Advertisement
Advertisement
Prescription

‘ট্রাকোমা’ মুক্ত ভারত, ‘মন কি বাত’-এ ঘোষণা মোদির, জানেন কী এই চক্ষুরোগ?

গুরুতর এই রোগ থেকে এখনও সতর্ক থাকতে হবে, রইল ছবি।

ছত্রাক বাহিত গুরুতর এক চক্ষুরোগের নাম - ট্রাকোমা। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগ থেকে অন্ধত্বে পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে। একটা সময় ভারতে ট্রাকোমা-আতঙ্ক ছিল। বিশেষত প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় পরিশুদ্ধ জলের অভাব, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ত। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ট্রাকোমার অভিশাপে ভুগতে হয়েছে অনেককেই।

ঠিক কী থেকে এই রোগ ছড়ায়? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মূলত অপরিচ্ছন্নতা থেকে এই ছত্রাক সংক্রমণ হয়ে থাকে। বিশেষত নোংরা জলে চোখ ধুলে এই রোগ হতে পারে। এছাড়া অনেক সময় মাছি দ্বারাও ট্রাকোমা সংক্রমণ মানবশরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার চোখে ট্রাকোমা হয়েছে? বেশ কয়েকটি উপসর্গ রয়েছে। প্রথমে চোখ ফুলে জল বেরতে থাকবে। চোখ জ্বালা হবে, চুলকানি টের পাবেন। তারপর ধীরে ধীরে আলো নিয়ে সমস্যা শুরু হবে। অর্থাৎ কোনও উজ্জ্বল আলো চোখে পড়লেই ব্যথা অনুভব করবেন। পরবর্তী ধাপে দৃষ্টি অস্বচ্ছ হতে থাকবে। এরপরও যদি চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না নেন, তাহলে চোখের জ্বালা তো বাড়বেই, দৃষ্টি হারাতে থাকবেন।

এই সংক্রমণ হলে প্রাথমিকভাবে ঘরোয়া চিকিৎসা হিসেবে পরিচ্ছন্নতায় জোর দিতে হবে। হাত ভালো করে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পরই চোখে হাত দেবেন। নজর রাখতে হবে যে জল ব্যবহার করছেন, তা কতটা পরিষ্কার। নইলে ট্রাকোমা সংক্রমণ আপনার থেকে আপনার পরিবারের সদস্যদেরও হতে পারে।

তবে চোখের এই সংক্রমণ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পৌঁছে গেলে তখন অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কোনও উপায় হাতে থাকে না প্রায়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অপারেশনের মাধ্যমে চোখের যে অংশের ট্রাকিয়ায় সংক্রমণ ঘটেছে, তা বাদ দিতে হয়। তারপর কর্নিয়া ও চোখের পাতারও বিশেষ চিকিৎসা দরকার। যাতে দৃষ্টি ফের স্বচ্ছ হয় এবং চোখে কোনও সমস্যা না থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ভারতের মতো বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশের জনস্বাস্থ্যে ট্রাকোমা বেশ সাধারণ একটা অসুখ। ঠিকমতো চিকিৎসা না হলে অন্ধত্ব ভবিতব্য। তাই তার নিরাময়ে উদ্যোগী হয়েছে WHO. সেইমতো ধাপে ধাপে গণচিকিৎসার মাধ্যমে তা নির্মূল করার পথে একটু একটু এগিয়েছে সমাজ।

রবিবার 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন, ''WHO জানিয়েছে, ভারত এখন ট্রাকোমা মুক্ত। এটি চোখের একটি রোগ।'' এই ঘোষণা দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। তবে কথাতেই আছে, 'সাবধানের মার নেই।' তাই ট্রাকোমা থেকে এখনও সতর্ক থাকতে হবে সকলকে।