Advertisement
Advertisement

লাল গ্রহ থেকে ভেসে এল সুরেলা ‘শোঁ শোঁ’ শব্দ, উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা

ক্লিক করে শুনে নিন মঙ্গল গ্রহ থেকে আসা সেই শব্দ।

Sounds from Mars after 42 yrs
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 9, 2018 9:31 am
  • Updated:December 9, 2018 9:34 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মঙ্গল থেকে সুরেলা ‘সারপ্রাইজ’ পেল নাসা। তাও আবার দীর্ঘ ৪২ বছর পর।

যন্ত্রের সঙ্গে কান লাগিয়ে বসুন। প্রথমটায় শুনলে মনে হবে খুব জোরে কোথাও বাতাস বইছে। আর সেই বাতাসে পত পত করে উড়ছে একটা পতাকা। হাওয়ার আওয়াজটা খুব চেনা চেনা। অবিকল সেই শোঁ শোঁ শব্দ। অথচ সেকেন্ড খানিক অপেক্ষা করুন! তখন মনে হবে, না, হাওয়া বোধ হয় নয়। বাইরের কোনও গ্রহ থেকে শব্দটা আসছে। লয়, গতি কিছুই মিলছে না হাওয়ার সঙ্গে। তাহলে শব্দটা কীসের?

Advertisement

[হীরে দিয়ে মোড়া আস্ত একটি বিমান! ব্যাপারটা কী?]

জানতে গবেষণা করা ছাড়া উপায় নেই। আর তা করতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েও ফেলেছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ফল জানা যাবে দিন কয়েকের মধ্যেই। তবে তার জন্য প্রয়োজন মঙ্গলের মাটি থেকে আরও কিছু তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে এসে পৌঁছনো। তবেই হবে লক্ষ্যপূরণ। তা তো বোঝা গেল। কিন্তু কোথায়, কবে, কীভাবে শব্দ কানে এল? গোড়ার কথাটি কী?

Advertisement

জানতে হলে পিছিয়ে যেতে হবে বেশ কয়েকটি দিন। আরও স্পষ্ট করে বললে, ২৬ নভেম্বর। ওইদিনই লাল গ্রহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল নাসার মহাকাশযান ইনসাইট। একদিন পর মঙ্গলপৃষ্ঠে পা রেখেছিল সে। ছ’মাস সময় ব্যয় করে এবং ৩ কোটি ১২ লক্ষ মাইল (৪৮২ মিলিয়ন কিলোমিটার) দূরত্ব অতিক্রম করার পর মঙ্গলে অবতরণ করেছিল নাসার এই মহাকাশযান। প্রসঙ্গত, ইনসাইট-এর আগে ২০১২ সালে শেষবার লালগ্রহের মাটিতে নেমেছিল নাসার কোনও মহাকাশযান। তার নাম ছিল ‘কিউরিওসিটি রোভার’।

কথা ছিল, মঙ্গলে অবতরণের পর তার মাটি এবং মাটির তলার নানা জিনিস নিয়ে টানা একবছর ধরে গবেষণা চালাবে ইনসাইট। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সে রিপোর্ট পাঠাবে পৃথিবীতে। কিন্তু সে কাজের বাইরে গিয়ে অন্য একটা কাজ করে ফেলল সে। যা দেখেশুনে নাসার বিজ্ঞানীরা অবশ্য আপ্লুত, শিহরিত। আসলে ইনসাইট মহাকাশযানের ভাইব্রেটরে ধরা পড়েছে ‘শোঁ শোঁ’ শব্দ। যার উৎস মঙ্গলের মাটি। নাসায় বসে মঙ্গলের এই সুরেলা শব্দটিই শুনতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই অভিযানে এই প্রথম এরকম শব্দ পেলেন গবেষকরা। ৪২ বছর আগে মঙ্গলে হাওয়ার শব্দ শুনতে পাওয়া গিয়েছিল। ১৯৭৬ সালে নাসার ভাইকিং ১ এবং ২ মহাকাশযান মঙ্গল থেকে এমন শব্দ রেকর্ড করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল। তারপর ফের এমন ঘটনা ঘটল ২০১৮ সালে। স্বাভাবিকভাবেই তাই বিজ্ঞানীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের সীমা নেই।

[বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম, মন্দির থেকে রোবটের মাধ্যমে অস্ত্রোপচার]

জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকেই ইনসাইট মহাকাশযানের সোলার প্যানেলে আন্দোলন ধরা পড়ে। এরপরই মহাকাশযানটির দু’টি ল্যান্ডারে ধরা পড়ে কম্পন। মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য হলেও ল্যান্ডার থেকে পাওয়া যায় জোরে হাওয়া বয়ে যাওয়ার মতো শোঁ শোঁ শব্দ। দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ মাইল গতিবেগে লালগ্রহ থেকে আসছে একেবারে হাওয়ার মতো শব্দ। নাসার গবেষক থমাস পাইকের মতে, “আমরা মিনিট পনেরো মতো তথ্য ইনসাইট থেকে আহরণ করেছি। প্রাথমিকভাবে হাওয়ার মতো মনে হলেও যথাযথ গবেষণা ছাড়া তা নির্দিষ্ট করে বলা অসম্ভব।” আরও এক বিজ্ঞানী ব্রুস বানের্ড অবশ্য লাল গ্রহ থেকে ভেসে আসা এই সুরেলা ‘সারপ্রাইজ’ পেয়ে আপ্লুত। তাঁর কথায়, ‘‘একে সারপ্রাইজ ছাড়া আর কী-ই বা বলা যায়! শব্দ শুনে মনে হচ্ছে, গ্রীষ্মের একটা বিকেলে কোথাও একটা বসে জিরোচ্ছি। আর কানের পাশ দিয়ে সুন্দর, ফুরফুরে হাওয়া শোঁ, শোঁ আওয়াজ করে বয়ে যাচ্ছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ