গৌতম ব্রহ্ম: যে সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সর্বক্ষণ ডাক্তার থাকেন সেখানে সাপের বিষের প্রতিষেধক পাওয়া যায়। বইয়ের পাতার মাঝ বরাবর জ্বলজ্বল করছে লেখাগুলি। একটু উপরে গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করার জন্য ঠিকানা।
সর্পদংশন ও বিষ প্রশমণের খুঁটিনাটি স্কুল পড়ুয়াদের জানাতে অভিনব উদ্যোগ নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। অষ্টম শ্রেণির শারীরশিক্ষার পাঠ্যবইয়ের ৩৬ পাতায় অন্তর্ভুক্ত করল বিষ পর্ব। বইয়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, সাপ আমাদের শত্রু নয়, বরং বন্ধু। একটি সাপ বছরে গড়ে সাড়ে তিনশো ইঁদুর খেতে পারে। কীটপতঙ্গ, মশার লার্ভা প্রভৃতি মানুষের জন্য ক্ষতিকারক প্রাণীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাপ মস্ত সহায়। সাপের বিষ থেকে সাপে কাটার চিকিৎসার ইঞ্জেকশন ‘অ্যান্টি স্নেক ভেনাম’ বা এভিএস তৈরি হয়। উপরন্তু সাপের বিষ থেকে ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস প্রভৃতি রোগের ওষুধ তৈরির চেষ্টা চলছে।
[আরও পড়ুন: আর ফ্রি নয়, কল করতে এবার বাড়তি টাকা গুনতে হবে জিও গ্রাহকদের]
পর্ষদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাপে কাটার চিকিৎসায় ব্রতী চিকিৎসকরা। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডা. দয়ালবন্ধু মজুমদারের মতে, “এটি খুব ভাল উদ্যোগ। অষ্টম শ্রেণির বইয়ে সাপের কামড়ের বিষয়টি আগেও ছিল। কিন্তু শিক্ষকদের মধ্যে পড়ানোর আগ্রহ সেভাবে দেখা যায়নি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর একটি প্রশিক্ষণের ক্লাসে ৩৫ জন শিক্ষক ছিলেন। কেউই ঠিক করে বলতে পারেননি, তাঁর স্কুলের কাছের কোন হাসপাতালে এভিএস পাওয়া যায়। নতুন তথ্য ও হেল্পলাইন নম্বরটি বিপদকালে খুব কাজে দেবে।”
খুশি আর জি কর হাসপাতালের আঞ্চলিক বিষ কেন্দ্রের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোমনাথ দাস। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সাপের কামড় বা অন্যান্য বিষ চিকিৎসার বিষয় নিয়ে স্কুল স্তর থেকেই ছেলেমেয়েদের সচেতন করা উচিত। বাড়ির ছোটরা জানলে বড়রাও সচেতন হবে। কোন বিষে কোন ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে বা কেমন হবে প্রাথমিক চিকিৎসা, কীভাবে রোগীকে হাসপাতালে আনতে হবে? বমি করানো হবে কি না, শ্বাসযন্ত্র অবরুদ্ধ হলে কী করণীয়, হরেক গাইডলাইন রয়েছে ‘পয়জন অ্যাপ’-এ। বইয়ে দেওয়া হয়েছে ওয়েবসাইটের ঠিকানা- www.poisonwb.in। বিষ চিকিৎসা কেন্দ্রের হেল্পলাইন নম্বরও ১৮০০৩৪৫০০৩৩।