সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীত এসে গিয়েছে। মানে, হাতের কাছে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতোই এক ফালি ছুটি। বড়দিনের। বা, বছর শেষের। সেই ছুটির খবর গায়ে মেখে জেগে উঠছে অরণ্যেরা। সাপেরা চলে গিয়েছে শীতঘুমের হাতে নিজেদের সঁপে দিতে। বর্ষা বিদায় নিয়েছে, তাই ঝরে পড়া জলের বার্তা আর কাহিল করতে পারবে না। মাটির বুকেও জমে থাকবে না জল-কাদা! হালকা হিমেল হাওয়ায়, ঝরা পাতার বুকে জেগে থাকবে শুধুই পায়চারির আওয়াজ! এখন অরণ্য ভ্রমণ মানে তাই নদীর জল ছুঁয়ে, গাছের সবুজের নিচে সব ক্লান্তি ধুইয়ে দেওয়া!
সব অরণ্যেরই কিছু নিজস্ব শব্দ থাকে। কর্নাটকের ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল পার্ক কিন্তু সেই আওতায় পড়ে না। এতটাই নিরিবিলির চাদরে মুড়ে থাকে এই অরণ্য যে এরই নাম হয়ে গিয়েছে সাইলেন্ট ভ্যালি। নীরবতার নিজস্ব প্রকৃতি উদযাপন!
কিন্তু বহু ক্রোশ দূর থেকে, বহু দেশ ঘুরে এই সাইলেন্ট ভ্যালিতে আসবেন কেন? কী এমন পাওয়া যাবে এখানে যা অন্য কোথাও নেই?
সাইলেন্ট ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের মজাটা এর উদার, বিস্তৃত পরিধিতে। এত ঘন অরণ্য ভারতের খুব অংশেই চোখে পড়ে। মাইলের পর মাইল শুধুই গাছের সারি, মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা কুন্তী নদীর জলরেখা। মাঝে নিবিড় পশুজীবন। লেজঝোলা ম্যাকাওয়ের চপলতা, হাতির পালের গাম্ভীর্য, লেপার্ডের ভারিক্কি চাহনি, নীলগাইয়ের দলভারি রাজনীতি, হরিণের অকারণ ছোটাছুটি- মন ভাল করে দেওয়ার জন্য আর কী চাই!
এবং, এই অরণ্য ভ্রমণের খরচও এমন কিছু নয়! স্টেশন থেকে জঙ্গলে আসতে গাড়িভাড়া ৬৫০, গাইডের জন্য বরাদ্দ ১৫০, জঙ্গলে ঢোকার টিকিট ৫০ টাকা, ক্যামেরার জন্য ৫০ টাকা! এবার ইচ্ছে হলে জঙ্গলে গাড়ি নিয়ে ঘুরুন, তার ভাড়া ২৫০ টাকা! ইচ্ছে না হলে পা দুখানি ভরসা, সেক্ষেত্রে কোনও খরচও নেই! বরং, জঙ্গলকে অন্তরঙ্গ ভাবে চিনে নেওয়ার সুযোগ রইল ষোল আনা!
কী ভাবে যাবেন: ট্রেন ধরে এসে পৌঁছন পালাক্কর স্টেশনে। সেখান থেকতে গাড়িতে মান্নারকর আর মুক্কালি হয়ে সাইলেন্ট ভ্যালি।
কোথায় থাকবেন: বনবাংলোর আশা না করে মুক্কালিতে থাকাটাই উচিত হবে! কেন না, বনবাংলোর বুকিং সব সময়ে পাবেন না। উল্টো দিকে, মুক্কালিতে হোটেলের প্রাচুর্য। ফলে থাকা আর খাওয়া- দুই সস্তায় হয়ে যাবে!