সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামীর মঙ্গলকামনায় কত কি না করেন মহিলারা। হিন্দু নারীরা সেকথা ভেবেই নির্জলা উপবাস করে পালন করেন করবা চৌথ। বাঙালিরা যদিও এ ব্রত পালন করেন না। তবে উত্তর ভারতের দিকে এর প্রচলন যথেষ্টই। তাই এই বিশেষ দিনের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় অনেক আগে থেকেই। কিন্তু এত নিয়মকানুন মানার আগে জেনে নিন এই ব্রত সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
মূলত উত্তর ও উত্তর পশ্চিম ভারতে বসবাসকারী হিন্দু নারীরা করবা চৌথ পালন করেন। এখন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এই ব্রতের উৎপত্তি? রানি বীরবতী তাঁর পিতৃগৃহে এই ব্রত পালন করছিলেন। কিন্তু উপবাসরত বোনের কষ্ট হচ্ছে ভেবে তাঁর সাত দাদা অশ্বত্থ গাছে আয়না রেখে দিলেন। যাতে মনে হয়, আকাশে চাঁদ উঠেছে। আয়নাকে চাঁদ ভেবে ভুল করে উপবাস ভঙ্গ করেন বীরবতী। তারপরেই স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। শোকে মুহ্যমান হলেও বীরবতী আবার করবা চৌথ পালন করেন। তাঁর প্রার্থনায় তুষ্ট হয়ে যমরাজ ফিরিয়ে দেন স্বামীর প্রাণ। আবার কোনও লোককথা বলে, করবা নামের এক পতিব্রতা নারী ছিলেন। তিনি যমরাজের মুখোমুখি হয়ে কুমিরের গ্রাস থেকে উদ্ধার করেছিলেন স্বামীকে। তাঁর নামেই নাকি এই ব্রতের নামকরণ।
[আরও পড়ুন: জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি চান? লক্ষ্মীপুজোয় এই কাজগুলি ভুলেও করবেন না]
এবার জেনে নেওয়া যাক, করবা চৌথ নামের অর্থ কী? বিশিষ্টদের মতে, করবা শব্দের অর্থ কড়াই এবং চৌথ মানে চতুর্থী তিথি। এই দুটি শব্দের মিশেলে ব্রতের নামকরণ। নাম শুনেই বোঝা যায় এই ব্রতে কড়াইয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা ব্রত রাখেন তাঁরা নতুন কড়াইয়ের ভিতর নতুন কাপড়, কাচের চুড়ি এছাড়া মুখরোচক খাবার রাখেন। সেই কড়াই আবার পরিচিতদের মধ্যে আদানপ্রদানের রীতিও রয়েছে।
ব্রত পালনের দিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়েন মহিলারা। তারপর সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হিন্দু বিবাহিত মহিলারা উপবাস করেন। দিনভর জলও খান না তাঁরা। এদিন প্রায় সকল মহিলাই মেহেন্দিতে হাত ভরিয়ে ফেলেন। সন্ধেয় পরেন নতুন পোশাক এবং অবশ্যই ভারী গয়নাগাটি। সুখসমৃদ্ধি চাইলে এদিন লাল, হলুদ বা সোনালি রংয়ের পোশাক পরুন। পুরোহিত ব্রতকথা পাঠ করেন। তা শোনেন মহিলারা। এরপর চালুনির ভিতর দিয়ে চতুর্থীর চাঁদ দেখেন ব্রত পালনকারীরা। চন্দ্রদেবতার কাছে স্বামীর শুভকামনা করেন। তারপর ঠিক চালুনির ভিতর দিয়ে স্বামীর মুখ দেখেন তাঁরা। স্বামীর হাত থেকে জল এবং খাবার খেয়ে উপবাস ভাঙেন মহিলারা।