Advertisement
Advertisement

বুড়ো বয়সে…! দিলীপের আগেও বেশি বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন বঙ্গের বহু নেতা, রয়েছে মজার গল্পও

প্রেম মানে না বয়সের বেড়াজাল।

প্রেম মানে না কোনও বাধা, মানে না কোনও বিরোধ, মানে না কোনও বয়সের বেড়াজাল। সেকারণেই দিলীপ ঘোষের মতো দোর্দণ্ডপ্রতাপ, 'রাফ অ্যান্ড টাফ' নেতাও ষাটের পরে বিয়ে করার কথা ভাবতে পারেন। হাজার বাধা বিপত্তি উড়িয়ে, রাজনৈতিক কেরিয়ার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে প্রিয় মানুষটার সঙ্গে দিন কাটানোর কথা ভাবতে পারেন।

দিলীপ ঘোষ প্রথম নন, এর আগে বহু নেতা সমাজ এবং রাজনৈতিক মহলের তোয়াক্কা না করে বেশি বয়সে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসেছেন। তালিকাটা বেশ লম্বা।

দিলীপের মতোই এক বৈশাখে বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন কংগ্রেসের দাপুটে নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সী। সালটা ১৯৯৪। দীপা দাশমুন্সী ততদিনে প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। তবে তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার পড়তির দিকে। একপ্রকার গোপনে সেবার পয়লা বৈশাখ বিয়ে সারেন প্রিয়রঞ্জন-দীপা। প্রিয়র বয়স ততদিনে পঞ্চাশ পেরিয়েছে। সেটা ছিল দীপার দ্বিতীয় বিয়ে। শোনা যায়, গোপনে তাঁদের প্রেমপর্ব দীর্ঘদিন চলেছিল। বিয়েটাও হয়েছিল নাটকীয়ভাবে। মজার কথা হল, এই বিয়ের পর প্রিয় এবং দীপা দুজনের রাজনৈতিক জীবনেই গতি আসে। প্রিয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন, আর দীপা পরে হন সাংসদ।

প্রিয়রঞ্জনের সঙ্গী আরও এক দাপুটে কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রর বিয়েটাও কম নাটকীয় নয়। সোমেন মিত্র পঞ্চাশ পেরোনোর পর অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন 'ছোড়দা' হয়তো আর বিয়ে করবেন না। সোমেন চিরকুমার থেকে যাবেন, সেটা মোটামুটি কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সকলের মনে ধারণা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। সেই ধারণা আচমকা ভেঙে দিয়ে চমকপ্রদভাবে শিখা চৌধুরীকে বিয়ে করেন সোমেন। শিখার এটা দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। সোমেন ততদিনে কংগ্রেসি রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত। তবে শিখা পরে সোমেনের হাত ধরেই বিধায়ক হন।

বেশি বয়সে বিয়ের এই তালিকায় রয়েছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। বেশ কিছুদিন অভিনেত্রী নয়না দাসের সঙ্গে সম্পর্কে থাকার পরে তাঁকে বিয়ে করেন। এখন দুজনেই রাজনীতির ময়দানে। এঁরা সবাই জীবনসঙ্গী বাছেন পঞ্চাশের পার হয়ে। দুজনেই এখন সফল রাজনীতিবিদ। সুদীপ সাংসদ, নয়না বিধায়ক।

কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর দ্বিতীয় বিয়েটাও হয় ষাটের পরেই। প্রথম স্ত্রী অর্পিতা চৌধুরীর মৃত্যু হয় ২০১৯ সালে। সে বছরই নির্বাচনী হলফনামায় তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ের কথা স্বীকার করেন। অধীর হলফনামায় জানান, অতসী চট্টোপাধ্যায়কে বিয়ে করেছেন তিনি। অধীরের সঙ্গে অর্পিতার সম্পর্কের টানাপোড়েন, এবং অধীর-অতসীর সম্পর্ক নিয়ে বিস্তর লেখালেখি হয়েছে সেসময়। অর্পিতার সঙ্গে অধীরের যখন বিয়ে হল, তখন তাঁর বয়স ৬৩।

লক্ষ্মণ শেঠ। বঙ্গ রাজনীতির বর্ণময় চরিত্র। সিপিএম হয়ে বিজেপি ঘুরে লক্ষ্মণ এখন কংগ্রেসে। তবে এখানে সেটা চর্চার বিষয় নয়। চর্চার বিষয় হল লক্ষ্মণ শেঠের দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রী তমালিকা পণ্ডা শেঠের মৃত্যুর বেশ অনেক বছর পরে ফের বিয়ের পিড়িতে বসেন তিনি। সত্তর পেরোনোর পর মানসী দেকে বিয়ে করেন তিনি। তাঁর বিয়ে নিয়ে নাকি অসন্তুষ্ট ছিলেন লক্ষ্মণের প্রথম পক্ষের দুই সন্তান।

এদের বাইরে সর্বভারতীয় স্তরের বহু নেতা বেশি বয়সে বিয়ের নজির গড়েছেন। সেই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এনডি তিওয়ারি বিয়ে করেন ৮৮ বছর বয়সে। ৭৩ বছর বয়সে বিয়ে করেন এনটি রামা রাও। দিগ্বিজয় সিং বিয়ে করেন ৬৯ বছর বয়সে। মুলায়ম সিং যাদব বিয়ে করেন ৬৪ বছর বয়সে। সীতারাম ইয়েচুরি ৬৩ বছর বয়সে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।