সোমবারের পত্রিকায় এই সংক্রান্ত প্রতিবেদনটির পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজও প্রায় শেষ।” বিজ্ঞানীদের দাবি, মানবপরীক্ষার ফলাফল অনেকটাই তাঁদের প্রত্যাশামতো। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও খানিকটা সময়ের অপেক্ষা।