Advertisement
Advertisement
গাছে দেবীর অধিষ্ঠান

বৃক্ষরূপেণ সংস্থিতা, গাছের চেহারায় দেবী দুর্গা পূজিত হবে ঝাড়গ্রামের এই মণ্ডপে

'নিধনে বোধন' থিমের মধ্যে দিয়ে রয়েছে গাছ বাঁচানোর বার্তা।

Durga Puja 2019: Jhargram club makes Devi idol like tree
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 29, 2019 4:19 pm
  • Updated:September 29, 2019 6:34 pm

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম:  প্রকৃতিই পূজনীয়। আর গাছ প্রকৃতির সবচেয়ে বড় সদস্য। তাই দেবী দুর্গাকে বৃক্ষরূপেই এবার পুজো করবেন ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঝাড়গ্রামের ডুমুরিয়াবাসী। সেইসঙ্গে বার্তা, বৃক্ষ তথা অরণ্য না থাকলে যে কোনও প্রাণীকুলের জীবন বিপন্ন হবে। অথচ সেই জীবনদায়ী গাছকেই প্রাণীজগতের শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ নির্বিচারে নিধন করছে। তা রুখে পরিবেশকে সুস্থ রাখতেই ডুমুরিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির এবারের থিম – ‘নিধনে বোধন’।

[ আরও পড়ুন: এক টুকরো রাজস্থান উঠে এল মুম্বইয়ের পুজো মণ্ডপ]

জামবনি ব্লকের ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া গ্রাম ডুমুরিয়া। এই গ্রামের পুজো মানেই বরাবর একটা আলাদা আকর্ষণ। এবার ডুমুরিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি তাদের বাষট্টিতম বর্ষেও সেই আকর্ষণ ধরে রেখেছে। বৃক্ষ বাঁচানোর পাশাপাশি তাঁরা প্লাস্টিক, পলিথিন, থার্মোকলকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলার বার্তা দিচ্ছে ‘নিধনে বোধন’ থিমের মধ্যে দিয়ে। সেইসঙ্গে অরণ্য সম্পদকে রক্ষার বার্তাও দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

থিমের সঙ্গে মানানসই করে দেবীমূর্তিটিও তৈরি হয়েছে। বৃক্ষরূপী দেবী প্রতিমাটিকে দেখলে মনে হবে, সেই বৃক্ষ থেকে বেরিয়ে আসছে সিংহ,হরিণ,গরু-সহ বিভিন্ন প্রাণী। যে কোনও প্রাণ বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন গাছ। অক্সিজেন না থাকলে কেউ যে বাঁচবে না। গত বছর হাতি সংরক্ষণের বার্তা দিয়ে ডুমুরিয়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির থিম ছিল ‘ইতি গজ’। ঝাড়গ্রাম জেলায় যা ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল। এবার তাদের পুজোমণ্ডপে দেবী বৃক্ষরূপেণ সংস্থিতা। রয়েছে দুটি প্রতিমা। একটি প্রতিমা অবিকল গাছের মতো। আর এই গাছই প্রাণীদের মূল আশ্রয়। গাছ ছাড়া প্রাণীকুলের অস্তিত্ব থাকবে না, তা বোঝাতেই এমন নির্মাণ বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

Advertisement

jgm-puja1
এর সঙ্গে জল সংরক্ষণ বোঝাতে মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হচ্ছে একটি পুকুর। যার একটি অংশ জলে ভরা এবং অপর অংশ শুকনো। জল সংরক্ষণের বিষয়টি বোঝানোর জন্য। পুজো উদ্যোক্তারা জানান, মণ্ডপের ভিতরে ঢুকলে মনে হবে, একটি পরিপূর্ণ অরণ্যঘেরা পরিবেশ। গাছ-গাছালি, রঙিন ফুলের বাগান-সহ সবমিলিয়ে এক নয়নাভিরাম পরিবেশ উপস্থাপিত হবে। ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া পলিথিন, থার্মোকলের প্লেটগুলিকে দিয়ে অত্যন্ত সুন্দর কারুকার্য করা হচ্ছে মণ্ডপের ভিতরে। প্লাস্টিক,পলিথিন ফেলে পরিবেশ নষ্ট না করে তাকে পুনরায় ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে কীভাবে সুন্দর করে তোলা যায়, তা দেখানো হচ্ছে এই পুজোয়। শিল্পী দেবাশিস বেরা এবং প্রদীপ নামাতা ‘নিধনে বোধন’ – এই থিম টিকে পরিপূর্ণ রূপ দিচ্ছেন।

[ আরও পড়ুন: সিলমোহর দলের, সল্টলেকের বি জে ব্লকের পুজোর উদ্বোধন করবেন অমিত শাহ]

সপ্তমী,অষ্টমী,নবমী – এই তিনদিন ধরে থাকবে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাউল,কলকাতার অর্কেস্ট্রা, ছোটদের নাচ-গানে ক’টা দিন মুখরিত হয়ে থাকবে মণ্ডপ। ডুমুরিয়া গ্রামের দুর্গাপুজো দেখতে পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন। পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সানি মাইতি, শেখর মাইতিরা বলছেন, “গাছ না থাকলে জীবজগতের কোনও প্রাণীই বাঁচতে পারবে না। তাই দেবী বৃক্ষ রূপে অধিষ্ঠান করবেন আমাদের মণ্ডপে। আমরা চেষ্টা করেছি সবটা ঠিকমতো গড়ে তুলতে। আশা করছি, দর্শকদের আমাদের এই থিম দেখে ভালো লাগবে।”

ছবি : প্রতীম মৈত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ