সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাহাত্তরের সঙ্গে গাঁটছড়া ছত্রিশের। প্রেমের সম্পর্কে বাঁধা পড়ে বিয়ে নয়। বরং রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে, দেখে শুনে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন দু’জনে। আইনি বিয়ে আগেই হয়ে গিয়েছিল। গত সোমবার সামাজিক বিয়ে সারলেন বছর বাহাত্তরের শ্রীরামপুরের বড়বাগানের বাসিন্দা পেশায় কলেজ শিক্ষক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ। কারও সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে বয়স যে কোনও সমস্যাই নয়, তা প্রমাণ করলেন ওই বৃদ্ধ। সমাজের বাঁকা কথাকে হজম করে নিজেদের ইচ্ছাপূরণ হওয়ায় বেজায় খুশি নবদম্পতি।
বাইশ বছর রিষড়ার বিধানচন্দ্র কলেজে বাংলা পড়িয়েছেন। ২০০৮ সালে অবসর নেন। তারপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সমরেন্দ্রবাবু। বর্তমানে তিনি পূর্ব বর্ধমানের কালনায় বেসরকারি বিএড কলেজের অধ্যক্ষ। স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই। মেয়ে বিদেশে থাকেন। ফলে তিনি একেবারে একা। কয়েকমাস আগে তিনি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন। তারপর অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে মনে ধরে বছর ছত্রিশের রিষড়ার বাসিন্দা ইরা রায়ে। তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে আগেই। মা রয়েছেন। গত ২৭ জুলাই আইনি বিয়ে হয় তাঁদের। সোমবার সমরেন্দ্রবাবু নিজের ফ্ল্যাটে সামাজিক বিয়ে সেরে ফেলেন। কবি মীনা রায় সংস্কৃত মন্ত্র পড়ে তাঁদের বিয়ে দেন।
[আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কে মুখ ফেরাল সবাই, PPE পরে জ্বরের রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন তৃণমূল নেতা]
দ্বিতীয়বার কেন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন সমরেন্দ্রবাবু? তিনি বলেন, “বয়স বাড়ছে। তাই অনেক বেশি নির্ভরতা তৈরি হচ্ছে। হোম ডেলিভারির মাধ্যমে খাবার আনাতাম। লকডাউনের সময় খাবার পাইনি দু’দিন। এই সময় আমার কাছের মানুষ একজন পাশে থাকা খুব প্রয়োজন। তাই দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত।” সদ্য বিবাহিত ইরা রায়ের অবশ্য বিয়েতেই আপত্তি ছিল। তিনি কোনওদিন বিয়ে করবেন না বলেই স্থির করেছিলেন। কিন্তু পরিজনদের জোরাজুরিতে ধনুকভাঙা পণ ত্যাগ করেন। তারপর স্থির করেন সমরেন্দ্রবাবুর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধবেন। সেই অনুযায়ী বিয়েও সেরে ফেলেন দু’জনে। সাতপাকে বাঁধা পড়ে নবদম্পতি বেশ খুশি। তবে দ্বিতীয়বার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সমরেন্দ্রবাবু অনেকেরই বাঁকা কথা শুনতে হয়। তাই তাঁর একটাই আক্ষেপ সমাজ এখনও এগোয়নি। একজন স্বাধীন মানুষ কী করবেন আর কোনটা করবেন না, তা নিয়ে সকলে কেন এত মাতামাতি করে সে উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন তিনি।