Advertisement
Advertisement
Kolkata News

মূর্তি নয়, ‘কন্যাসম’ সারমেয়কেই লক্ষ্মীরূপে পুজো করলেন তরুণী

মন্ত্রোচ্চারণ করে সারমেয়র পুজো করেন তিনি।

Kolkata News: Lady worship dog as goddess laxmi in Saltlake । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:October 31, 2020 11:32 am
  • Updated:October 31, 2020 12:28 pm

অভিরূপ দাস: এখানে লক্ষ্মী (Laxmi) চঞ্চলা। বসতেই চায় না সহজে। পাথরের মূর্তি তো নয় সে, লেজওয়ালা সারমেয়। উৎসব নয় পুজো করুন। ভিড় এড়াতে এবার এমনটাই মত চিকিৎসকদের। উৎসবের মরশুমে করোনার ছায়া ক্রমশ দীর্ঘতর। কোজাগরী কেনার বাজারে থিকথিকে ভিড়। গিজগিজে লোক। ঠাকুর কেনার ভিড়ে কে যাবে? সুকন্যা দে-র কোজাগরীর আসনে তাই ম্যাগি। তাঁর আদরের পোষ্য। “কন্যাসম। আমি তো ওকে নিজের মেয়েই মনে করি। লক্ষ্মীপুজোর আসনে তাই ওকেই পুজো করছি।” জানিয়েছেন সুকন্যা। 

সল্টলেকের বাসিন্দা সুকন্যা দে এওয়ান অ্যানিম্যাল শেল্টারের কর্ণধার। বছরভর এই শেল্টার ফেলে দেওয়া দুঃস্থ পোষ্যদের নিরাপদ আশ্রয়। অদ্ভুত এই পুজোর আয়োজন লবণহ্রদে। পূর্ব কলকাতার সল্টলেকে ছিমছাম বাড়িটায় আয়োজন সাড়া। নৈবেদ্য, পঞ্চশস্য, আম্রপল্লব সব উপকরণই মজুত। কোজাগরী পূর্ণিমার সন্ধ্যায় দু’হাত জড়ো করে লক্ষ্মীপুজোর মন্ত্রোচ্চারণ করলেন পরিবারের সকলে। লক্ষ্মীর আসন থেকে আওয়াজ এল, “ভৌ”।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পরই উত্তরবঙ্গ পাড়ি দিলেন রাজ্যপাল, সফর ঘিরে জল্পনা]

গেরস্থালির শ্রী যাতে অটুট থাকে সেকারণেই লক্ষ্মীর আরাধনায় মাতেন সকলে। এ পুজো মানেই ফল, ফুল, সবজির বিপুল আয়োজন। করোনা আবহে এ বছর সব বাজারেই ভাটা পড়েছে কেনাকাটায় । অধিকাংশ বাড়িতেই পুজো এবার নিয়ম রক্ষার। প্রতিদিনই প্রায় চার হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যে। ভিড় এড়াতে প্রতিমা কেনাকাটাতেও যেতে কিন্তু কিন্তু করছেন অনেকে। বাড়ির আদরের ম্যাগিকেই তাই লক্ষ্মী আসনে বসিয়েছেন সুকন্যা। সমস্ত নিয়মকানুন মেনেছেন। আলপনা-আমসরা-সুপুড়ি। ঠাকুরটাই শুধু কেনেননি। হাত নেড়ে ডেকেছেন লাফ দিয়ে সিংহাসনে উঠে পরেছে লক্ষ্মী। এমন পুজোয় পাড়া প্রতিবেশীরা চমকে যান। “কুকুরকে লক্ষ্মী রূপে?” কুকুর শব্দে ঘোর আপত্তি সুকন্যার। জানিয়েছেন, “ও আমার মেয়ে তাই আসনে ওকেই বসিয়েছি।” ৯ বছর ধরে ম্যাগিকে চেনেন তিনি। বছর নয়েক আগে বেঙ্গালুরুর রাস্তায় বেওয়ারিশ পশুদের আশ্রয়ে প্রথম দেখা। সেখান থেকেই ভালো লাগা। বগলদাবা করে বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন।

Advertisement

নিছক পাড়াপড়শি নয়, যারা পশুপাখি ভালোবাসেন তাঁদেরকে নিজের বাড়িতে ডেকেছিলেন সুকন্যা। তাঁর কথায়, অনেকে রাস্তায় কয়েকটা বিস্কুট খাইয়ে কুকুরপ্রেমী সাজতে চান। পথ কুকুরদের ভালোবাসলে তাদের নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হয়। ফি বছর অগুনতি কুকুর রাস্তায় গাড়ি চাপা পড়ে মারা যাচ্ছে। কীভাবে পথ কুকুরদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হয়। তাঁর সংস্থা সারা বছর এই কাজটাই করে।

তবে লক্ষ্মীর আসনে কুকুর (Dog)? যাঁরা তার এই কাজকে সমালোচনা করছেন তাঁদের স্বামী বিবেকানন্দ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সুকন্যা। বলেছেন, জীবের মধ্যেই ঈশ্বরের অধিষ্ঠান। ম্যাগির পুজো করে আমি স্রষ্টারই আরাধনা করেছি। একটা নয় একাধিক পোষ্য রয়েছে সুকন্যার বাড়িতে, শেল্টারে। পুজোর চারদিন তাঁদের জন্য নিয়মিত পাত পেড়ে খাওয়ার আয়োজনও হয়েছিল। উৎসবে মানে শুধু নিজে আনন্দ করা নয়, বরং আনন্দ ভাগ করে নেওয়া। সুকন্যা জানিয়েছেন, পুজোর চারদিন মুরগির মাংসের নানা পদ রান্না হয়েছিল শেল্টারের কুকুরদের জন্য। অবলা প্রাণীগুলো লেজ নেড়েই জানিয়েছে তারা অল্পেতেই খুশি। আর লক্ষ্মীপুজোয়? সুকন্যার কথায়, “আমার লক্ষ্মী নিজে ভোগ খেয়েছে। আমার ও পরিবারের মঙ্গল চেয়েছে। আমি বুঝতে পারি ওর চোখের ভাষা।”

[আরও পড়ুন: কালী ও জগদ্ধাত্রী পুজোয় ভিড়ের আশঙ্কা, আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে দায়ের হতে চলেছে মামলা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ