BREAKING NEWS

৫ আশ্বিন  ১৪৩০  শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

নববর্ষের পর লকডাউনের আওতায় অক্ষয় তৃতীয়াও, হালখাতার পুজো নিয়ে ধন্দে পুরোহিতরা

Published by: Soumya Mukherjee |    Posted: April 14, 2020 9:29 am|    Updated: April 14, 2020 9:32 am

Corona Shadow looms over Haal Khata on Bengali New year

ফাইল ফটো

অর্ণব আইচ: কালীঘাটের কেদার চট্টোপাধ্যায়ের মন ভাল নেই। গত বছরও বাংলা নববর্ষ (Bengali New Year) -এর দিনে জনা দশেক ভক্তের যজমানি করেছিলেন এই পূজারী ব্রাহ্মণ। কয়েকজনকে কালীঘাটের মন্দিরে নিয়ে গিয়ে দর্শন করাতে হয়েছিল। আবার অন্যদের হালখাতার পুজো সেরে নিয়ে ছিলেন দোকানেই।

কিন্তু, এবার করোনা মোকাবিলায় মানতে হবে লকডাউন। ফলে একদিকে বন্ধ কালীঘাট মন্দির। অন্যদিকে, দক্ষিণেশ্বর। গত বছর ভোরবেলা থেকে শহরের দুই প্রান্তে এই দুই কালী মন্দিরে শুরু হয়েছিল ভক্তদের লাইন। স্নান করে এসে ভক্তরা নতুন হালখাতা নিয়ে লাইন দিয়েছিলেন মন্দিরে। অনেকের হাতেই ছিল লক্ষ্মী ও গণেশের মূর্তি। বেলা বাড়তেই লক্ষ মানুষের লাইন। লাইন সামলাতে পুলিশের তৎপরতা। পুরোহিত ও সেবায়েতদের ব্যস্ততা ছিল চূড়ান্ত।

[আরও পড়ুন: দূরত্ব বজায় রেখেও হবে না হালখাতা? পয়লা বৈশাখের আগে মনখারাপ গৃহবন্দি বাঙালির ]

কিন্তু, এই বছর করোনা কেড়ে নিয়েছে এই দৃশ্য। বন্ধ মন্দিরে কারও ব্যস্ততা নেই। কালীঘাটের মন্দির কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বিদ্যুৎ হালদার জানান, লকডাউন ভেঙে মন্দির খুলে দেওয়া মানেই ফের মানুষের ভিড়। মানুষ যে পারস্পরিক দূরত্ব মানবেন, এমন কোনও কথা নেই। তাই তাঁরা মন্দির খুলছেন না। মন্দিরের এক সেবায়েত নরেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নববর্ষের বদলে অক্ষয় তৃতীয়ায় হালখাতার পুজো হবে, এমন কোনও সম্ভাবনাও এবার নেই। কারণ, এই মাসেই অক্ষয় তৃতীয়া। তাই অক্ষয় তৃতীয়ার দিনও লকডাউনের কারণে খুলবে না মন্দির।

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সেবায়েত প্রসূন হাজরা জানান, তাঁদের পুরোহিতরা বেতন পান। তার সঙ্গে ভক্তরা তাঁদের প্রণামীও দেন। কিন্তু, এই বছর প্রণামী পাওয়া সম্ভব হবে না পুরোহিতদের পক্ষে। যেহেতু অক্ষয় তৃতীয়ার দিনও মন্দির বন্ধ থাকছে। তাই বৈশাখ মাসে লকডাউন ওঠার পর একটা শুভ দিনে ব্যবসায়ীরা যাতে হালখাতার পুজো দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার জন্য পুরোহিতদের অনুরোধ করা হচ্ছে। কালীঘাটের পুরোহিতরা জানিয়েছেন, এবার নীলষষ্ঠীতেও কেউ মন্দিরে পুজো দিতে পারেননি। যে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের দিনে হালখাতার পুজো দিতে আসেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ভিড়ের জন্য মন্দিরের ভিতর যান না। মন্দিরের বাইরে কোনও জায়গায় পূজারীরা হালখাতার পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বহু ভক্ত মন্দিরের ভিতরে গিয়েও পুজো দেন। বছরের প্রথম দিনটায় গড়ে পাঁচশো থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত রোজগার হয় পুরোহিতদের। মন্দিরের কাছেই পেঁড়ার দোকান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

[আরও পড়ুন: গত বছর মহামারির ইঙ্গিত দিয়েছিল, সেই কিশোরই জানাল বিশ্ব থেকে কবে বিদায় নেবে করোনা]

তিনি জানান, নববর্ষের দিন পেঁড়ার দোকানগুলিতে অন্তত দশ হাজার টাকার পেঁড়া বিক্রি হয়। কিছু দোকানে অনেক বেশি টাকার পেঁড়া বা অন্য মিষ্টি বিক্রি হয়। এছাড়াও দোকানদাররা নির্ভর করে থাকেন জবাফুলের মালা, হালখাতা, নারকেল বিক্রির উপরও। পেঁড়ার দোকান বন্ধ হওয়ার ফলে বড়বাজারের ক্ষীর সরবরাহকারীদের ব্যবসা প্রায় বন্ধই। যে ব্যবসায়ীরা চিনি বা ক্ষীর জ্বাল দেওয়ার দেওয়ার জন্য কাঠ সরবরাহ করেন, তাঁরাও ক্ষতির মুখে। পুরোহিতরাও জানেন না যে, হালখাতার পুজো কবে হবে। তাই ভাবনায় রয়েছেন তাঁরাও।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে