ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পৃথিবী কেমন দেখতে? বিশ্বরূপ নিয়ে শিল্পীর কল্পনা, বৈজ্ঞানিকের পর্যবেক্ষণে যেমনই চিত্র ফুটে উঠুক না কেন, আমাদের কৌতুহল নিরসন যেন কিছুতেই হয় না৷ তাই বারবার পৃথিবীর বাইরে যান পাঠানোর পর আমরা অধীর আগ্রহে মুখিয়ে থাকি, কখন সে এই ধরণীর প্রকৃত চিত্র তুলে ধরবে৷ চন্দ্রযান ২-এর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হল না৷ চাঁদের মেরুপ্রদেশ সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের আগে সে ভাল করে পৃথিবীকে দেখছে, তার ছবি তুলেছে৷ চন্দ্রযান ২’র তোলা সেই ছবি টুইট করে সকলকে দেখাল ইসরো৷
[আরও পড়ুন: অনাবৃষ্টির অভিশাপ কাটাতে ‘পন্ড ব্যাংক’, পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের অভিনব উদ্যোগ]
অভিযান শুরু হয়েছিল ২২ জুলাই৷ প্রথম অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর এইদিনই ১২০ কোটি ভারতবাসীর অপেক্ষা সফল করে সোজা ভূপৃষ্ঠ ছেড়ে চন্দ্রমুখে পাড়ি দিয়েছিল৷ এই মুহূর্তে ইসরোর পাঠানো সেই যান রয়েছে পৃথিবীর চতুর্থ কক্ষপথে৷ আর সেখান থেকেই দু’চোখ ভরে, থুড়ি, ক্যামেরার লেন্সের মাধ্যমে দেখেছে পৃথিবীর রূপ৷ বরাবরই আমরা শুনে এসেছি, পৃথিবী নীলাভ, বৃত্তাকার নয়, উপবৃত্তাকার৷ চন্দ্রযান ২-এর বিক্রম ল্যান্ডার থেকে তোলা ছবিতেও দেখা গেল নীল পৃথিবীর ছবি৷
#ISRO
— ISRO (@isro) August 4, 2019
Earth as viewed by #Chandrayaan2 LI4 Camera on August 3, 2019 17:34 UT pic.twitter.com/1XKiFCsOsR
শনিবার, ৩ আগস্টই পৃথিবীর চতুর্থ কক্ষপথে পৌঁছেছে চন্দ্রযান ২৷ তারপরই সে ছবি তুলেছে৷ ওইদিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ চারটি ছবি তোলা হয়৷ আর রবিবার তা প্রকাশ করল ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা৷ ইসরো সূত্রে খবর, নীলাভ সবুজ গোলাকার পৃথিবীর যেটুকু অংশ দেখা যাচ্ছে, তার ডানদিকটা আটলান্টিক মহাসাগর, বাঁ দিকে প্রশান্ত মহাসাগর৷ দুই সমুদ্রের মাঝবরাবর উত্তর আমেরিকার জঙ্গলঘেরা অংশ৷ তাই তার রংটা সবুজঘেঁষা৷
[আরও পড়ুন: চাঁদের বয়স বেড়ে গেল আরও দশ কোটি বছর, গবেষণায় নয়া তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে]
আগামী ৬ তারিখ পৃথিবীর পঞ্চম কক্ষপথে পৌঁছবে ভারতের পাঠানো মহাকাশযানটি৷ এরপরই সোজা লাফ দেবে চাঁদের কক্ষপথে৷ সেই কক্ষপথ ঘুরে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামবে চন্দ্রযান ২৷ সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে তার৷ বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের মাটিতে সৃষ্টির আদি সময়ের ফসিল অবিকৃত অবস্থায় থাকতে পারে। চাঁদের যেসব জায়গায় সূর্যবিমুখ, শুধু সেইখানেই থাকার সম্ভাবনা। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যেহেতু বেশ কিছু এলাকায় সূর্যরশ্মি সরাসরি এসে পড়ে না, তাই সূর্যের বিকিরণগত পরিবর্তনও সেখানে কম হওয়ার সম্ভাবনা। আর তাতেই ফসিল অবিকৃত থাকবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। আর চন্দ্রযান ২-এর অভিযাত্রী যান ‘প্রজ্ঞান’ আধুনিক প্রযুক্তি মারফত খুঁজে বার করবে সেই তথ্যই।
#ISRO
Earth as viewed by #Chandrayaan2 LI4 Camera on August 3, 2019 17:37 UT pic.twitter.com/8N7c8CROjy— ISRO (@isro) August 4, 2019