৮ আশ্বিন  ১৪৩০  মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

শীতল আমেজে গ্রীষ্মের ছুটি কাটুক পাহাড়ি গ্রামে, রইল ঠিকানা

Published by: Sucheta Sengupta |    Posted: May 3, 2019 9:43 pm|    Updated: July 20, 2019 5:23 pm

Spend your summer vacation at the unknown villeges of North Bengal

উঠল বাই তো পাহাড় যাই। গরমে বাঙালির পাহাড় ভ্রমণে ত্রিফলার সন্ধান দিচ্ছেন মানসী দাস মণ্ডল

লাতপাঞ্চার
শিলিগুড়ি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ৪৫০০ ফুট উপরে লাতপাঞ্চার ভ্রমণপিপাসুদের জন্য অতি যত্নে রাখা এক লুকানো সম্পদ। একে স্বর্গ করে তুলতে এখানকার রকমারি গাছ ও প্রাণীর রয়েছে যথেষ্ট অবদান। নিঃসন্দেহে এটি একটি নিরিবিলি জায়গা। চেনা অচেনা বহু পর্ণমোচী গাছের দেখা মিলবে এখানে। তার মধ্যে সিঙ্কোনা গাছ রয়েছে। রয়েছে ট্রেকিংয়ের ব্যবস্থাও। যাঁরা উৎসাহী তাঁরা মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি থেকে রাজা রানি হিল পর্যন্ত ট্রেক করার সময় প্রচুর বিদেশি পাখি এবং অচেনা ফুলের সারি দেখতে পাবেন। আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে রয়েল বেঙ্গল টাইগার—এর পায়ের ছাপ দেখাও কিন্তু খুব আশ্চর্যের বিষয় নয়। রাজা—রানি হিলের চূড়ায় আছে একটি শিবমন্দির। সেখানে স্থানীয় মানুষদের ভিড়। লাতপাঞ্চার থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে আছে একটি সানরাইজ পয়েন্ট। এছাড়াও নামথিং পোখরি নামে একটি লেক। যেখানে বহু লুপ্তপ্রায় উভচর প্রাণীর বাস। একে পক্ষী রাজ্য বললেও অত্যুক্তি হয় না। প্রায় ২৪০ প্রজাতির পাখির বাস এখানে। এখানেও পাবেন হোম স্টে এবং হোটেল। তবে অলস পায়ে লাতপাঞ্চার—এর পাহাড়ি রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে ভিজে কাঠের গন্ধ আর পাখির কিচিরমিচির না শুনলে আপনি সত্যি মিস করবেন। এখানে সাল, পিক,পাইন, সিঙ্কোনার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলা নতুন কিছু নয়। তবে অক্টোবর থেকে এপ্রিলের মধ্যে এলেই পর্যটক হিসাবে লাভবান হবেন সবচেয়ে বেশি।

[আরও পড়ুন: জানেন, এ বাংলাতেই রয়েছে গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন? কম খরচে ঘুরে আসতেই পারেন]

tour

মংপং
মংপংকে ডুয়ার্সের দুয়ার বলা যেতে পারে। মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি হল মংপং—এর প্রধান আকর্ষণ। রকমারি উদ্ভিদ ও প্রাণীর সঙ্গে রয়েল বেঙ্গল টাইগারও পাবেন। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে নিরিবিলি, মংপং পিকনিক স্পট হিসেবেও উল্লেখযোগ্য। এখানে তিস্তা নদীর সুবিশাল পাড়কে মনে হতে পারে এক মায়াবী নগরী। তিস্তা নদীর ওপর করোনেশন ব্রিজ- মডার্ন ইন্ডিয়ান আর্কিটেকচারের এক জলজ্যান্ত উদাহরণ। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে রোদ-ঝলমল দিনে তিস্তা নদীর পান্না সবুজ জলের ব্যাকগ্রাউন্ডে হিমালয় পর্বতসারি- যেন কোনও সেলুলয়েডের ফ্রেম। মধ্য এশিয়া এবং লাদাখ থেকে আসা প্রচুর পরিযায়ী পাখির দেখা মিলবে। এখান থেকে চালিশা, মূর্তি, বিন্দু, ঝালং—এ সাইট সিন করতে পারেন। মংপং থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে ওয়াসো বাড়ি- যেখানে রয়েছে পুরনো টি এস্টেট। আর এর খুব কাছেই লিস নদী। স্বল্প পরিচিত এই জায়গাটি অপূর্ব সুন্দর। এছাড়া গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক, চাপড়ামারি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি, জলদাপাড়া ন্যাশনাল পার্ক দেখার সুযোগ তো রয়েছে। বেশ কিছু থাকার মতো হোম স্টে পাবেন এখানে। তবে মংপং গেলে তিস্তার তীরে সূর্যাস্তের ছবি ফ্রেমবন্দি করতে ভুলবেন না যেন।

mongpong

রায়মাটাং
আলিপুরদুয়ার থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে বক্সারের পশ্চিমে রায়মাটাং। কয়েক বছর আগেই রায়মাটাংকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সবুজ বনানী, আঁকাবাঁকা নদী, ঢেউ খেলানো বিস্তৃত চা বাগান, আর আকাশছোঁয়া পাহাড়কে একসঙ্গে বলা যায় রায়মাটাং—এর প্যাকেজ। ওয়াচ টাওয়ার থেকেও এর সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এখানে জঙ্গল সাফারি ছাড়াও আছে বিভিন্ন ধরনের অ্যাক্টিভিটি। আছে ইবিসবিল, রেড স্টার, ব্ল্যাক স্টোরক, ছাড়াও অজস্র পাখি- যেন এক পাখি রাজ্য। এছাড়াও দেখা মিলবে প্রচুর প্রজাপতির। শহুরে কোলাহল থেকে অনেকটা দূরে প্রকৃতির কোলে সময় কাটাতে চাইলে চলে আসুন রায়মাটাং। এখানে আসার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় শীতকাল। তবে খেয়াল রাখবেন ভারী বর্ষণের কারণে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর অবধি ফরেস্ট বন্ধ থাকে। তাই সেই সময়টা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। পাহাড়ই যাঁদের প্রথম এবং শেষ ভালবাসা, তাঁদের কানে কানে বলি, এবার এক্সপ্লোর করুন নতুন কিছু। হদিশ তো রইলই। শুধু চাই একটা পারফেক্ট প্ল্যানিং। শরীর ও মনকে ঠান্ডা করার মোক্ষম দাওয়াই এবার একসঙ্গে আপনার নাগালের মধ্যেই।

[আরও পড়ুন: পর্যটক টানতে নয়া উদ্যোগ, মিরিকে এবার ‘অ্যাকোরিয়াম হাউস’]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে