Advertisement
Advertisement

ঢাকে বোল ফুটিয়ে সংসারের হাল ধরেছেন মন্তেশ্বরের দশভুজারা

বাংলাজুড়ে ডাক পড়ছে সুমিত্রা, রাণুদের৷

Women Dhakis to play Durga Puja beats in Burdwan in 2019
Published by: Tanujit Das
  • Posted:October 3, 2019 3:53 pm
  • Updated:October 3, 2019 7:14 pm

রিণ্টু ব্রহ্ম, বর্ধমান: কারও স্বামী গত হয়েছেন। কারও স্বামী অসুস্থ। টাকার অভাবে বন্ধ হচ্ছিল চিকিৎসা। কারও স্বামী ছেড়ে চলে গিয়েছেন। মা হয়েও পারছিলেন না ছোট্ট সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে। হাজারো সমস্যা। দু’বেলা অন্ন কীভাবে সন্তানদের মুখে তুলে দেবেন সেই ভেবে আকূল ছিলেন। কিন্তু জীবনযুদ্ধে হার মানার পাত্রী নন ওঁরা। দুর্গারই যে আর এক রূপ তাঁরা। ‘ঢাকের কাঠি’ হাতে তুলেই স্বনির্ভর হয়েছেন মন্তেশ্বরের এমনই কয়েকজন অসহায় ‘দুর্গা’। মহিলা ঢাকির দল গড়ে নিজেরাই হয়েছেন ‘দশভুজা’। পুজোর আগে মন্তেশ্বরের বাঘাসন গ্রামের ‘অন্নপূর্ণাদের’ ঢাকের বোলেই মেতেছে পুজোর অঙ্গণ। তাঁরাই দিচ্ছেন লড়াইয়ের প্রেরণাও।

[ আরও পড়ুন: প্রথা ভেঙে মহিলাদের নেতৃত্বেই দেবী আরাধনা বাংলাদেশের বিখ্যাত পুজোয় ]

Advertisement

মাত্র ১১ মাস আগে তৈরি এই মহিলা ঢাকির দলই এখন ডাক পাচ্ছে বাংলাজুড়ে। নানা জেলায় গিয়ে ঢাকের আওয়াজে মন জয় করছেন তাঁরা। পারদর্শিতার জন্য কদরও রয়েছে। পারিশ্রমিকও পাচ্ছেন ভাল। ফলে আর পুরনো জীবনে ফিরে দেখতে হচ্ছে না তাঁদের। সুমিত্রা দাস, নবানী দাস, রাণু দাস, পূর্ণিমা দাসদের মতো আরও অনেকে কখনই ভাবেননি ঢাকের তালেই তাঁরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। সুমিত্রাদেবী জানান, এক বছর আগে তাঁর পরিবার তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। কীভাবে বেঁচে থাকবেন, তা ভাবতেই পারছিলেন না। আবার পূর্ণিমাদেবী জানান, তাঁর স্বামী গাছ থেকে পড়ে অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন। সংসার চালানোর টাকা ছিল না। স্বামীর মৃত্যু হওয়ায় সংসার চালাতে সমস্যায় পড়েছিলেন অন্য তিন মহিলা। আগে অনেকেই মাঠে কাজ করতেন। কিন্তু এখন সকলেই এক হয়েছেন স্বনির্ভর হতে। রিঙ্কু দাস, মায়া দাস, আশা দাস, আদুরি দাস-সহ প্রায় ১২ জন রয়েছেন এই দলে।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: দশমীর পরও প্রতিমা বিসর্জন হয় না উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু গ্রামে, কেন জানেন? ]

জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক ঢাকি সুদেব দাস এক বছর আগে ওই মহিলাদের ঢাক বাজানো শেখার পরামর্শ দেন। তারপরে সকলে কয়েকমাস ধরে অনুশীলন করে শিখে ফেলেন ঢাক বাজানো। প্রথমে স্থানীয় কয়েকটি অনুষ্ঠান করে মানুষের মন জয় করে ফেলেন অন্নপূর্ণারা। এখন চারিদিক থেকে ডাক আসতে শুরু হয়েছে। সুমিত্রাদেবী আরও বলেন, “প্রথম প্রথম লজ্জা লাগত। কিন্তু সকলেই আমাদের পাশে দাঁড়ায়। বাহবা দেন। অনেক আয়ও হচ্ছে। আর চিন্তা করতে হচ্ছে না।” তাঁদের আর্জি, সরকারিভাবে এখনও কোনও পরিচয়পত্র না থাকায় অনেক অসুবিধা হচ্ছে। সরকার যদি পাশে এসে দাঁড়ায়, তাহলে আর সমস্যা হবে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ