সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে মুখে যতই বড় বড় কথা বলা হোক না কেন, বাস্তব ছবিটা খুব একটা সুখকর নয়। বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা বলেন, শুধুমাত্র উপযুক্ত পরিকাঠামো এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাবে প্রতিবছর মৃত্যু হয় অসংখ্য বন্যপ্রাণীর। একই অবস্থা হাতিদেরও। বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের তালিকায় নাম না থাকলেও হাতিদের অবস্থা যে এদেশে খুব একটা নিরাপদ নয় তা বোঝা যাবে একটি পরিসংখ্যানেই। পরিবেশ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে ৬৫৫টি হাতির অকালমৃত্যু হয়েছে। প্রতিমাসে গড়ে ৭টি হাতির মৃত্যু হয় শুধুমাত্র দুর্ঘটনা এবং রোগভোগে। যদিও, মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে এই মৃত্যুর সংখ্যাটি বাস্তবে আরও বেশি হতে পারে কারণ, সমীক্ষার সময় অনেক রাজ্যই সঠিক তথ্য দিতে পারেনি। অথচ, গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত একটিও হাতির চিকিৎসার জন্য আলাদা হাসপাতাল ছিল না। অবশেষে সেই অভাব মিটল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে।
দেশে এই প্রথম হাতিদের জন্য বিশেষ হাসপাতাল চালু হল মথুরায়। জানা গিয়েছে, মথুরার চুরমুরা এলাকার ফারহা গ্রামে এই বিশেষ হাসপাতালটি খোলা হয়েছে। অত্যাধুনিক এক্সরে মেশিন থেকে শুরু করে, লেজার ট্রিটমেন্ট, দন্ত চিকিৎসা, অাল্ট্রাসোনোগ্রাফি, অপারেশন থিয়েটার-সহ প্রায় সমস্তরকম উন্নত পরিষেবা পাওয়া যাবে হাসপাতালটিতে। ‘ওয়াইন্ড লাইফ এসওএস’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে হাসপাতালটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে অসুস্থ ও আহত হাতিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকছে, সেই সঙ্গে থাকছে বৃদ্ধ হাতিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও। উন্নত ও নিরাপদ প্রজনের সুব্যবস্থাও রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষানবিশ পশু চিকিৎসকদের হাতেকলমে কাজ শেখারও সুযোগ রয়েছে।
হাসপাতালটি তৈরি করার নেপথ্যে যে সংস্থাটি রয়েছে, সেই ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে হাতি সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছে। ২০১০ সালে এই সংস্থাটিই প্রথমবার ভারতে হস্তি-সংরক্ষণ কেন্দ্র তৈরি করে। সংস্থাটির দাবি, নতুন এই হাসপাতালটি তৈরি হওয়ার ফলে দেশে বিনা চিকিৎসায় হাতি মৃত্যুর হার কমবে। তাছাড়া উপযুক্ত পরিকাঠামো পাওয়ায় শিশু হাতির মৃত্যুর পরিমাণও কমবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.