শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ”পরশু রাতে পষ্ট চোখে দেখনু বিনা চশমাতে/পান্তভূতের জ্যান্ত ছানা করছে খেলা জোছ্নাতে।” সুকুমার রায়ের ‘ভূতুড়ে খেলা’য় ভূতের জ্যান্ত ছানাদের জ্যোৎস্নায় খেলা করতে দেখেছিলেন। কিন্তু এখনকার জ্যান্ত ভূতরা খেলা দেখায় অমাবস্যার রাতে। কালীপুজোয় তাই তাদের দাপাদাপি টের পাওয়া যায়। আর সেই ‘জ্যান্ত ভূত’দের দাপাদাপিতে ঘুম ছুটেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজবাড়ি সংলগ্ন ইন্দিরা গান্ধী কলোনির ভগৎ সিং পাড়ায়।
রবিবার ছিল ভূত চতুর্দশী। সোমবার কালীপুজো (Kali Puja)। ভূত চতুর্দশীর রাত থেকে ভূতেদের কাণ্ডকারখানায় কার্যত হাড়হিম অবস্থা বাসিন্দাদের। ঘোর অমাবস্যায় নাকি বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে ভূতের দল। যাঁরা জানেন, তাঁরা অবশ্য নিশ্চিন্ত। এই ভূত আসলে সে ভূত নয়। কালীপুজো এলেই জ্যান্ত ভূতের দেখা মেলে এ পাড়ায়।
মেছো, গেছো, পেত্নি, শাকচুন্নি, ব্রহ্মদত্যি, স্কন্ধকাটা – কে নেই এদের দলে? ভূতেরা সব স্কুলপড়ুয়া। কেউ অষ্টম, কেউ নবম, কেউ আবার দশম শ্রেণির ছাত্র। কালীপুজোয় জলপাইগুড়িবাসীকে ভূতের ভয় দেখাতে গত কয়েক বছর ধরে ভূত সাজার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে এলাকার ছোটরা। ছোট ছোট ভূতেদের একজায়গায় এনে ভয়মহল বানিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিল জলপাইগুড়ির ভগৎ সিং স্পোর্টিং ক্লাব। এবার ভয়মহলে যুক্ত হয়েছে পুরনো হাসপাতাল (Hopsital)। ভাঙা, পরিত্যক্ত সেই হাসপাতালের একপাশে থাকবে মর্গ আর একপাশে শ্মশান সেখানে ঘুরে বেড়াবে পেত্নি, শাকচুন্নি, স্কন্ধকাটার মতো ভূতের দল।
পেত্নির মতো ভয়ানক ভূত সাজার দায়িত্ব এবছর পড়েছে কুণাল দাসের কাঁধে। নবম শ্রেণির ছাত্র কুণাল। সে জানাচ্ছে, গত বছর ও পেত্নি সেজেছিল সে। পেত্নি দেখে দর্শনার্থীদের ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়! যা দেখে মজা হলেও হাসা ছিল বারণ। পুজো কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় সরকার জানান, ”ভয় দেখানোর পাশাপাশি আনন্দ দিতেই এই আয়োজন।”
গত দু’বছর বছর ধরে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছেন তাঁরা। তৃতীয় বর্ষে ভূতগুলোকে আরও বেশি ভয়ানক করে তুলতে মেকআপের উপরেই বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে বুক করে আনানো হয়েছে ভয়ানক সব মুখোশ। কালীপুজোর দিন অর্থাৎ সোমবার সন্ধ্যা থেকে খুলে গিয়েছে ভূতুড়ে হাসপাতালের দরজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.