অরিজিৎ সাহা: বিজ্ঞাপনের ধরন অজস্র, অগুনতি আইডিয়া। আর বিজ্ঞাপন জগতের সেই উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাতেই এবার ঢুকে পড়লেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঢুকলেন তাঁর সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য। আরও স্পষ্ট করে বললে, তাঁর বিখ্যাত নীল-সাদা শাড়ির জন্য। চমকে গেলেন? কিন্তু অনলাইন শপিং সাইটে চোখ রাখলে, এই বাস্তবটাই দেখা যাচ্ছে। শাড়ির বিজ্ঞাপনে ভেসে উঠছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিহিত নীল-সাদা শাড়ি।
[গোলাপি রঙের হাঁসের ডিম! ব্যাপারটা কী?]
রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে একজন সাধারণ কর্মী থেকে আজ রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেরিয়ার গ্রাফটা শূন্য থেকে প্রায় আকাশচুম্বী হয়ে ওঠার পথে অজস্র বাঁক থাকলেও, কয়েকটি ব্যাপার একেবারেই ধ্রুবক করে রেখেছিলেন তিনি। নিজের সাদামাটা জীবনযাপন। হাওয়াই চটি আর সাদা সুতির শাড়ি ছাড়া কখনও তাঁকে অন্য কোনও পোশাকে দেখেননি কেউ। সে বড় অনুষ্ঠানই হোক বা ঘনিষ্ঠ মহলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোশাকআশাক প্রায় একটা ব্র্যান্ড হয়ে গিয়েছে। তাঁর অতি ঘনিষ্ঠরাও বলেন, ভাল এবং দামী শাড়ি বা কোনও পোশাক উপহার পেলেও, তা সচরাচর পরেন না তিনি। যত্ন করে আলমারিতে তুলে রাখেন। তাঁর এই ‘সিম্পল লিভিং, হাই থিঙ্কিং’ নীতি নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল কম কটাক্ষ, সমালোচনা করেনি। ‘সততার প্রতীক’ বলে তীব্র কটাক্ষও করা হয়েছে। ইদানিং তাঁর প্রিয় হয়েছে, সাদা জমির শাড়িতে নীল ছাড়াও অন্যান্য রঙের পাড়। তাই চিরাচরিত সাদা-নীলের বদলে সাদা-কমলা, সাদা-তুঁতে, সাদা-সবুজ শাড়িতেও তাঁকে দেখা যায়। আর এভাবেই তিনি ঢুকে পড়েছেন বিজ্ঞাপনী জগতে।
[বিহারের সরকারি চাকরির পরীক্ষায় ‘টপার’ সানি লিওনে!]
কিন্তু জনপ্রিয় অনলাইন শপিং সাইট ফ্লিপকার্টে এ কী দেখা গেল! রকমারি শাড়ির সম্ভারের মাঝে ঢুকে পড়েছেন নীল-সাদা শাড়ি পরা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও। তাঁর ছবির নিচে লেখা, মডেল লিডারশিপ শাড়ি। দাম দেওয়া আছে মাত্র ৩৫৯ টাকা। অর্থাৎ একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাদামাটা ইমেজ এবং নিজেদের পণ্য বিক্রিতে মজেছে ওই জনপ্রিয় শপিং সাইটটি। এসব দেখে যাঁরা ঘনঘন অনলাইনে কেনাকাটা করেন, তাঁরা রীতিমতো তাজ্জব বনে গিয়েছেন। অনেকেই বলছেন, সাদামাটা সুতির শাড়ি বিক্রি করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তিত্বকে কেন টানা হল? কিন্তু বিজ্ঞাপনী নির্মাতারা অনেক বেশি চিন্তাশীল। তাঁরা ঠিক বুঝেছেন, কোন আবেগ কখন উসকে দিলে বাণিজ্যে জোয়ার আসবে। তাই সুতির শাড়ি বলতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করেছেন তাঁরা। কিন্তু এই সুযোগে কি বিক্রিবাটা বাড়ল? সেই বাণিজ্যিক হিসেব অবশ্য প্রকাশ্যে আনেনি ফ্লিপকার্ট কর্তৃপক্ষ।