Advertisement
Advertisement

বাড়তি স্তনদুগ্ধ দান করে অন্য শিশুদের ত্রাতা মার্কিন মহিলা

নেটদুনিয়ায় ভাইরাল মায়ের কীর্তি৷

Uk's Woman donates her breast milk for many child!
Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 30, 2018 3:54 pm
  • Updated:August 30, 2018 3:54 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি যেন সাক্ষাৎ মা মেরি। বলা যেতে পারে মাদার টেরিজার অবতারও। তাঁর নিজের তিন শিশু সন্তান আছে। দুই কন্যা এবং এক পুত্র। কিন্তু এরপরও তিনি অগণিত শিশুর মা। আক্ষরিক অর্থেই স্তন্যদানকারী মা। তাঁর অসামান্য কীর্তি নিয়েই তিনি আজ মার্কিন মুলুকে আলোচনার কেন্দ্রে, খবরের শিরোনামে এবং নেটদুনিয়ায় ভাইরাল।

[‘ড্রিম গার্ল’-এর খোঁজে স্টেশনে স্টেশনে পোস্টার পাগলপারা প্রেমিকের]

তিনি হলেন তাবিটা ফ্রস্ট। বয়স ২৯। সোনালি চুলের দোহারা চেহারার এক স্বাস্থ্যবতী মা। দিনভর সংসারের কাজে ব্যস্ত থাকা, বাচ্চাদের দস্যিপনা সামলানো এক সাধারণ মা। কিন্তু তাঁর অসাধারণত্ব তো অন্যখানে। অসাধারণত্ব তাঁর ‘মাতৃদুগ্ধে’। বলা ভাল, অফুরন্ত মাতৃদুগ্ধে। অফুরন্ত মানে মাত্রাতিরিক্ত। যে মাতৃদুগ্ধ প্রাণ বাঁচাচ্ছে, তৃষ্ণা মেটাচ্ছে এবং পুষ্ট করছে নাম না জানা অসংখ্য বাচ্চাকে। না অর্থের বিনিময়ে নয়। তিনি দান করছেন তাঁর বুকের অতিরিক্ত দুধকে। আসলে সদ্য মা হয়েছেন তাবিটা ফ্রস্ট। মেয়ের বয়স আট মাস। সন্তান জন্ম দেওয়ার পরেই এই মার্কিন রমণী এক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাতে তাঁর বুকের দুধের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগের নাম ‘হাইপারল্যাকটেশন সিনড্রোম’। তাবিটার কথায়, নিজের সন্তানকে স্তন্যপান করানোর পরেও অনেক বেশি মাত্রায় অবশিষ্ট থাকে তাঁর বুকের দুধ। এই সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতিদিন তাঁর ব্রেস্ট মিল্ক তৈরি হয় প্রায় তিন লিটারেরও বেশি। প্রতি তিন ঘণ্টা অন্তর সেই দুধ পাম্প করে বার করার প্রয়োজন পড়ে তাবিটার। তাই অতিরিক্ত দুধ তিনি দান করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা খেয়ে বাঁচছে অনেক মাতৃহারা, অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা।

Advertisement

[ইনি নাকি বিশ্বের একমাত্র ‘জীবন্ত হেরিটেজ’, বয়স কত জানেন?]

এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৭০ লিটার বুকের দুধ দান করেছেন তাবিটা। আর এটাই নাকি এখন তাঁর অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় এক সাক্ষাৎকারে তাবিটা জানিয়েছেন, জন্মের পরেই মাকে হারিয়েছে অথবা মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত এমন অনেক শিশুই রয়েছে। বর্তমানে গোটা বিশ্ব জুড়েই চালু হয়েছে মাতৃদুগ্ধের নানা ব্যাংক। শিশুকে খাওয়ানোর পর অতিরিক্ত বুকের দুধ সেখানে বিক্রি করেন অনেক মহিলাই। তবে তাবিটা তাঁর বুকের দুধ বিক্রি করেন না, তিনি পুরোটাই দান করে দেন আরও অনেক শিশুদের জন্য। তাবিটা বলেছেন, ‘‘কোনও পরিস্থিতিতেই আমি এই কাজটা বন্ধ করি না। ছুটিতে গেলে বা শরীর খারাপ হলেও নিয়মিত আমি আমার বাড়তি ব্রেস্টমিল্ক পাম্প করে জমা রাখি। আমি চাই এই দুধে প্রাণ বাঁচুক আরও অনেক শিশুর।’’ তাছাড়া, অনেক মায়ের বুকে দুধ হয় না। আমার বুকের বাড়তি দুধ তাদের কাজে লাগবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মায়ের শারীরিক গঠন, জন্মের পরে শিশুর ওজন এবং তার ব্রেস্ট মিল্কের চাহিদার উপর বুকে দুধ তৈরি হওয়ার ব্যাপারটি অনেকটাই নির্ভর করে। তাবিটার ক্ষেত্রে এগুলির সবই বেশি। তার উপর তাঁর জিনের গঠনও দায়ী।

Advertisement

[কেমন হল পদব্রজে নর্মদা পরিক্রমা, যাত্রাশেষে স্মৃতির ঝাঁপি উপুর করলেন চন্দন বিশ্বাস]

গাইনোকোলজিস্টরা এই সিনড্রোমের পিছনে মূলত দু’টি কারণ ব্যাখ্যা করে থাকেন। প্রথমত, মায়ের শরীরে প্রোল্যাকটিন হরমোন নিঃসরণের মাত্রা অনেক বেড়ে গেলে চাহিদার বেশি বুকের দুধ তৈরি হওয়া শুরু করে দেয়। দ্বিতীয়ত, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সিনড্রোম ব্রেন টিউমারের পূর্ব ইঙ্গিত বহন করছে। তার ফলেও হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বাড়তে পারে। তবে হাইপারল্যাকটেশন সিনড্রোম-এর চিকিৎসা রয়েছে। এই রোগে আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞদের মত নিয়ে খুব দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে রোগমুক্তি সম্ভব। যদিও সমাজ এবং সংবাদমাধ্যম মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ঘটনাকে তাবিটার মাহাত্ম্য হিসাবেই দেখছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ