Advertisement
Advertisement

Breaking News

Fullara Mela

লাঠিখেলা-কুস্তি থেকে পুতুলনাচ-যাত্রা, আজও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে বীরভূমের এই মেলা

১৬ দিন ধরে চলবে এই মিলন মেলা।

Fullara Mela still attracts tourists | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:February 26, 2024 9:26 pm
  • Updated:February 26, 2024 9:26 pm

কামদেব গোস্বামী, বোলপুর: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও দেবী ফুল্লরার সঙ্গেই নিবিড়ভাবে জড়িয়ে বীরভূমের লাভপুর। গরুর গাড়ি, পালকি না দেখা গেলেও সেই হাঁসুলিবাঁক এখনও বর্তমান। বয়ে যায় তেমন করেই কোপাই নদী। একসময়ের জমিদারশাসিত লাভপুর এখন পঞ্চায়েতের অধীনে। সতীপীঠ ফুল্লরা আর কথা সাহিত্যিক তারাশঙ্করের ভিটেমাটি ছুঁতে ধাত্রী দেবতায় ভিড় করেন দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক।

স্মৃতিবিজড়িত আমোদপুর থেকে কাটোয়া পর্যন্ত ছোট লাইনের ট্রেন এখন ইতিহাস। এখন ব্রডগেজ রেললাইন। যদিও ট্রেন চলে মাত্র দুটি। অনামি সেই ‘গঞ্জ’ এখনও শহর হিসেবে তকমা না পেলেও কী নেই লাভপুরে। স্কুল-কলেজ থেকে হাসপাতাল, ঝাঁ চকচকে রাস্তাঘাট, বাসস্ট্যান্ড, অভূতপূর্ব পরিবর্তন। তারাশঙ্করের পরিবার ছিল ধর্মপরায়ণ ও আদর্শনিষ্ঠ। পরিবারের তারা মায়ের পুজো শুরু হওয়ার পরেই জন্ম তাঁর। তাই নাম রাখা হয় তারাশঙ্কর। আর মাঘী পূর্ণিমার শতাব্দী প্রাচীন ফুল্লরা মেলা মানেই হাজার হাজার ভক্তের ভিড়। চিড়ে ও মুড়ির ভোগই ৫১ সতীপীঠের অন‌্যতম লাভপুরের মা ফুল্লরা অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ১২৫তম ফুল্লরা মেলার উদ্বোধন হয়েছে শনিবার। এখন ১৬ দিন ধরে চলে মিলন মেলা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘শাহজাহানের গ্রেপ্তারিতে বাধা নেই পুলিশের’, অভিষেকের দাবি উড়িয়ে সাফ জানাল হাই কোর্ট]

গ্রামীণ গৃহস্থের মেলা সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এসেছে। বদলে গিয়েছে এখন মেলার রূপও। বৈদ্যুতিক বাতি, মাইক, ব্যান্ড সংগীত মেলার পুরোনো ঐতিহ্যকে অনেকটাই পালটে দিয়েছে। মাটির হাড়ি-কলসি, শীল-নোড়া, পাথরবাটি আর নেই। হারিয়ে গিয়েছে গরুর গাড়ি থেকে সংগ্রহ করা গাবরের ডাকও। মাঠজুড়ে গরুর গাড়ির পরিবর্তে এখন বাইক, চার চাকাগাড়ি, টোটো-অটোর ভিড়। হস্ত ও কুটির শিল্পজাত দ্রব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাঁশ-বেতের তৈরি ডালা, কুলা, হাতপাখা, শীতল পাটি, নকশিকাঁথা, নারকেলকোরা, মাছ ধরার কোঁচ, পলো, ঝাঁকিজাল ইত্যাদি। কামারের তৈরি লোহার জিনিসের মধ্যে দা, কাস্তে, ছুরি, খুন্তি, কোদাল, শাবল, বঁটি। কাঠের তৈরি সামগ্রী পিঁড়ি, জলচৌকি, চেয়ার, টেবিল, লাঙল-জোয়ালও মেলায় গেলেই দেখতে পাওয়া যায়। বর্ণাঢ্য সাজ, চারদিকে কোলাহল, বিচিত্র আওয়াজে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত। সঙ্গে ঘর-গেরস্থালির নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী। রসনালোভন খাবারের বিভিন্ন উপকরণ ছাড়াও দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য লাঠিখেলা, কুস্তি, পুতুলনাচ, যাত্রা, কবিগান, বাউল-ফকিরের গান সুরে যেন উৎসবের আমেজ।

Advertisement

লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘অতীতের স্মৃতির পথ বেয়ে আধুনিকতা এসেছে। তবে শতবর্ষ প্রাচীন এই মেলার মূলভাব অক্ষুন্নই থেকে গিয়েছে। উন্নয়ন ও শান্তির পথেই মিলনক্ষেত্র লোকায়ত মেলায় পরিণত হয়েছে।’’ লাভপুরের স্থানীয় মানুষ উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেলার মূলভাব অক্ষুন্নই রয়েছে। হোম যজ্ঞ থেকে মাতৃ আরাধনার নানা পর্ব ছাড়াও রয়েছে লোকসংস্কৃতিরও অনুষ্ঠান।’’ এদিকে পার্থপদীপ সিংহ বলেন, ‘‘অন্যান্য বছরের মত আউল বাউল পীর দরবেশের গানে মুখর হয়ে উঠেছে প্রসিদ্ধ ফুল্লরার মন্দির প্রাঙ্গণ।’’

[আরও পড়ুন: কার নির্দেশে সন্দেশখালির আন্দোলন? ‘ম্যাডাম’-এর নাম বলে রহস্য বাড়ালেন মহিলা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ