সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ব্লু হোয়েল’-এর মতো মারণ খেলা নয়। নিতান্তই সৈনিকের বীরত্বে ভরপুর। কিন্তু সেই ভিডিও গেমই কেড়ে নিল ১৬ বছরের এক তরতাজা প্রাণ। ঘটনা মধ্যপ্রদেশের নিমাচ এলাকার।
জনপ্রিয়তার নিরিখে এই মুহূর্তে অন্য সব ভিডিও গেমকে পিছনে ফেলেছে PUBG। কিশোর থেকে মধ্যবয়সি, সকলেই মজে এর নেশায়। এ এমনই একটি খেলা যে, বিয়ে করতে বসে হৃদয় বন্ধনের অঙ্গীকার ভুলে বরকে PUBG-তে বুঁদ হয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এ খেলা ঘিরে ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়ার উদাহরণও রয়েছে অসংখ্য। তবে সব ঘটনাকে ছাপিয়ে কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের এক সদস্যের বিয়ের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে মধ্যপ্রদেশের নিমাচ এলাকায় গিয়েছিল ১৬ বছরের ফারকান কুরেশি। ফারকান রাজস্থানের নাসিরবাদ শহরের বাসিন্দা। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নাওয়া-খাওয়া ভুলে টানা ছ’ঘণ্টা PUBG-তে মগ্ন ছিল ফারকান। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ফারকানকে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন তার পালর্স পাওয়া যাচ্ছিল না। কার্ডিওলজিস্ট অশোক জৈনের মতে, অনেক সময় খেলার উত্তেজনা চূড়ান্ত সীমায় পৌঁছলে হার্ট তার ধাক্কা সামলাতে পারে না। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কিন্তু কী এমন উত্তেজনার খেলা এই PUBG? যার ধাক্কায় মাত্র ১৬ বছরের কিশোরের হার্টও অকালে থেমে গেল।
[আরও পড়ুন: মোদির শপথগ্রহণের দিনই বিজেপির ওয়েবসাইটে গোমাংসের রেসিপি!]
নিয়মিত PUBG-তে যাঁরা মশগুল থাকেন, তেমনই একজনের কথায়, উত্তেজনায় ভরপুর এই মোবাইল গেম। মোবাইলের স্ক্রিনে শত্রুপক্ষের অসংখ্য সৈন্যকে কাবু করার দায়িত্ব থাকে মোবাইল হাতে খেলোয়াড়ের। সঙ্গে দেওয়া হয় ভার্চুয়াল অস্ত্রও। প্রয়োজন মতো অস্ত্র ব্যবহার করে মোবাইলের স্ক্রিনে শত্রু নিধন করতে হয়। যত সময় ধরে খেলা চলতে থাকে ততই উত্তেজনা বাড়ে। রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনার মধ্যে শত্রুসেনার মোকাবিলা করার চাপ নেহাত কম নয়। আর এই চাপই সহ্য করতে পারেনি ফারকান।
PUBG নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে অভিযোগের অন্ত নেই। কারণ এই খেলা পড়ুয়াদের পড়াশোনা থেকে মন কেড়েছে। হয় মোবাইল হাতে PUBG-তে মশগুল, নাহলে পড়ার বইয়ের সামনে বসেও মন পড়ে রয়েছে সেখানেই। এর আগে তেলেঙ্গানার বছর কুড়ির তরুণ দীর্ঘ ৪৫ দিন ধরে টানা PUBG-তে ঘাড় গুঁজে বসেছিলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মোবাইলে লাগাতার ওই ভিডিও গেম খেলতে থাকায় ঘাড়ের কাছের সমস্ত নার্ভ নষ্ট হয়ে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। আর তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ওই তরুণ।