দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সব তীর্থ বারবার গঙ্গা সাগর একবার। এই ধারণা এখন পুরনো হয়েছে। এখন ইচ্ছা করলেই চলে যাওয়া যায় গঙ্গাসাগরে। ডুব দিয়ে আসা যায় পবিত্র সাগর সঙ্গমে তীরে। আর কপিল মুণির আশ্রমের টানে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে আসেন স্নান সারতে। কিন্তু বহু মানুষ বিভিন্ন কারণে উপস্থিত হতে পারেন না সাগর সঙ্গমে। যাঁরা আসতে পারেন না তাঁদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে এবার উদ্যোগী জেলা প্রশাসন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাগর সঙ্গমে আসতে না পারা সেই সমস্ত তীর্থযাত্রীদের কাছে পাঠানো হবে সাগরের জল। যে জল ব্যবহার করে তাঁরা বাড়িতে বসেই স্নান পর্ব সেরে নিতে পারবেন। কীভাবে এই জল পুণ্যার্থীদের বাড়িতে পাঠানো হবে ইতিমধ্যেই তার রূপরেখা তৈরি করে ফেলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন সেই সমস্ত জল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে আবেদনকারী মানুষদের কাছে। তবে এই জল কতজন মানুষের কাছে পৌঁছানো যাবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারিনি প্রশাসনের আধিকারিকরা। এ বিষয়ে জেলা শাসক পি উলগানাথান বলেন, “যতজন আবেদন করবেন, আমরা চেষ্টা করব সকলের কাছে এই জল পৌঁছে দিতে।”
এদিন আলিপুরে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা জানান, একটি পিতলের কমন্ডলুতে করে জল পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বাড়িতে সেই জল পৌঁছে দেবেন কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি কুরিয়ার সার্ভিস সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে প্রশাসন। সুদৃশ্য ব্যাগে পিতলের ওই বিশেষ পাত্রের মধ্যে জল এবং লাল সিঁদুর দিয়ে তা পাঠানো হবে পুণ্যার্থীদের বাড়িতেই। এর জন্য কোন অর্থ খরচ করতে হবে না। তবে যে কুরিয়ার সার্ভিস এই জল পৌঁছে দেবে তাদেরকে অর্থ দিতে হবে। কুরিয়ার সার্ভিসকে কত অর্থ দিতে হবে, তা এখনও ঠিক করে উঠতে পারেননি প্রশাসনের আধিকারিকরা। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই জলের জন্য আবেদন আসবে, এমনটাই আশা প্রশাসনের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। যে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করলেই মিলবে গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল। যে জল দীর্ঘদিন রেখে ব্যবহার করা যাবে। তবে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটটি পুরোদমে চালু হতে আরও কয়েকটি দিন সময় লাগবে। তবে এই গঙ্গাজল কোনও পুণ্যার্থীরা পাবেন না। তাঁদের কাউকেই দেওয়া হবে না। মূলত যেসব মানুষ বাড়িতে বসে ওয়েবসাইটে আবেদন করবেন শুধু তাঁরাই পাবেন। এই অভিনব ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ই-স্নান। মেলা চলাকালীন আবেদন করলেই মিলবে এই জল। ভারতের নানা মন্দিরে এই ব্যবস্থা আগেই চালু হলেও গঙ্গাসাগরে এই প্রথম এই পরিষেবা শুরু হল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.